ভয়ঙ্কর সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে ভারতের শিশুরা। করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ি থেকেই চলত অনলাইনে পড়াশোনা। এখন প্রয়োজনীয় অভ্যাস বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ভারতের শিশুরা দীর্ঘ সময় ধরে বুঁদ থাকছে স্মার্টফোন, টিভি আর ল্যাপটপের স্ক্রিনে। এই বদভ্যাসই ডেকে আনছে অনেক বিপদ। মনোবিজ্ঞানী এরিক সিগম্যান International Child Neurology Association নামক জার্নালে প্রকাশিত হয় গবেষণাপত্র। গবেষণায় বলা হয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে একটানা ডিজিটাল স্ক্রিনে অর্থাৎ টিভি, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের স্ক্রিনে বুঁদ হয়ে থাকলে নানান রকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। বিশেষ করে কায়িক পরিশ্রম না করে দীর্ঘ সময় বৈদ্যুতিক গ্যাজেটে বুঁদ হওয়ার কারণে স্থুলতা মহামারীর রূপ নিচ্ছে।
এছাড়াও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে হৃদরোগের সমস্যা, টাইপ টু ডায়াবেটিসের মতো অসুখ। এছাড়াও শিশুদের মস্তিষ্কের নিউরাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাহত হয়। ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে বদল ঘটে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের জেরে ৫ বছরের নীচে শিশুদের মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। ২ বছরের কমবয়সি শিশুদের কথা বলা ও ভাষা বলতে পারার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। অনেক শিশুদের কথা বলার স্টাইল বদলে যায়। নানান রকম নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার দেখা যায়। এছাড়াও বিএমসি পাবলিক হেলথ নামক জার্নালে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় ধরে একটানা ডিজিটাল স্ক্রিনে বুঁদ থাকলে শিশুদের মধ্যে চোখের নানান রকম অসুখ হয়। এছাড়াও ঘুম কম হওয়া, পিঠের ব্যথা, ওজন কমাবাড়া, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, মাথার যন্ত্রণা, উদ্বেগ, অসৎ মানসিকতা, একাকীত্বের সমস্যা দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সুপারিশ ২-৫ বছরের মধ্যে শিশুদের ক্ষেত্রে দিনে এক ঘণ্টার কম সময় টিভি বা ফোন দেখা যাবে। তাও বয়সে বড়ো কারোর সঙ্গে বসে।
দিনের কোন সময় ওটস খেলে মিলবে উপকার, কী বলছে গবেষণা
এছাড়াও দীর্ঘ সময় ধরে একটানা ফোন, টিভি বা ল্যাপটপ দেখলে ১৫-২৫ বছর বয়সিদের মধ্যে নানান রকম মানসিক ও আচরণগত সমস্যা দেখা যায়। অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মানসিক স্বাস্থ্যর ওপর। শারীরিক কসরত কমে যায়। সামনাসামনি কথাবার্তা কমে যায়। স্বাভাবিক ঘুম কম হয়। ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ সাইকিয়াট্রি নামক জার্নালে প্রকাশিত আরেকটা গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারতের ২২% কলেজ পড়ুয়া বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার নামক মানসিক অসুখে আক্রান্ত। সাইবার বুলিং বা নির্যাতন ও একটানা ডিজিটাল দুনিয়ায় বেশি সময় ধরে কাটানোর জেরে নানান রকম মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।