শরীরস্বাস্থ্য
ক্যানসারের চিকিৎসার সময় রোগীরা কী খাবেন আর কী খাবেন না?

ওয়েবডেস্ক : যে সব রোগীর ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে তাদের চিকিৎসককে না জানিয়ে কোনো রকম ভেষজ বড়ি বা ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। যদি খান বা খেতে হয়ও সে ক্ষেত্রে ক্যানসার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, তাকে বিস্তারিত জানানো উচিত। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ তা না হলে চিকিৎসার ভুল ফল হতে পারে, বা ফল ঘুরে যেতে পারে, বা ক্ষতি হতে পারে, বা চিকিৎসা সফল নাও হতে পারে।
“ক্যানসারের চিকিৎসার সময় তারা অন্য কোনো আলাদা ওষুধ খাচ্ছেন কি না, তা চিকিৎসকদের উচিত নিজে থেকেই দায়িত্ব নিয়ে রোগীদের জিজ্ঞাসা করা”, এ কথা বলছিলেন অধ্যাপক কার্দোসো।
অধ্যাপক কার্দোসো বলেন, ক্যানসার চিকিৎসার জন্য রোগীরা যদি কোনো অন্য থেরাপি বা চিকিৎসা গ্রহণ করেন, তা হলে সে বিষয়ে তাঁদের চিকিৎসককে অবশ্যই জানানো উচিত। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে তাঁদের ক্ষেত্রে যাঁদের ক্যানসার চামড়ায় ছড়িয়েছে।
তার কারণ হিসাবে তিনি বলেছেন, এমন অনেক পণ্য আছে যেগুলোর কারণে ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হরমোন থেরাপি এবং কেমোথেরাপির ওপর বাধা সৃষ্টি করতে পারে বা রক্ত জমাট বাঁধতেও দেরি করাতে পারে।
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ মিস কার্দোসো বলেন, রোজকার জীবনেও এমন বেশ কিছু ভেষজ দ্রব্য আছে যেগুলো রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে, রক্ত তঞ্জন হতে দেরি করায়। এমন কিছু খাবারের মধ্যে রয়েছে – রসুন, জিনসেং এবং হলুদ।
বিশেষজ্ঞরা তাই বলছেন, এই রোগের ক্ষেত্রে রোগীর তাই খাবারদাবার বা চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যাপারে মূল চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নেওয়া উচিত। কারণ তা না হলে চিকিৎসায় অযাচিত ভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
কমলালেবু স্বাভাবিক ভাবে খুবই ভালো একটি খাবার হলেও, ক্যানসার রিসার্চ বলছে, ক্যানসারের চিকিৎসা চলাকালীন মাল্টা এবং কমলালেবুর মতো খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ, ক্যানসারের ঔষধ শরীরের ভেতরে যে ভাবে ভেঙে কাজ করে, এই খাবারগুলি সেটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এ ছাড়াও কামরাঙা, বাঁধাকপি এবং হলুদও এই তালিকায় রেখেছে ব্রিটেনের ক্যানসার রিসার্চ সংস্থা।
ব্রিটেনের এই প্রতিষ্ঠানটির মতে, “ক্যানসারের প্রথাগত চিকিৎসার বাইরে যে কোনো ধরনের ওষুধ খাবার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিত। বিশেষ করে যদি ক্যানসার চিকিৎসার মাঝামাঝিতে অবস্থান করেন তা হলে তো অবশ্যই।”
তা হলে প্রশ্ন আসতেই পারে ক্যানসার রোগীরা খাবেন কী?
