কথাশিল্প
শতবর্ষে স্মরণ করি ‘পৃথিবী আমারে চায়’-এর গায়ককে
পাপিয়া মিত্র : বাবা সাইকেলে বসিয়ে স্কুলে দিয়ে এলে কী হবে, কিছুক্ষণ পরেই সেখান থেকে পালানো। তবে সেটাই শেষ নয়, বই-খাতাও কোথাও না কোখাও পড়ে থাকত। এমন এক দিন বিকেলে নাম লেখা বই-খাতা নর্দমা দিয়ে ভেসে যেতে দেখে মা বুঝতে পারেন। এই স্কুলছুট শিশুবালকই সত্য চৌধুরী। পরে যিনি একাধারে গায়ক-সুরকার ও অভিনেতা। Loading videos… ‘পৃথিবী […]
পাপিয়া মিত্র :
বাবা সাইকেলে বসিয়ে স্কুলে দিয়ে এলে কী হবে, কিছুক্ষণ পরেই সেখান থেকে পালানো। তবে সেটাই শেষ নয়, বই-খাতাও কোথাও না কোখাও পড়ে থাকত। এমন এক দিন বিকেলে নাম লেখা বই-খাতা নর্দমা দিয়ে ভেসে যেতে দেখে মা বুঝতে পারেন। এই স্কুলছুট শিশুবালকই সত্য চৌধুরী। পরে যিনি একাধারে গায়ক-সুরকার ও অভিনেতা।
‘পৃথিবী আমারে চায়, রেখো না বেঁধে আমায়’ গানটিই খ্যাতির শীর্ষে তুলে দেয় সত্য চৌধুরীকে। গানটির গায়কী আজও মানুষের মনে জাগরিত। তবে এই গান জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে একা গায়ক নন, মোহিনী চৌধুরীর কথা এবং কমল দাশগুপ্তের মনছোঁয়া সুরের অবদান কিছু কম ছিল না। শিল্পীজীবনের শুরুতে কৃষ্ণচন্দ্র দে, রাইচাদ বড়াল, শচীন দেববর্মণের শিষ্য ছিলেন সত্য চৌধুরী। নজরুল ইসলামের ঘনিষ্ট সান্নি্ধ্যলাভ প্রায় ঈশ্বরলাভের সমতুল। তাঁর বহু গান রেকর্ড করেছেন। ‘চীন ভারত মিলেছে’, ‘সঙ্ঘশরণতীর্থযাত্রা পথে’, ‘হে প্রবল দর্পহারী,’ ‘ভারত আজিও ভোলেনি বিরাট’, ‘তোমার আঁখির মতো’, ‘বল ভাই মাভৈ মাভৈ’, ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’ সহ সত্য চৌধুরীর গাওয়া এমন বহু গান সেই সময় লোকের মুখে মুখে ফিরত। নজরুল অসুস্থ হওয়ার পরে তাঁর অনেক কবিতায় সত্য চৌধুরী ও কমল দাশগুপ্ত সুর দেন। সত্য চৌধুরী সকন্ঠে স্মরণীয় করে গিয়েছেন এমন বহু গানকে। উল্লেখযোগ্য ‘জাগো অনশন বন্দি’, ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানি’, ‘নয়ন ভরা জল’। নজরুলের কবিতায় সত্য চৌধুরীর সুরে ‘হে গোবিন্দ রাখো চরণে’, ‘মোরা আর জনমে হংস মিথুন’ উল্লেখ্য। চলচ্চিত্রে প্রথম গান করেন ‘জয়দেব’ (১৯৪১) ছবিতে। প্রায় ১০০টি চলচ্চিত্রে তিনি গান গেয়েছেন। নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ‘রাঙ্গামাটি’ ছবিতে। ১৯৩৭-এ বেতারে বাংলা ঘোষকের কাজে যোগ দেন। কাজ করেন ১৯৭৬ পর্যন্ত। অকৃতদার শিল্পীকে জীবনসায়াহ্নে বেছে নিতে হয় স্বেচ্ছা-নির্বাসন। তখনও কিছু উৎসাহী ছাত্রছাত্রী তাঁর কাছে যেতেন।
১৯৪৫-এ কমল দাশগুপ্তের সুরে ও প্রণব রায়ের কথায় গাইলেন ‘যেথা গান থেমে যায়, দীপ নেভে হায়’, ১৯৪৬-এ নিজের সুরে ও মোহিনী চৌধুরীর কথায় ‘জেগে আছি একা জেগে আছি কারাগারে’, ১৯৫৫-তে কমল দাশগুপ্তের সুরে ও মোহিনী চৌধুরীর কথায় সত্য গাইলেন ‘পৃথিবী আমারে চায়’। এই সব কালজয়ী গান মানুষের মনে আলোড়ন তুলেছিল। শৈশবে পেয়েছিলেন এক সাঙ্গীতিক আবহাওয়া। মায়ের মামা দিলীপকুমার রায়। মা-বাবা-কাকা-জ্যাঠা সকলেই গান করতেন। তাই ছোটো থেকেই শুনে শুনে গান রপ্ত করতেন। বাবা হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান করতেন। বাড়িতে আসতেন ভগবানচন্দ্র সেন, যিনি পাখোয়াজ বাজাতেন। সত্য চৌধুরীর কথায়, তিনি পাখোয়াজ বাজাতে বাজাতে এতটাই মগ্ন হয়ে যেতেন যে বাবা হারমোনিয়ামে সুর ধরতেন, ভগবানচন্দ্র সেন পাখোয়াজ বাজাচ্ছেন/আপনারা যদি শুনবেন তো দয়া করে আসবেন। মায়ের খুব প্রিয় ছিল রজনীকান্ত সেনের গান।
