বাঙালির বড়োদিনে মুক্তি পেতে চলেছে দেবের পরবর্তী ছবি ‘আমাজন অভিযান’। তার আগে, অভিনয় থেকে প্রযোজনা, সব কিছু নিয়ে খোলামেলা আড্ডা দিলেন রাকা রায়ের সঙ্গে।
প্রশ্ন : ২৫ ডিসেম্বর আপনার জন্মদিন। আগাম শুভেচ্ছা। এ বার বড়োদিনে দর্শকদের জন্য তো ‘আমাজন অভিযান’ আসছে। সে রকম বড়ো আর কোনো ছবির মুক্তিও নেই। ছবির সাফল্য নিয়ে কী ভাবছেন? কত বড়ো হিট হতে চলেছে?
উত্তর: দে্খো, দর্শক এখন অনেক পরিণত হয়েছে। ভালো গল্প, ভালো বিষয় না হলে দর্শকের মন পাওয়া সহজ নয়। কনটেন্ট ম্যাটার করে। তবে আমি খুবই আশাবাদী ছবিটা দর্শকদের ভালো লাগবে। অনেক পরিশ্রম করে তৈরি করেছি ছবিটা। ছবির গল্প খুব ভালো না হলে আমি ছবিটা করতাম না। এত বড় মাপের ল্যান্ডস্কেপ বাংলা ছবিতে আগে হয়নি। দর্শকদের ভালো লাগবে। আমি তোমাদের পাঠকদের বলব একবার এই ছবিটা বড়ো পর্দায় দেখুন, দারুণ লাগবে। সবাই এক সঙ্গে মিলে ছবিটা দেখুন। অনেক পরিশ্রম আছে ছবিটায়।
প্রশ্ন: আচ্ছা আগের ছবিটার গল্প (চাঁদের পাহাড়) অনেকেরই পড়া ছিল । এ বারের গল্প তো পরিচালকের লেখা। এই গল্প কি আগের গল্পের পর থেকে শুরু হয়েছে? গল্পটা না জানার জন্য কিছু সুবিধা হবে বলে মনে হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, আগের গল্প যেখানে সেখানে শেষ হয়েছে তার পর থেকেই এই গল্পটা শুরু। এই গল্পটা কমলদা র লেখা (পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়)। এই গল্পটা দর্শকদের জানা নেই, তাই গল্পের আভাস দেওয়ার জন্য আমরা একটা বই প্রকাশ করি। তবে বইটা না পড়লেও কোনো অসুবিধা নেই। কমলদা দারুণ গল্প লেখেন। দারুণ গল্প বলিয়ে। তাই আমি মনে করি দর্শকদের ছবিটা পছন্দ হবে। দর্শকরা জানে আমি ছবি বাছার ক্ষেত্রে নানা ধরনের বিষয়ে জোর দিয়েছি। আমার চ্যাম্প, ককপিট একেবারে অন্য রকম বিষয়ের ছবি। এটাও তাই অন্য রকম করার প্রয়াস। আমার তো মনে হয়েছে ওই ছবিগুলো দর্শক ভালোভাবেই নিয়েছে। এটাও পছন্দ হবে আশা করি।
প্রশ্ন: এই প্রসঙ্গে একটা প্রশ্ন আসে, ইদানীং অভিনেতা দেবের থেকেও প্রযোজক দেব বেশি প্রশংসা পাচ্ছে। কী ভাবে দেখছেন?
উত্তর: ধন্যবাদ দর্শকদের। আমি প্রযোজক হিসেবে সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা করছি।আমার চ্যাম্প, ককপিট – একদম দু’টি আলাদা কাহিনি। আবার আমার কবির আসছে, সেখানেও নতুন গল্প, ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট আছে। নতুন ধরনের কাজ করতে চেষ্টা করছি। প্রযোজক হওয়ায় আমি আমার পছন্দের বিষয় নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারছি। এটা তো বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রির জন্য ভালো। আর আমার নতুন প্রয়াসে যে ভাবে সকলকে পাশে পাচ্ছি, তার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।
প্রশ্ন: দর্শকরা আরও একটা কথা বলছে যে দেবের থেকে অন্য প্রযোজকরা শিখছে, ছবির প্রচার কী ভাবে করতে হয়।
উত্তর: দেখো আমি সব সময়ই নতুন কিছু করার চেষ্টা করি। ছবির গল্প আলাদা অথচ প্রচার একই রকম হয়। তাই গল্প অনুযায়ী আমি প্রচার সাজাতে চাই। আর যে কোনো কাজে কাউকে না কাউকে তো ফলো করতেই হয়। আমার কোনো স্ট্র্যাটেজি যদি অন্য কেউ ফলো করে, তাতে খারাপ কী বল। ককপিটের গল্প অন্য ধরনের প্রচার চাইছিল। আমি করেছি। দেখো আদতে তো ইন্ডাস্ট্রির লাভ। খারাপ কি (হাসি)।
প্রশ্ন: প্রযোজক হলে তো অন্য প্রযোজকের সঙ্গে একটা প্রতিযোগিতা থাকেই। আপনি প্রযোজক ও অভিনেতা এই দু’টি ভূমিকা সামলাচ্ছেন কী করে?
উত্তর: আমি খুবই পেশাদার। নতুন প্রযোজক এলে তো বাংলা ছবিরই মঙ্গল। নতুন ছবি দর্শক পাবে। আর অভিনেতা হলেও আমি চাইব ছবি সফল হোক। তাই সমস্যা কিছু হবে না। এই তো এর পরের ছবি ‘কবির’ আসবে যখন, নিশ্চয়ই সবাই আমার পাশে থাকবে। যেমন আগে ছিল। আর ভালো ছবি করার সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা তো ভালো।
প্রশ্ন: প্রযোজক হিসেবে বক্স অফিস সাফল্য নিয়ে কি আপনি সন্তুষ্ট?
উত্তর: আমার দু’টো ছবি এখনও অবধি মুক্তি পেয়েছে। চ্যাম্প ও ককপিট তো ভালোই করেছে। ককপিট তো ছ’টি ছবির সঙ্গে লড়াই করেছে। কাদের ছবি ছিল ভাবুন। কত বড় বড় পরিচালকদের ছবির সঙ্গে লড়াই করে ভালো ফল করেছে। আমাকে দর্শক নতুন ধরনের কাজ করার সাহস দিয়েছে। আমি খুশি। ‘আমাজন অভিযান’-এর পর আমার ‘কবির’ আসবে, আমি আশাবাদী।
প্রশ্ন: আপনি বলেন সমালোচকদের সমালোচনা পজিটিভ ভাবে নেন। এমন কোনো সমালোচনা হয়েছে, যেটা শুনে নিজেকে শুধরেছেন?
উত্তর: এই ভাবে বলা মুশকিল। (একটু ভেবে) আমাকে অনেকেই বলতেন আমি সিরিয়াস অভিনেতা নই। তাই চেষ্টা করেছি অন্য ধরনের অভিনয় করতে। লোকে বলেছে, আমার ডায়ালগ ডেলিভারি ভালো না, সেটা ঠিক করার চেষ্টা করেছি। প্রশংসিত হয়েছি। আগামী ছবিতেও দর্শক আমার সেই চেষ্টাই দেখবে। এখন তো সমালোচনা কম হচ্ছে (হাসি)। তাতেই আমি ভয় পাচ্ছি। তবে দর্শকদের বলতে পারি, দর্শকদের কাছে অনেক নতুন কাজ নিয়ে আসব।
শেষ প্রশ্ন : এখন তো বিয়ের মরসুম চলছে। বিয়ের পিঁড়িতে কবে বসছেন?
উত্তর: এখনও বিয়ের পিড়ির অর্ডার দিইনি। দিলেই জানাব। তার আগে ‘আমাজন অভিযান’ দেখে ফেলুন।