ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে রেহাই নেই শিশুদেরও। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীদের মতোই যারা সেকেন্ড হ্যান্ড প্যাসিভ স্মোকার অর্থাৎ ধূমপানের সময় ধূমপায়ীদের পাশে থাকছে তাদেরও প্রভূত স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে সেকেন্ড হ্যান্ড প্যাসিভ স্মোকিংয়ের কারণে শিশুদের জিনগত পরিবর্তন হচ্ছে। Environment International জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্র।
বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেল্থের গবেষক মার্টা কোসিন থমাস গবেষণা চালান। তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে কোনো শিশু যদি একটানা প্যাসিভ স্মোকিংয়ের শিকার হয় শৈশবে তাহলে তার শরীরে মলিকিউলার লেভেলে প্রভাব পড়ে। প্রাপ্তবয়সে অসুখ বিসুখ প্রতিরোধ করার জিনের ক্ষমতায় বদল ঘটে। যে কোনো ব্যক্তির ডিএনএতে থাকা জিন গোটা শরীরের জন্য ইনস্ট্রাকশন ম্যানুয়েল হিসাবে কাজ করে। কিন্তু ধূমপান জিনের এক্সপ্রেশনে বদল ঘটাতে পারে। জিন এক্সপ্রেশন হল জিনে থাকা তথ্য অনুযায়ী জিন কোন পদ্ধতিতে আচরণ করবে। ডিএনএ মিথাইলেশন পদ্ধতির মাধ্যমে জিন সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় থাকতে পারে।
স্পেন, ফ্রান্স-সহ ইউরোপের ৮টি দেশের ৭-১০ বছর বয়সি ২৭০০ শিশুর ওপর গবেষণা চালানো হয়। গবেষকরা দেখেন, প্যাসিভ স্মোকিংয়ের কারণে জেনোমের ১১টি জায়গায় ডিএনএ মিথাইলেশন পদ্ধতি বেড়ে গেছে। মায়ের গর্ভে থাকার সময় অথবা ধূমপায়ীদের সঙ্গে থাকার কারণে প্যাসিভ স্মোকিংয়ের কারণে এটা হয়েছে। এর ফলে ক্যানসার, অ্যাজমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
অন্যদিকে, গোটা বিশ্বে দ্রুত হারে বাড়ছে মারণ রোগ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। এনআইএইচের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ধূমপানের কারণে বাড়ছে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। পাশাপাশি, দ্য ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন জার্নালের গবেষণায় দেখা গেছে, প্রবল বায়ুদূষণের কারণে যাঁরা ধূমপান করেন না এমন মানুষের মধ্যেও ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। গোটা বিশ্বে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩-৭০% রোগীই কিন্তু ধূমপান করেন না।