১৯১৮-এর ১৭ সেপ্টেম্বর, কলকাতার ৩১ নম্বর গ্রে স্ট্রিটে জন্ম হল সত্য চৌধুরীর। বাবা যতীন্দ্রমোহন চৌধুরী ছিলেন হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট। আদি নিবাস রাজশাহির মাদারিপুর গ্রাম। দেড় বছর যখন সত্যর, তখন বাবা চলে আসেন মামারবাড়ির কাছে ল্যান্সডাউন রোডে। সত্য চৌধুরীর পড়াশোনা পদ্মপুকুর ইনস্টিটিউশনে ক্লাস এইট পর্যন্ত, তার পর মিত্র ইনস্টিটিউশনে, সেখান থেকে ম্যাট্রিকুলেশন। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বটানি নিয়ে স্নাতক হয়েছেন আশুতোষ কলেজ থেকে।
তাঁর জীবনের পরম সৌভাগ্য তিনি নজরুলের সান্নিধ্যে এসেছিলেন বহু বার। প্রথম আসা ১৯২৭ সালে। রাজশাহির একটি সাধারণ গ্রন্থাগারে সেক্রেটারি ছিলেন জ্যাঠামশাই অশোকচন্দ্র চৌধুরী। কলকাতায় কেনাকাটা করার জন্য তিনি প্রায়ই আসতেন। তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন সত্য। সেখান থেকে ডিএম লাইব্রেরি। সেখানেই দেখা হয় কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে।
আশুতোষ কলেজের সহপাঠী কালীপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাদা কিশোরীমোহনের বাড়িতে থাকতেন শচীন দেববর্মণ। পরে যদিও শচীনকর্তা রাজা বসন্ত রায় রোডে চলে যান। কিশোরীমোহনের রেফারেন্সে শচীন দেববর্মণের গানের স্কুল ‘সুর-মন্দিরে’ ভর্তি হন সত্য। ভর্তির সময় যে চার টাকা লেগেছিল, সেই টাকা রোজগারের মজার ঘটনা আছে। একটি দৈনিক পত্রিকায় ফোটোগ্রাফির প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পাঁচ টাকা পান। সেই টাকায় গানে ভর্তি হন। ১৯৩৬ থেকে ১৯৪১ পর্যন্ত গান শেখেন। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও লঘু শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিক্ষা করেছেন দবীর খান, মেহেদী হোসেন খান ও বিষ্ণূপুরের জ্ঞান গোস্বামীর এক শিষ্য ফণীভূষণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে।
প্রথম বেতারে গান গাওয়া ১৯৩৭ সালে। তখন তিনি কলেজের নামকরা গায়ক-ছাত্র। বাবার বন্ধু সুরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সত্যকে নিয়ে গেলেন বেতারকেন্দ্রে। সেখানে অডিশনে শচীনকর্তার গান গাইলেন আর সাত দিনের মধ্যে ডাক পেয়ে গেলেন।
১৯৩৯ সালে ইউনিভারসিটি ইনস্টিটিউট হলে ইন্টার কলেজিয়েট মিঊজিক কম্পিটিশনে গায়কের পুরস্কার পান। ১৯৩৭ সালে দেবেশ বাগচী সত্য চৌধুরীকে নিয়ে যান অনুপম ঘটকের কাছে। এবং হিন্দুস্থান রেকর্ড থেকে প্রথম রেকর্ড বের হয় বিমল মিত্রের দুটি গান। ‘আজি শরত চাঁদের তিথিতে’ ও ‘শিউলি ঝরা অঙ্গন পথে’।