তার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। তা ছাড়া বিভিন্ন গবেষণা থেকে উঠে আসা কয়েকটি খাবারের কথা বলে যেতে পারে, যেগুলি ক্যানসার রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে।
পড়ুন – স্বাস্থ্য সাবধান: স্তন ক্যানসার, কিছু প্রশ্ন, কিছু উত্তর

১) রাঙাআলু – মিষ্টি আলু অর্থাৎ রাঙাআলু বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ একটি সবজি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যদি উচ্চমাত্রায় বিটা ক্যারোটিন শরীরে থাকে তা হলে তা কোলন ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, পেট ও ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়। আরও প্রমাণিত হয়েছে যে, মহিলারা যদি মিষ্টি আলু বা রাঙাআলুর মতো বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ খাবার তাঁদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন রাখেন তা হলে তাঁদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক কমে যায়।
২) সাওয়ারসপ – সাওয়ারসপ ফল হল ক্যানসার প্রতিরোধক। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, সাওয়ারসপ ফল কেমোথেরাপির চেয়েও দশ হাজার গুণ শক্তিশালী। তাই অতিরিক্ত না খেলে এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। উল্লেখ্য, এই ফলের গাছের নাম গ্র্যাভিওলা। তবে ফলটি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন – সাওয়ারসপ, করোসল গুয়ানাবা, গুয়ানাভানা ইত্যাদি। এই গাছের ফল, পাতা, ডাল, ছাল-বাকল এবং শিকড় ক্যানসার-সহ বহু রোগের নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।
৩) সবুজ শাকসবজি – পালং শাক, লেটুস, হেলেঞ্চা শাকের মতো বহু দেশীয় সবুজ শাকপাতা ক্যানসার-সহ বহু রোগের ক্ষেত্রে উপকারী। এগুলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। তা ছাড়াও এতে আছে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এনজাইম। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে এ কথা অনেকেই জানে। এ ছাড়াও রয়েছে গ্লুকোসাইনোলেটস, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান এবং সঙ্গে আছে নিষ্ক্রিয় কার্সিনোজেনস। এই নিষ্ক্রিয় কার্সিনোজেনস টিউমার সৃষ্টি রোধ করে, ক্যানসারের কোষ ধ্বংস করে এবং ক্যানসার স্থানান্তরণে বাধা দান করে। কাজেই প্রতি দিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক-পাতা থাকা অবশ্যই দরকার।

৪) কপি জাতীয় সবজি – ফুলকপি, ব্রকোলি, ওলকপি, শালগম, ব্রাসেলস স্প্রাউট ইত্যাদিতে আইসোথায়োসায়ানেটস নামক একটি ফাইটো কেমিক্যাল থাকে। এই ফাইটো কেমিক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধে সক্ষম। এ ছাড়াও এতে আছে ক্যানসার রোধে সাহায্যকারী উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
আরও পড়ুন – ক্যানসারের প্রাথমিক ৫টি লক্ষণ, এগুলি দীর্ঘদিন থাকলেই সচেতন হন! পর্ব ১
৫) বেরি জাতীয় ফল – ব্ল্যাক বেরি, ব্লু বেরি, স্ট্রবেরি, গোজিবেরি, রাস্পবেরি, চেরি, মালবেরি ও কামুকামু-সহ বেরি জাতীয় সকল ফলই এই রোগের ক্ষেত্রে ভালো। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই সব উপাদান ক্যানসার নিরাময়ের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
৬) কমলা রঙের ফল – লেবু, জাম্বুরা, মিষ্টিকুমড়ো, পাকা পেঁপে, গাজর ও স্কোয়াশ ইত্যাদি উজ্জ্বল বর্ণের যে কোনো ফল ও সবজিতে থাকে ক্যারোটিনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বিটা-ক্যারোটিনও। এটি অতি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ক্যানসার রোধ করে।

৭) হলুদ – হলুদে রয়েছে ‘কারকিউমিন’। এটি প্রদাহজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানবদেহের কোষের মধ্যে প্রবেশ করে ভেতর থেকে দেহকে ক্যানসার প্রতিরোধী করে তোলে। তাই কাঁচা বা গুঁড়ো হলুদ খাওয়া যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।
৮) অর্গানিক মাংস – কোনো রকম স্টেরয়েড, হরমোন ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ না করে বড়ো করা মুরগির মাংস বা তার স্যুপ ক্যানসার রোগীর ক্ষেত্রে বেশ ভালো। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুণ। রয়েছে ভিটামিন বি ১২, সেলেনিয়াম, জিংক ও ভিটামিন বি, এগুলি রক্ত পরিশোধন করে, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে।
৯) দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য – গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ক্যালসিয়াম রেকটাল ক্যানসার-সহ নানা রকমের ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়াও ব্রেস্ট ক্যানসার ও ওভারিয়ান ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। এ দিকে দুগ্ধজাত খাবার যেমন টক দই, ছানা ইত্যাদি হল প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়ামের উৎস ও প্রোবায়োটিক। অর্থাৎ এতে প্রচুর পরিমাণ ভালো ব্যাক্টেরিয়ার রয়েছে। প্রোবায়োটিক টিউমার বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। তা ছাড়া গরু ও ছাগলের দুধ, পনির ইত্যাদিতে রয়েছে সালফার প্রোটিন ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট। তাই এগুলি ক্যানসার রোগীর খাদ্য তালিকায় রাখা জরুরি। তা ছাড়া সাধারণ ভাবে দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি থাকে। এই ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণের ক্ষমতা প্রচুর পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

১০) মাছ – গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মাছে আছে ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিটিউমার ও অ্যান্টিক্যানসার উপাদান। কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও বিষাক্ততা কমাতে ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড খুবই ফলপ্রসূ।
১১) গ্রিন টি – গ্রিনটির খাদ্য গুণ প্রচুর। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ক্যানসার রোগীর মৃত্যুর প্রধান কারণ মেটাস্ট্যাসিস। অর্থাৎ ক্যানসার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়া। গ্রিনটিতে আছে পলিফেনোলিক কম্পাউন্ড, ক্যাটেচিন, গ্যালোক্যাটেচিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই সব উপাদান ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়, টিউমার বৃদ্ধি রোধ করে ও ক্যানসার মেটাস্ট্যাসিস রুখতে সাহায্য করে।
১২) মাশরুম – মাশরুম হল উচ্চ পুষ্টিসম্পন্ন দারুণ একটি খাদ্য উপাদান। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
আরও – ক্যানসারের প্রাথমিক ৫টি লক্ষণ, এগুলির একটিও থাকলে সচেতন হন/ পর্ব-২

১৩) স্বাস্থ্যকর ভোজ্য তেল – নারকেল তেল, তিসির তেল এবং এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল – এগুলি পুষ্টি জোগায়। এইগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। তা ছাড়া জলপাই তেলে আছে ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস। ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস প্রদাহ কমায়, সঙ্গে সঙ্গে ব্রেস্ট ক্যানসার ও কলোরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
১৪) বাদাম জাতীয় – চিনাবাদাম ভিটামিন-ই এর খুব ভালো উৎস। ভিটামিন-ই কোলন, ফুসফুস, যকৃত এবং অন্যান্য অনেক ক্যানসারেরই ঝুঁকি কমায়।
১৫) রঙিন সবজি – ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন রঙিন শাক, সবজিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমন – পেঁয়াজ, জুকিনি, এস্পারাগাস, আর্টিচোকস, মরিচ, গাজর এবং বীট ইত্যাদি।
তবে সব ক্ষেত্রে সবটা সব সময় প্রযোজ্য ও প্রয়োজনীয় নাও হতে পারে। তাই যে কোনো কিছুই খাবার খাওয়ার আগে বা ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসাকারীর পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে নেওয়া ভালো। কারণ এক ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে যেটি জরুরি অন্যটির ক্ষেত্রে সেটি জরুরি নাও হতে পারে, উলটে খারাপও হতে পারে। কারণ রোগের ধরন, পারিপার্শ্বিক সমস্যা, চিকিৎসা পদ্ধতি ইত্যাদি সব কিছুর জন্যই খাদ্যা তালিকা বদল হয়। তাই সে ব্যাপারে চিকিৎসকের মতামত নিয়েই পুরো খাদ্য তালিকা বানানো ও তা মেনে চলা ভালো।
পড়ুন – শীতে শরীর গরম রাখতে খান এই ৬টি খাবার
শরীরস্বাস্থ্য
মাড়ির ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন? ব্যথা কমাতে ৫টি পরামর্শ

খবরঅনলাইন ডেস্ক: মাঝেমধ্যেই দাঁতের মাড়ির ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন, তার ওপর শীতকাল বলে শিরশিরানি ভাবও বেশ সমস্যায় ফেলছে। এই সমস্যা অনেক কারণেই হতে পারে। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায়। এই উপায়গুলি অবলম্বন করলে স্বস্তি পেতে পারেন।
১। নুন জলে স্বস্তি
দাঁতের ক্ষেত্রে নুনের উপকারিতা অসীম। দাঁতের সমস্যায় খুবই সহজ একটি পদ্ধতি হল নুনজলে কুলকুচি করা। এক গ্লাস হালকা গরম জলে ১/৩ চা চামচ নুন ফেলে দিনের মধ্যে ৩ থেকে ৪ বার কুলকুচি করলে উপকার হবেই। এতে মুখে মধ্যে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা হ্রাস হয়। ফলে ব্যথা কমে। ফোলা ভাব হলে তা-ও কমে।
২। লেবুর রসে কমবে ব্যথা
লেবুতে ঔষধি গুণ প্রচুর। তারই মধ্যে একটি হল দাঁতের সমস্যায় এর উপকারিতা। এতে আছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যৌগ। এই যৌগ সংক্রমণকারী জীবাণু মেরে ফেলে। মাড়িকে স্বস্তি দেয়, মুখের পিএইচ ভারসাম্যও বজায় রাখে। এক গ্লাস গরম জলে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিনে দু’ বার করে কুলকুচি করুন ব্যথা না কমা পর্যন্ত।
৩। গ্রিন টির প্রভাব
কমবেশি অনেকেই জানেন, গ্রিন টিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ হল প্রদাহ কমানো, ব্যাকটিরিয়া প্রতিরোধ করা। এই কাজটি মাড়ির ক্ষেত্রেও করে। ফলে গ্রিন টিতে দাঁতের ব্যথা কমানো যায়। ব্যথায় গরম গরম গ্রিনটি পান করে দেখতে পারেন।
৪। হলুদ দিয়ে ব্যথা দূর
দাঁতের ব্যথা হলে হলুদ ব্যবহার করুন। ১/৪ চা চামচ হলুদবাটা বা হলুদগুঁড়ো নিন। মাড়িতে যেখানে ব্যথা সেখানে মোটা করে প্রলেপ লাগিয়ে ৫ মিনিট রাখুন। এর পর গরম জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ব্যথা না কমা পর্যন্ত প্রতি দিন হলুদ পেস্ট ব্যবহার করুন। হলুদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ। মাড়ির ব্যথা, ফোলা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
৫। গরম ও ঠান্ডা সেঁক
মাড়ির ব্যথায় আর একটি সহজ ঘরোয়া ও উপকারী উপায় হল ঠান্ডা গরম সেঁক। খুবই আরামদায়ক একটি উপায়। মাড়ির ফোলা বা ব্যথা অংশে পরিষ্কার গরম কাপড় ও বরফ পুঁটলি দিয়ে সেঁক দিন। এক বার ঠান্ডা এক বার গরম এই ভাবে ৪ বার করুন। দিনে ২ বার করতে পারলে ভালো। ব্যথা না কমা পর্যন্ত করে পদ্ধতিটি করতে পারলে ভালো।
এই সমস্ত ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিন।
আরও – জেনে নিন, নাক-কান-দাঁতের সমস্যায় কী ভাবে কাজ করে জোয়ান?
