মুক্তোঝরানো প্রাণখোলা হাসি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একজন মানুষকে সত্যিইকারের আকর্ষণীয় করে তোলে অন্যদের সামনে। প্রতি বছর মে মাসের প্রথম রবিবার বিশ্ব হাস্য দিবস পালন করা হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে বিশ্ব হাস্য দিবস পালন করা শুরু হয়েছে। এবছর ৪ মে, রবিবার পালন করা হবে বিশ্ব হাস্য দিবস। ১৯৯৮ সালে মুম্বাইয়ে প্রথম বার বিশ্ব হাস্য দিবস পালন করা হয়।
২০১০ সালে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মুখের হাসিই আয়ু বাড়ায় অনেকখানি। হাসিখুশি মানুষ অন্যদের তুলনায় বেশিদিন সুস্থসবল ভাবে বাঁচে। হাসিখুশি, ইতিবাচক ভাবে থাকাকে স্বাস্থ্যকর জীবনের অঙ্গ বলে মানা হয়। মনে করা হয়, সুখ, হাসি, জীবনের মেয়াদ অনেক বছর বাড়িয়ে তুলতে পারে।
হাসি আমাদের জীবনে কী উপকার করে, কী তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়
আমরা যখন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকি তখন তা আমাদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে। হাসি শুধু আমাদের ক্লান্তিভাব, মানসিক ভাবে ভেঙে পড়াই আটকায় না। স্ট্রেসও কমাতে সাহায্য করে।
মন মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে হাসি। মস্তিষ্কের যে অংশ আমাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে তাকে সক্রিয় করে তোলে হাসি। অর্থাৎ হাসিমুখ মন বা বলা ভালো মস্তিষ্কে সঙ্কেত পাঠায় খুশি হতে। ছোট্ট একটা হাসি মস্তিষ্কে নিউরোপেপটাইডের নিঃসারণ ঘটায় যা নিউরাল কমিউনিকেশনের উন্নতি ঘটায়।
হাসি ডোপামিন আর সেরোটনিন নামক ২টি নিউরোট্রান্সমিটারের নিঃসারণ বাড়ায় যা মুড ভালো রাখতে সাহায্য করে। হাসিকে বলা হয় প্রাকৃতিক ভাবে অবসাদরোধক। হাসি আমাদের রিল্যাক্স থাকতে সাহায্য করে।
হাসি শুধু আপনার মুডই ভালো করে দেয় না অন্যদেরও মুড ভালো রাখতে সাহায্য করে। বৈজ্ঞানিক ভাবে এটা সত্যিই যে আমাদের মস্তিষ্ক অন্যদের ফেশিয়াল এক্সপ্রেশন নজর করে বুঝতে সাহায্য করে। সেটাই নকল করতে শুরু করে। অর্থাৎ কারোকে হাসতে দেখলে অবচেতন মনে আমরা নিজেরাও হাসতে শুরু করি।
হাসি আমাদের সার্বিক ভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। হাসি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কয়েকটি নিউরোট্রান্সমিটার বেরোয় মস্তিষ্ক থেকে যা রোগবালাইয়ের সঙ্গে যুঝতে সাহায্য করে।
হাসিকে বলা হয় প্রাকৃতিক ওষুধ। হাসলে এন্ডোরফিনস আর সেরোটোনিনের নিঃসারণ হয়। মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত এসব রাসায়নিক প্রাকৃতিক পেইন কিলার। এগুলো আমাদের আপাদমস্তক ভালো থাকতে সাহায্য করে। হাসি শুধু মুডই ভালো রাখে না শারীরিক যন্ত্রণা কমিয়ে রিল্যাক্স হতে সাহায্য করে।
হাসিখুশি মানুষের দিকে আমরা স্বাভাবিক ভাবেই আকৃষ্ট হই। হাসির আবেদন চিরন্তন। হাসিখুশি থাকলে সেই ব্যক্তিকে অন্যদের চোখে ইতিবাচক ব্যক্তিত্ব লাগে।
হাসলে আমাদের মুখের পেশির সঞ্চালন হয় তাতে আরো কমবয়সি লাগে। তাই কমবয়সি লাগাতে ত্বক টানটান করতে ফেস লিফট না করে হাসুন আরো বেশি করে।
গবেষণায় দেখা গেছে হাসলে মানুষকে আত্মবিশ্বাসী লাগে। হাসি আপনার মস্তিষ্কে সঙ্কেত পাঠায় ‘লাইফ ইজ গুড’। আপনাকে ইতিবাচক থাকতে সাহায্য করে হাসি। হাসিখুশি মানুষকে অন্যের চোখে বেশি ইজিগোয়িং লাগে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, হাসি শৈল্পিক ভাবনার প্রকাশ ঘটায়।