প্রতিবেশী হিসেবে মোহিনী চৌধুরীকে পেয়ে সত্য চৌধুরী নিজেকে ধন্য মনে করেছেন। অমন সহজ-সরল মানুষ ও আত্মমগ্নতা খুব একটা দেখেননি অন্য কারওর মধ্যে। নজরুল ইসলামের প্রশিক্ষণে শেষ গানের রেকর্ড বের হয় ১৯৪২-এ তিনজনের কন্ঠে। ‘সঙ্ঘশরণতীর্থযাত্রা পথে’ গেয়েছেন জগন্ময় মিত্র, প্রতিভা ঘোষ ও সত্য চৌধুরী।
শতবর্ষে পড়লেন সেই সত্য চৌধুরী। সম্প্রতি নন্দন ৩-এ ‘পৃথিবী আমারে চায়’-এর উদ্যোগে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করলেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁর বহুমুখী প্রতিভার কথা তুলে আনলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। বেতারে এক সঙ্গে ঘোষকের কাজ করা মিহির বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করলেন। সত্য চৌধুরী সম্পর্কে আরও নানা কথা শোনালেন রেকর্ড সংগ্রাহক সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়, সংস্থার চেয়ারপার্সন রত্না শূর সহ অনেকে।
প্রবন্ধ
স্বামী নিত্যসত্যানন্দ মহারাজের সঙ্গে সেই কুড়িটা মিনিট কোনো দিনও ভুলব না
খুব বেশি হলে কুড়িটা মিনিট সময় কাটিয়েছিলাম স্বামীজির সঙ্গে। কিন্তু তাতেই কত আপন করে নিয়েছিলেন তিনি। মনে হচ্ছিল কত দিনের পরিচিত।

শ্রয়ণ সেন
“এই ব্যাটা, অত প্রণামটনাম করতে হবে না! এমনিই আশীর্বাদ করলুম।”
আজও খুব স্পষ্ট ভাবে মনে পড়ছে কী সুন্দর আর মজার ছলে কথাটা আমায় বলেছিলেন স্বামী নিত্যসত্যানন্দ মহারাজ। এখনও পরিষ্কার ভাবে মনে পড়ছে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার সেই দিনটা।
২০২০-এর জানুয়ারি। দার্জিলিংয়ের রায় ভিলায় বেড়াতে গিয়েছি। এই বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন সিস্টার নিবেদিতা। সেটি বর্তমানে রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা নিবেদিতা শিক্ষা-সংস্কৃতি কেন্দ্র। আর তারই দায়িত্বে ছিলেন স্বামী নিত্যসত্যানন্দ মহারাজ।
‘ছিলেন’ কেন বললাম? কারণ, রবিবার সন্ধ্যায় মন খারাপ করা খবরটি পেলাম।
রামকৃষ্ণলোকের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন স্বামী নিত্যসত্যানন্দ মহারাজ। অত্যন্ত আকস্মিক ভাবে সবাইকে কাঁদিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
সংবাদটা বিশ্বাস করতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। মাত্র এক বছর আগেই যে মানুষটা আমাদের সঙ্গে মজার ছলে কিছুটা সময় কাটালেন, ‘ভূতকোঠি’ থেকে নিবেদিতা-সাধনার কেন্দ্র গড়ে ওঠার গল্প শোনালেন, যে মানুষটার সঙ্গে গত জানুয়ারিতেও প্রায় সাক্ষাৎ হয়েই যাচ্ছিল, তিনি আকস্মিক ভাবে চলে গেলেন কেন? কী-ই বা তাড়া পড়েছিল তাঁর।
২০১৩ সালে যে বাড়িটায় ‘রামকৃষ্ণ মিশন নিবেদিতা এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল সেন্টার’ (Ramakrishna Mission Nibedita Educational and Cultural Centre) গড়ে ওঠে, সেই রায়ভিলা তার আগে পর্যন্ত স্থানীয়দের কাছে ভূতকোঠি নামে পরিচিত ছিল।
–“প্রথম যখন এসেছিলেন, আপনাদের ভয় করেনি?”
–“না। আসলে জানেন তো, যারা দুষ্টুমি করে, আমার মতে তারা ভীতু হয় বেশি। তাই এরা আমাদের কোনো বাধা দেয়নি।”
— “সাত বছর হল আপনারা এসেছেন, স্থানীয়দের মনোভাব কেমন বুঝছেন?”
স্বামীজি তখন বলেছিলেন, প্রথমে স্থানীয়দের সন্দেহ ছিল। ‘ভূতকোঠি’তে আবার কী শুরু হচ্ছে, এই নিয়ে ভয়ডরও ছিল। কিন্তু মিশনের কাজ শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সেই ভয় কেটে যায়।

ওই আড্ডার মধ্যেই পেছন থেকে এসে স্বামীজির গাল টিপে জড়িয়ে ধরল এক কিশোরী।
— “এঁরা বোধহয় নিজেদের বাড়িতে ভালোবাসা খুব একটা পায় না, না?”
— “ভালোবাসার অভাব তো ছিলই। সেটা আমরা পূরণ করার চেষ্টা করছি। মনে হচ্ছে সফলও হচ্ছি।”
এই কেন্দ্রের জন্যই এই আশেপাশের খুদেদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়ে গিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রায় ৭০ জনের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন এখানকার মহারাজরা। স্কুল থেকে সোজা এখানে চলে আসে খুদেগুলো। বিভিন্ন বিষয়ে পড়ানোর পাশাপাশি আদর্শ মানুষ কী ভাবে হবে, সেই পাঠও দেওয়া হয়। আর এই সবই হচ্ছিল স্বামী নিত্যসত্যানন্দের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়।
বাঙালি সমতল আর নেপালি দার্জিলিংয়ের মধ্যে তাঁরা একটা সেতুবন্ধনের কাজ করছে বলেও জানিয়েছিলেন স্বামী নিত্যসত্যানন্দ, আর সেই ব্যাপারে তাঁরা অনেকটাই সফল হয়েছেন।
এ ছাড়া নানা রকম ত্রাণকাজ তো রয়েছেই। দার্জিলিংয়ের সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। বৃষ্টি-ধস-ভূমিকম্প কত কী লেগে থাকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে প্রথমেই ত্রাণের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে মিশন। এ ছাড়া চা-বাগানগুলিতে রোজই ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়।
খুব বেশি হলে কুড়িটা মিনিট সময় কাটিয়েছিলাম স্বামীজির সঙ্গে। কিন্তু তাতেই কত আপন করে নিয়েছিলেন তিনি। মনে হচ্ছিল কত দিনের পরিচিত।
গত মাসে যখন দার্জিলিং গিয়েছিলাম, ইচ্ছে ছিল একবার স্বামীজির সঙ্গে দেখা করে আসি। কিন্তু সেটা হয়নি। কিন্তু তখন একবারও মনে হয়নি যে তাঁর সঙ্গে আর কোনো দিনও দেখা হবে না।
শুনলাম স্বামীজি নাকি ধ্যান করতে করতে দেহত্যাগ করেছেন। তাঁকে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কে বলতে পারে, হয়তো আগে থেকেই বুঝে গিয়েছিলেন এমন সময় আসতে চলেছে তাঁর। এই কারণেই বোধহয় এঁরা মহাপুরুষ!
স্বামী নিত্যসত্যানন্দ মহারাজ হয়তো শরীরে থাকলেন না। কিন্তু দার্জিলিংয়ের রায় ভিলা জুড়ে তিনিই থাকবেন। তাঁর দেখানো পথেই যে নিবেদিতা-সাধনার কেন্দ্রটি চলবে, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
কথাশিল্প
অনাথ ও পরিত্যক্ত কৈশোরের ‘মা’ সুপর্ণা, কাজের স্বীকৃতিতে পেয়েছেন রাজ্য সরকারের পুরস্কার
নতুন বছরের শুরুতেই অনাথ অথবা পরিত্যক্ত ছেলেমেয়েদের লাগাতার বায়না মেটাতে নিজের প্রায় শতাধিক ছবি বিলি করতে হয়েছে সুপর্ণাকে।

কৃষ্ণ আজাদ
একজন মানুষ সর্বসাধারণের কাছে গর্বের ধন হয়ে ওঠেন যখন তিনি মানুষের পাশে থাকেন। সরকারি চাকরি যাঁরা করেন তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ হল, ওঁরা সময়ের কাজ সময়ে করেন না, অনীহা অথবা উদাসীনতার কারণে। এ ব্যাপারে অতীত থেকে বর্তমান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করেছেন। কিন্তু মানুষের এই অভিযোগ দূর হয়নি। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সরকারি কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, মানুষের কাজ যেন আটকে না থাকে।
সুপর্ণা কণ্ঠ একজন সরকারি কর্মী। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের (West Bengal health department) অ্যাডোলেসেন্স হেলথ্ কাউন্সেলর (Adolescence Health Counsellor)। গত ১২ বছর ধরে সুপর্ণার কাজের ক্ষেত্র জয়নগর গ্রামীণ (Jaynagar Rural Hospital) হাসপাতাল। মাসের অনেকটা সময় কাজ করেন প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতেও।
ব্রিটিশরা ভারতীয়দের হাতে শাসনক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে স্বদেশে ফিরে গিয়েছে কয়েক দশক আগে। ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশের গ্রামগুলি শোচনীয় পরিস্থিতিতে ছিল। গ্রামকে গ্রাম মানুষ উজাড় হয়ে যেত মড়কে। গ্রাম্য নারীপুরুষ আধুনিক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। গ্রামজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ছিল অশিক্ষা, দারিদ্র্য। সেই পরিস্থিতির পূর্ণাঙ্গ বদল আজও হয়নি।
শহর গ্রামের কাছাকাছি এসেছে। আর এতে বিপদও বেড়েছে। শহরের রঙিন হাতছানি অনেক গ্রামবাসীকে বিপথগামী করছে, জালে পড়ছেন গ্রামবাসীরা। ফলে নেশার উৎপাত, মেয়েদের প্রতি অবহেলা, অপরাধমূলক কাজ থেকে শুরু করে পুরোনো দিনের সমস্যাগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও নতুন নতুন বিপদ।

নাবালিকা বিবাহ, নারীপাচার, নবজাত সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়া, সন্তানকে ফেলে বাবা, মা দু’ জনেরই আর একটি বিয়ে করে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা শুধু বাংলার নয়, সারা দেশেরই সমস্যা।
হেলথ্ কাউন্সেলরের চাকরিতে যোগ দিয়েই সরকারি কর্মী হিসেবে উল্লিখিত সমস্যাগুলো কোন পথে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে ভেবেছেন সুপর্ণা। খাতায় কলমে নয়, এর বাস্তব সমাধানে সদা তৎপর সুপর্ণা। জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালের হেলথ্ কাউন্সেলর সুপর্ণা ইতিমধ্যে বেশ কিছু নাবালিকা বিবাহ রুখে দিয়েছেন, প্রসূতি-মৃত্যু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়ে সফল হয়েছেন, স্কুলছুট ছেলেমেয়েদের ফের জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনেছেন, মাদকাসক্ত হয়ে পড়া নাবালকদের সুস্থ জীবন উপহার দিয়েছেন, অনাথ নাবালক, নাবালিকাদের বুকে জড়িয়ে সাহচর্য দিয়েছেন।
