বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিতে চলেছে কলকাতার আইপিজিএমইআর (SSKM)। পূর্ব ভারতে বিরল রোগের চিকিৎসার কেন্দ্র (Centre of Excellence – CoE) হিসেবে মনোনীত এই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এবার এমপিএস (Mucopolysaccharidoses) রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য স্থাপন করতে চলেছে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (BMT) ইউনিট।
বিশ্ব এমপিএস দিবসে বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করেন নবজাতক বিভাগের প্রধান তথা সেন্টারের নোডাল আধিকারিক সুচন্দ্রা মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, “এমপিএস-এর ১ ও ২ ক্যাটেগরিতে আক্রান্ত শিশুদের জন্য, বিশেষ করে যাঁদের বয়স দু’বছরের নিচে, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি। আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি।”
বর্তমানে শুধু দিল্লির এইমস এবং চণ্ডীগড়ের পিজিআই-তে এমপিএস রোগের জন্য BMT ইউনিট রয়েছে। আইপিজিএমইআর হবে দেশের তৃতীয় প্রতিষ্ঠান, যেখানে এই বিশেষায়িত চিকিৎসা শুরু হতে চলেছে।
এই মুহূর্তে IPGMER CoE-তে এমপিএস-এ আক্রান্ত ২৫ জন শিশু চিকিৎসাধীন, যাঁদের মধ্যে কয়েকজন প্রতিবেশী রাজ্য থেকেও এসেছেন। কিন্তু জাতীয় বিরল রোগ নীতিমালার আওতায় রোগীপ্রতি যে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এককালীন অনুদান মেলে, তা অনেক ক্ষেত্রেই দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৪ জন শিশুর জন্য বরাদ্দ তহবিল ফুরিয়ে গিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁদের জন্য কেবলমাত্র সহায়ক চিকিৎসা চালু রয়েছে।
এমপিএস একটি বিরল, বংশানুক্রমিক বিপাকীয় রোগ। বর্তমানে রোগের গতি ধীর করতে এনজাইম রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (ERT) এবং স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টের মতো চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। গড়ে প্রতি মাসে দুইবার শিশুকে ERT দিতে হয়, যার খরচ সাধারণ পরিবারের নাগালের বাইরে।
মুখোপাধ্যায় জানান, “এটি একটি বংশানুক্রমিক রোগ, তাই আগে থেকেই রোগ নির্ণয় হলে চিকিৎসার ফল ভাল হয়। সে কারণেই আমরা শিশু চিকিৎসকদের জন্য নিয়মিত সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। পাশাপাশি আইপিজিএমইআরে এবার শুরু হচ্ছে প্রি-নাটাল স্ক্রিনিংও।”
রাজ্যের মধ্যে বিরল রোগের চিকিৎসায় এই উদ্যোগ যে বহু পরিবারের কাছে নতুন আশার দিশা দেখাবে, তা বলাই বাহুল্য।
পড়ুন: হার্ট ভালো রাখতে কোন কোন দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলবেন