প্লাস্টিকের দূষণে ত্রস্ত গোটা বিশ্ব। এর আগে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিকের খোঁজ মিলেছিল। সাম্প্রতিক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, মানব মস্তিষ্কের টিস্যুর মধ্যে জমা হয়েছে গোটা প্লাস্টিকের চামচের সমপরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক। ব্রেন মেডিসিন নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগীদের মস্তিষ্কের টিস্যুতে জমা হয়েছে ৩-৫ গুণ বেশি অর্থাৎ একটা চামচ সমপরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক (এমএনপি)। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, লিভার বা কিডনির তুলনায় ৭-৩০ গুণ বেশি পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক (এমএনপি) জমা হয়েছে মস্তিষ্কের টিস্যুতে।
প্রধান গবেষক ওট্টাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইক্রিয়াটিক ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক নিকোলা ফাবিয়ানো জানান, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত, মাত্র ৮ বছরের মধ্যে বেনজির ভাবে মস্তিষ্কে জমা হয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক (এমএনপি)। পরিবেশে কী পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক জমা হচ্ছে তারই প্রতিচ্ছবি ধরা পড়েছে মস্তিষ্কে জমা হওয়া মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়ে গবেষণালব্ধ তথ্যে। ২০০ ন্যানোমিটারের কম আয়তনের পলি-ইথিলিন মস্তিষ্কের সেরিব্রোভাস্কুলার দেওয়াল ও ইমিউন সেলে। এর ফলে নানান রকম স্নায়ুঘটিত অসুখের আশঙ্কা বাড়ছে।
টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ব্র্যান্ডন লু জানান, প্লাস্টিকের বোতলে থাকা জল খাওয়া বন্ধ করলেই মানব মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক জমা হওয়া অনেকটা কমানো যেতে পারে। এছাড়াও চা খাওয়ার সময় গরম জলে যে প্লাস্টিকের টি ব্যাগ দেওয়া হয় তার থেকেও মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে মেশে। এছাড়াও মাইক্রোওয়েভে প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার গরম করা হয়। তার থেকেও প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক শরীরে মেশে।

প্লাস্টিকের বোতলে জল খেলে কী বিপদ হতে পারে
১) প্লাস্টিকে থাকে ক্ষতিকর রাসায়নিক। এছাড়াও প্লাস্টিকের বোতলে থাকে ফ্লুয়োরাইড, আর্সেনিক, অ্যালুমিনিয়ামের মতো বিষাক্ত পদার্থ যা ধীরে ধীরে শরীরে মিশে গিয়ে প্রাণঘাতী অসুখ ডেকে আনতে পারে।
২) গরমে প্লাস্টিক গলে যায়। আমরা অনেক সময় রোদের মধ্যে প্লাস্টিকের বোতলে জল ভরে রাখি। সরাসরি রোদে রাখায় প্লাস্টিক থেকে ডায়োক্সিন নামক ক্ষতিকর টক্সিন তৈরি হয় যার থেকে ব্রেস্ট ক্যানসার হতে পারে।
৩) প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খেলে ক্ষতিকর পদার্থর প্রভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
৪) প্লাস্টিকের বোতল থেকে বিসফেনল এ নামক রাসায়নিক উপাদান মেলে যা ডায়াবেটিস, স্থুলতা, সন্তান ধারণের সমস্যা ডেকে আনে।