আধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনের সঙ্গে আজ ওতপ্রোত ভাবে জড়িত মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। আধুনিক জীবনে কর্মক্ষেত্র থেকে দৈনন্দিন জীবন, সাংসারিক জীবন থেকে সামাজিক জীবন, নানা বয়সের মানুষের মধ্যেই বাড়ছে মানসিক উদ্বেগ। গোটা বিশ্বেই উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে মানসিক চাপের সমস্যা।
কতটা মানসিক উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন আপনি? চাপা মানসিক উদ্বেগ কাজ করছে মনের মধ্যে? ভারতীয় বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত ছোট্ট যন্ত্র চিকিৎসকদের সাহায্য করবে রোগী কতটা মানসিক উদ্বেগে রয়েছেন তা চিহ্নিত করতে।
স্ট্রেচেবল মেটিরিয়ালের ওপর রুপোর নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে হাতে পরা যায় এমন অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে। বেঙ্গালুরুর জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ নামক কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ স্বশাসিত সংস্থার বিজ্ঞানীরা এই অভিনব যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন।
এ এমনই এক যন্ত্র যা শরীরে পরে থাকলে জানিয়ে দেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানসিক উদ্বেগে ভুগছেন কি না। মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা নোসিসেপ্টর নামক বিশেষ সেন্সর রয়েছে যা আমাদের যন্ত্রণা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। একই রকম ভাবে নিউরোমর্ফিক যন্ত্র দেহের নিউরনের কাজ নকল করে সাহায্য করে বুঝতে যন্ত্রণা কী প্রভাব ফেলবে শরীরে।
জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চের বিজ্ঞানীরা ফ্লেক্সিবল স্ট্রেচেবল মেটিরিয়ালের ওপর ছোট্ট রুপোর তার বসিয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন। এই যন্ত্র মানসিক উদ্বেগ বুঝতে পারে। মেটিরিয়াল বেশি লম্বা করলে রুপোর নেটওয়ার্কে ছোট গ্যাপ তৈরি হয়। বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যাহত হয়। বৈদ্যুতিক পালস রুপোর নেটওয়ার্ককে গ্যাপ পূরণ করে ফেলতে নির্দেশ পাঠায়। পুনরায় নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন হয়। প্রতি বার মেটিরিয়াল বাড়িয়ে লম্বা করার পর পুনরায় একই পদ্ধতিতে নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপন হয়। আমাদের শরীর যে ভাবে যন্ত্রণা সহ্য করে, মস্তিষ্ক যে ভাবে স্মৃতি মনে রাখে সে ভাবেই অভিনব যন্ত্র কাজ করবে। ভবিষ্যতে চিকিৎসকরা এই যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে রোগীর মানসিক সমস্যা সম্বন্ধে জানতে পারবেন ও সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করতে পারবেন। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমেষ্ট্রির (Royal Society of Chemistry) জার্নাল মেটেরিয়ালস হোরাইজনস-এ (Journal Materials Horizons)।