চূড়ান্ত কর্মব্যস্ত হয়ে দিন কাটে আমাদের প্রত্যেকেরই। জীবনের ঘোড়দৌড়ে সামাল দিতে গিয়ে বিশ্রামের সময় গেছে কমে। বিশ্রাম এখন প্রয়োজন নয় বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় অনেকেই বিশ্রামের সময়ও রিল্যাক্স থাকতে পারেন না। অদ্ভুত এক মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় ভুগতে থাকেন। Stresslaxing শব্দটি সে কারণে যোগ হয়েছে ডিকশনারিতে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, রিল্যাক্স বা বিশ্রামের সময়ও মানসিক শান্তি বা সুস্থিতি থাকার বদলে মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা হতে পারে। এর নানান রকম কারণ থাকতে পারে।
যেমন—১) সামাজিক চাপ আমাদের মনের ওপর চেপে বসে। সবাইকে কাজে সেরাটা দিতেই হবে। শীর্ষ স্থানে না পৌঁছোতে পারলেই চারপাশের মানুষ টিটকিরি দিতে শুরু করে। বিশ্রামের সময় কিছু না কিছু কাজ না করলেও অনেকের মনে গিল্ট ফিলিং হয় বা নিজেকে অপরাধী লাগে।
২) অন্যরা অনেক কিছু কাজ করছে বা সামাজিক ভাবে মেলামেশা করছে আমি কিছু করতে পাচ্ছি না, এই মনোভাব থেকেও অনেকে মানসিক গ্লানিতে ভুগতে থাকে।
৩) আমাদের ব্যক্তিগত চাহিদা বাস্তববাদী হয় না। তার জেরে মনের ওপর অত্যাধিক চাপ অনুভব হয়।
৪) অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা গ্রাস করে মনকে। বিশ্রামের সময়ও সমস্যার সমাধানের কথা ভেবে চলি।
৫) সামাজিক, কাজ ও পারিবারিক দায়দায়িত্ব থাকলে বিশ্রাম নিলে মানসিক উদ্বেগ ও গ্লানিতে ভুগতে থাকেন অনেকে।
মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই একেবারে কোনো কিছুতেই সমস্যা হবে না, উদ্বেগ হবে না। এটা অবাস্তব, অমূলক চিন্তাভাবনা। লক্ষ্য করে দেখবেন হয়ত কিছু বিষয় নিয়ে আপনি অতিরিক্ত চিন্তা করছেন। এটা করবেন না।
নিয়মিত প্লাস্টিকের বোতল থেকে জলপান করেন, কী হতে পারে জানেন? কী বলছে গবেষণা?
কীভাবে বিশ্রামের সময় উদ্বেগ কাটিয়ে উঠবেন?
১) মনঃসংযোগের ওপর জোর দিন। ধৈর্য্য বাড়ান। বাস্তবাচিত চিন্তাভাবনা করুন। মানসিক উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা কাটাতে মনকে শান্ত রাখুন।
২) কীভাবে বিশ্রাম নেবেন তার একটা নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন। বই পড়ুন, হাঁটাচলা করুন। হালকা গান বা বাজনা শুনুন।
৩) দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় সোশাল মিডিয়া ও স্মার্টফোন ব্যবহার করুন। বাকি সময় বৈদ্যুতিক গ্যাজেট ব্যবহার করবেন না।
৪) বিশ্রামের সময় কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করবেন না। কোনো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত ভাববেন না। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা, খবর থেকে দূরে থাকুন।
৫) দিনের নির্দিষ্ট সময় প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা করে, সরাসরি সাক্ষাৎ করে কাটান।
৬) হালকা শারীরিক কসরত করলে ফিল গুড হরমোন এন্ডোর্ফিন হরমোনের নিঃসরণ হয় তাতে মন মেজাজ ভালো থাকে।
৭) হাসিখুশি থাকুন। এতে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল হরমোনের নিঃসরণ কম হয়। এন্ডোর্ফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। মন ভালো থাকে।
৮) পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়াদাওয়া করুন। ঘুম জরুরি উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে।