কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে আম বাঙালি আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট কিলিমাঞ্জেরোর সঙ্গে পরিচিত। বাঙালির কাছে অবশ্য মাউন্ট কিলিমাঞ্জেরো পরিচিত চাঁদের পাহাড় হিসাবে। না, অ্যাডভেঞ্চার করতে বিপদশঙ্কুল মাউন্ট কিলিমাঞ্জেরো জয় করতে বলছি না। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শরীরে ফোলা ভাব দূর করতে হাত বাড়ান কিলিমাঞ্জেরো ডায়েটের দিকে।
অজানা অচেনা এই ডায়েট কন্ট্রোল পদ্ধতি আজকাল স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে ভীষণ ভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উদ্ভিদজাত খাবার বেশি থাকে কিলিমাঞ্জারো ডায়েটে। মেডিটেরেনিয়ান ডায়েটে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফল, আনাজপাতি, বিনস, শস্য, বাদাম, হোল গ্রেন, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ, চিজ ও দই বা ইয়োগার্ট। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানীরা দেখেন তাঞ্জানিয়ার মানুষ অত্যন্ত কর্মঠ, স্বাস্থ্যকর খাবার খান তাঁরা। পশ্চিমি দেশের মতো তাঞ্জানিয়ার মানুষ ভাজাভুজি প্রসেস করা খাবার খান না। প্রাকৃতিক নিরামিষ খাবার খান। তাঞ্জানিয়ায় রয়েছে মাউন্ট কিলিমাঞ্জেরো। তাই নয়া ডায়েটের নাম রাখা হয়েছে কিলিমাঞ্জারো ডায়েট। গবেষকরা দেখেন, যাঁরা নিয়মিত কিলিমাঞ্জারো ডায়েট অনুসরণ করে তাঁদের শরীরে ফোলা ভাব কমেছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে।
কিলিমাঞ্জারো ডায়েটে থাকে কলা, বিনস, ঢ্যাঁড়শ, মিলেট। এই ডায়েট অনুসরণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আয়ু বাড়ে।
নেদারল্যান্ডসের গবেষকরা তাঞ্জানিয়ার ৭৭ জন সুস্থ সবল যুবকের ওপর গবেষণা চালান। প্রত্যেকের গড় বয়স ছিল ২৫ বছর। ২৩ জনকে বলা হয় ২ সপ্তাহ প্রসেস করা খাবার খেতে। তাঁরা খান প্রসেস করা সসেজ, ভাজাভুজি খাবার ও ময়দার তৈরি রুটি। ২২ জন যাঁরা পশ্চিমী খাবার খান তাঁদের কিলিমাঞ্জারো ডায়েট অনুসরণ করতে বলা হয়। ২২ জনকে এক সপ্তাহ তাঞ্জানিয়ার মানুষ কলা দিয়ে তৈরি যে পানীয় খায় তা খেতে বলা হয়। ৫ জন নিজেদের স্বাভাবিক ডায়েট অনুসরণ করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা কিলিমাঞ্জারো ডায়েট ছেড়ে পশ্চিমী খাবার খান তাঁদের রক্তে ফোলা ভাবের জন্য দায়ী প্রোটিনের মাত্রা বেড়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমেছে। আবার উল্টোটা হয়েছে যাঁরা নিয়মিত কিলিমাঞ্জারো ডায়েট অনুসরণ করেছেন। তাঁদের শরীরে ফোলা ভাব কমেছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে।