ভারতের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের প্রায় ৫০ শতাংশ শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ নয় বলে জানিয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত ল্যানসেট গ্লোবাল হেল্থ জার্নালের একটি রিপোর্ট। ২০২২ সাল পর্যন্ত চালানো এই সমীক্ষায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পাশাপাশি অংশ নিয়েছিলেন একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষকরাও।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের মহিলারা কায়িক শ্রমের নিরিখে পুরুষদের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন। দেশে ৫৭ শতাংশ মহিলা প্রয়োজন মতো শারীরিক পরিশ্রম করেন না, যা পুরুষদের (৪২ শতাংশ) তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিশ্বের ৩১.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্করাও প্রয়োজন অনুযায়ী কায়িক শ্রম করেন না। চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ থাকতে সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি বা ৭৫ মিনিট কঠোর পরিশ্রম করা জরুরি।
২০০০ সালে ভারতের ২২ শতাংশ নাগরিক প্রয়োজনের তুলনায় কম শারীরিক পরিশ্রম করতেন। ২০১০ সালে এই প্রবণতা ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালে ৬০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয় এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত হবেন।
ল্যানসেটের সমীক্ষা ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৯৭টি দেশে চালানো হয়। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, কায়িক পরিশ্রম না করার ফলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করেছে, অলস জীবনযাপনের কারণেই এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কায়িক পরিশ্রম না করার ফলে বিভিন্ন রোগের দাপট বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো গুরুতর অসুখগুলির সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় শারীরিক পরিশ্রমকে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের প্রাপ্তবয়স্কদের ৬০ শতাংশ শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকবেন। এই প্রবণতা রোধ করতে এখন থেকেই সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।