শরীরস্বাস্থ্য
থাইরয়েড ধরা পড়েছে? এই খাবারগুলি সম্পর্কে সচেতন হন

খবরঅনলাইন ডেস্ক: থাইরয়েডের সমস্যা খুব সহজ কথা নয়। থাইরয়েডকে অনেকেই সাইলেন্ট কিলারও বলেন। ‘অ্যামেরিকান থাইরয়েড অ্যাসোসিয়েশনে’র মতে প্রায় ২০ লক্ষ অ্যামেরিকাবাসীই থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগেন। তাদের মধ্যে ৬০% বোঝেনই না তাঁদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে।
থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি ডায়েটও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কারণ এমন অনেক খাবার আছে যেগুলোর নিউট্রিয়েন্টস শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যকে নষ্ট করে। আবার ওষুধের কার্যকারিতাও কমিয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে থাইরয়েড ডায়েট বুঝে নিলে সমস্যা অনেকটা কমানো যায়।
১। ভাত, পাউরুটি, পাস্তা
এই তিনটি খাবারে গ্লুটেন থাকে। ‘অ্যাকাডেমি অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটেটিক্সে’র বিশেষজ্ঞ রুথ ফ্রেচম্যানের মতে, থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে এই তিন খাবার না খাওয়াই ভালো। গ্লুটেন নামক প্রোটিন ক্ষুদ্রান্ত্রে সমস্যার কারণ। এতে থাইরয়েড হরমোন রিপ্লেসমেন্ট মেডিসিনের কার্যকারিতায় বাধা দেয়। তবে ভাত পাউরুটি ছাড়া বাঙালি খাবেই বা কী। অনেকেই দু’ বেলা ভাত খান। সে ক্ষেত্রে পরিমাণ যতটা কম করা যায় ততই ভালো।
২। সোয়াবিন
থাইরয়েড থাকলে সোয়াবিন খাওয়া কমাতে হবে। কারণ এর আইসোফ্ল্যাভিন থাইরয়েডে সমস্যার কারণ হয়। এটি খেলে থাইরয়েডের সমস্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে।
৩। ব্রকোলি, ফুলকপি
এই দু’টি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। কিন্তু থাইরয়েড থাকলে তা ক্ষতিকর। এর ফাইবার, নিউট্রিয়েন্টস থাইরয়েড হরমোনের সমস্যার কারণ। তাই থাইরয়েডের সমস্যায় ব্রকোলি, শালগম, ফুলকপি, বাঁধাকপি জাতীয় যাবতীয় খাবার খাওয়া কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৪। বিন, ডাল
ফাইবারও শরীরের জন্য ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত ফাইবার থাইরয়েডের সমস্যাকে জটিল করে। তা হজমের সমস্যা তৈরি করে, থাইরয়েডের ওষুধের কার্যকারিতায় বাধা দেয়। তাই ডাল, বিন অল্প করে খান।
৫। মাখন, ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড
ফ্যাট থাইরয়েড হরমোনের ওষুধের কাজে বাধা সৃষ্টি করে। তাই ডায়েট থেকে মাখন, মেয়োনিজ, তেলেভাজা ফাস্টফুড ইত্যাদি যতটা সম্ভব বাদ দিন।
৬। কফি
কফিতে থাকে ক্যাফেইন। এটিও ওষুধের কাজে বাধা দেয়। তাই থাইরয়েডের ওষুধ খেলে কফি খাওয়া বন্ধ করতে হবে বা কমিয়ে ফেলতে হবে।
৭। মিষ্টি খাবার
মিষ্টি খাওয়াও কমাতে হবে। কারণ থাইরয়েড শরীরের মেটাবলিজমকে ধীরে করে দেয়। ফলে মোটা হওয়ার ভয় বাড়ে। মিষ্টি খেলে বাড়তি ক্যালোরি ওজন বাড়ায়। তাই মিষ্টির ব্যাপারে সংযত হতে হবে।
৮। প্রসেসড ফ্রোজেন ফুড
প্রসেস করা খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রিজারভেটিভ থাকে। প্রিজারভেটিভ মানেই সোডিয়াম। থাইরয়েডে সোডিয়াম খাওয়া উচিত নয়। বেশি সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপের কারণ। এটি থাইরয়েডের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
৯। অ্যালকোহল
অ্যালকোহল থাইরয়েড হরমোনের সামঞ্জস্যকে নষ্ট করে দিতে পারে। শরীরে স্বাভাবিক থাইরয়েড উৎপাদনকেও বাধা দেয় এটি।
১০। কোল্ডড্রিঙ্কস
সফট ড্রিঙ্কস বা কোল্ডড্রিঙ্কসগুলোতে প্রচুর চিনি থাকে তা ক্ষতিকর। তাই থাইরয়েড থাকলে কোল্ড ড্রিঙ্কস না খাওয়াই উচিত।
