শীতকাতুরে বাঙালির শীতকাল প্রিয় ঋতু। কারণ এই সময়ই চলে বিভিন্ন জায়গায় বেড়ানো, বনভোজন, মেলা, দেদার হুল্লোড়। কিন্তু শীতের হাত ধরেই চলে আসে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগও। এর ওপর রয়েছে বিভিন্ন সংক্রামক রোগও। শীতে সংক্রমণে কাবু হয় আট থেকে আশি সবাই। বাচ্চাদের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকার জন্য শীতে সর্দিকাশি, ফ্লুয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই এ সময় যাতে বাচ্চারা স্বাস্থ্যকর খাবার খায় সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন।
শীতে ঠান্ডার সময় বাচ্চাদের শুধু গরম জামাকাপড় পরালেই হবে না। পেটের গোলমাল, ডিহাইড্রেশন, অ্যালার্জি-সহ বিভিন্ন অসুখে বাচ্চাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে এ সময়। তাই বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে এ সময় তাদের খাওয়াদাওয়ার দিকে নজর রাখুন।
গাজর: বাচ্চাদের এ সময় গাজর খাওয়াবেন কারণ গাজরে মেলে বিটা-ক্যারোটিন নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তের শ্বেত কণিকার পরিমাণ বাড়ায়। শ্বেত কণিকা বা হোয়াইট ব্লাড শেল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া গাজরে মেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা বাচ্চাদের পেটের গোলমাল দূর করে।
খেজুর: খেজুরে মেলে ভিটামিন ছাড়াও ক্যালসিয়াম, লোহা, ম্যাগনেশিয়ামের মতো দরকারি খনিজ পদার্থ যা শিশুদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে ঠান্ডায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় খেঁজুর মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। তাই শুধুও দিতে পারেন অথবা দুধ, মিষ্টি খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খেঁজুর খাওয়ান বাচ্চাদের।
স্যুপ: শীতকালে গরম গরম স্যুপের কোনো বিকল্প নেই। প্রয়োজনীয় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় স্যুপ পুষ্টিকর হওয়ার পাশাপাশি শরীরকে সতেজ আর হাইড্রেট রাখে। শক্তি জোগায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শীতে টমেটো, পালং শাক, ব্রকোলি, বিট, গাজর এসব দিয়ে ভেজিটেবল স্যুপ তৈরি করতে পারেন। এ সব শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন আর খনিজ পদার্থ, যা বাচ্চাদের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর।
বাদাম: বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর ফাইবার থাকায় বাদাম আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। শিশুর দৈনন্দিন পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট আর ভিটামিন রয়েছে বাদামে যা শরীরকে গরম রাখে। তাই বাচ্চাদের অবশ্যই খাওয়ান কাজু, চিনেবাদাম, পেস্তাবাদাম, আমন্ডবাদাম, আখরোট।
গুড়: শীতে প্রচুর পরিমাণে গুড় পাওয়া যায়। ঠান্ডায় শরীর গরম রাখে সর্দিকাশি, সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে গুড়। খাবারের পর এক টুকরো গুড় খেলে হজমশক্তি ভালো হয়। গুড়ে পটাশিয়াম আর সোডিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিসের মতো শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় গুড় খুব কাজে দেয়।