আরও – থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা থেকে উপশমে যে ছ’টি খাবার আপনার জরুরি
শরীরস্বাস্থ্য
কেন খাবেন মটরশুঁটি, জেনে নিন এর উপকারিতা

খবরঅনলাইন ডেস্ক : মটরশুঁটির উপকারিতা অনেক। এতে প্রচুর প্রোটিন থাকে। মটরশুঁটিকে নিউট্রিশনের পাওয়ারহাউজ বলে।
জেনে নিন মটরশুঁটির ৯টি উপকারিতা –
১। পেটের ক্যানসার রোধে
মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনল কাউমেস্ট্রল আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনে মাত্র ২ মিলিগ্রাম ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট শরীরে পৌঁছোলে তা পেটের ক্যানসার রোধ করতে পারে। এক কাপ মটরশুঁটিতে প্রায় ১০ মিলিগ্রাম কাউমেস্ট্রেল থাকে।
২। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধিতে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়। মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্যাবিনয়েড, ক্যারোটিনয়েড, ফেনলিক অ্যাসিড, পলিফেনল আছে। ফলে এটি অ্যান্টি এজিং‚ সঙ্গে প্রচুর এনার্জির জোগান দেয়।
৩। সুগার নিয়ন্ত্রণে
কত তাড়াতাড়ি রক্তের সঙ্গে চিনি মিশবে তা নিয়ন্ত্রণ করে ফাইবার ও প্রোটিন। এতে প্রচুর প্রোটিন ও ফাইবার আছে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদানও প্রচুর আছে। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৪। হৃদরোগ আটকাতে
এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। মটরশুঁটির ভিটামিন বি, ফোলেট‚ বি১, বি৩, বি৬ শরীরের হোমোসিস্টাইন লেভেল কমায়। ফলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।
৫। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে
শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল কমায় মটরশুঁটি। এর নিয়াসিন শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড ও লাইপো প্রোটিন কমাতে সাহায্য করে। ফলে খারাপ কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড কমে।
৬। হাড় মজবুত করতে
ক্যালসিয়ামকে হাড়ের সঙ্গে যুক্ত হতে সাহায্য করে ভিটামিন কে। মাত্র এক কাপ মটরশুঁটিতে ৪৪% ভিটামিন কে থাকে। তা ছাড়া ভিটামিন বি-ও আছে, এটি অস্টিওপোরোসিস হতে দেয় না।
৭। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
মটরশুঁটিতে প্রচুর ফাইবার থাকে। হজম শক্তি বাড়ায় সহজেই পেট পরিষ্কার করে।
৮। ওজন নিয়ন্ত্রণে
মটরশুঁটিতে ফ্যাট সামান্য। এক কাপ মটরশুঁটিতে ১০০ ক্যালোরিরও কম ফ্যাট আছে। সঙ্গে এতে ভরপুর প্রোটিন‚ ফাইবার, মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস আছে।
৯। বহু রোগে
মটরশুঁটি শরীরের ব্যথা বেদনা কমাতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান হৃদরোগ, ক্যানসার ইত্যাদিতে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলে। সঙ্গে অ্যালজাইমারস‚ আর্থারাইটিস‚ ব্রাংকাইটিস এবং অস্টিওপোরসিস রোধ করে। ত্বকে বলিরেখাও পড়তে দেয় না।
আরও – এই শীতে কেন খাবেন মুলো? জেনে নিন ২০টি কারণ
-
রাজ্য3 days ago
বিধান পরিষদ গঠন করে প্রবীণদের স্থান দেওয়া হবে, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বললেন মমতা
-
রাজ্য2 days ago
কেন তড়িঘড়ি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ তৃণমূলের, সরব পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য
-
রাজ্য2 days ago
লড়াই মুখোমুখি! নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী
-
রাজ্য2 days ago
অস্বস্তি বাড়াচ্ছে রাজ্যের করোনা সংক্রমণ, কলকাতাতেও বাড়ল আক্রান্তের সংখ্যা