সুপর্ণা জানালেন, বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের জীবনেরও নানা সমস্যার কথা শুনতে হয় তাঁকে। কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করেন। কুলতলি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ ভালোবাসেন সুপর্ণাকে।
আদতে কলকাতার মেয়ে সুপর্ণা লেখাপড়া করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখাপড়ার বিষয় ছিল সোশিওলজি। এর পর কিছু দিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় চাকরি করেছেন। পরে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কাজটা পেয়ে যান।
সুপর্ণার কথায়, “ছোটোবেলা থেকেই সেবামূলক কাজ করার খুব ইচ্ছে ছিল। এক সময় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পেয়ে পড়িনি। তার পরিবর্তে সোশিওলজি পড়লাম। এটা পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল, আমার মনে হয়েছে এই বিষয়টা নিয়ে পড়লে ভবিষ্যতে সামাজিক কাজ করতে পারব। সেই চেষ্টা খানিক সফল হয়েছে বলতে পারেন।”
পিতৃ-মাতৃহীন অথবা বাবা-মা পরিত্যাগ করেছে যে সমস্ত ছেলেমেয়েকে, কাউন্সেলর হিসেবে সুপর্ণা তাদের পরিচর্যা করেন, নিছক সরকারি কর্মী হিসেবে দায় সারতে নয়। আপনি আচরি ধর্ম পালন করে কাজ না করা অথবা কর্তব্য পালনে উদাসীনতার যে বদনাম সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে রয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে সুপর্ণা সেই বদনাম অনেকটা ঘুচিয়েছেন।

কথাটা বাড়িয়ে বলা নয়। নতুন বছরের শুরুতেই অনাথ অথবা পরিত্যক্ত ছেলেমেয়েদের লাগাতার বায়না মেটাতে নিজের প্রায় শতাধিক ছবি বিলি করতে হয়েছে সুপর্ণাকে। সুপর্ণা বললেন, “স্কুল খুললেই আরও ৪০০ জন ছাত্রীকে আমার ছবি দিতে হবে। না হলে ওরা বায়না ছাড়বে না। ওদের মা নেই। ওরা বলেছে, দিদি তোমার একটা ছবি দাও। মায়ের মতো আপনজন তুমি।”
কাজের স্বীকৃতিতে সরকারি এবং বেসরকারি একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন সুপর্ণা। রাজ্য নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর সুপর্ণাকে পুরস্কৃত করেছে।
প্রত্যেক মানুষের জীবনেই বিভিন্ন সমস্যা থাকে। নিশ্চয়ই জীবনের নিয়মে নানা ঘাত-প্রতিঘাত সামলাতে হয় সুপর্ণাকেও। কিন্তু সামলান কী ভাবে?
সুপর্ণা বললেন, “আমি নিজেও মায়ের সঙ্গে থাকি। আমার মা আমার প্রিয়তম বন্ধু। মাকেই খুলে বলি মনের কথা। এতে ভার লাঘব হয়। এ ছাড়া সেলফ কাউন্সেলিং তো আছেই।”
আরও পড়ুন: ওলা, সুইগি, উবেরের প্রথম মহিলা চালক রূপার দিদিগিরি
প্রবন্ধ
‘কয়েকটা টাকার বিনিময়ে নেতাজির স্মৃতি ধুলোয় মিশিয়ে দেব?’, বলেছিলেন পদমবাহাদুর
মুখে বড়ো বড়ো কথা বললেও, নেতাজির আদর্শে চলার ব্যাপারে আমরা লবডঙ্কা। কবে আমরা ওঁর আদর্শে চলব, ঠিক পদমবাহাদুরের মতো?

শ্রয়ণ সেন
আবার সেই পথে। এই তো ঠিক এক বছর আগে ২০২০-এর জানুয়ারিতে ঘুরে গিয়েছিলাম এখান থেকে। এই জানুয়ারিতে দার্জিলিঙের পথে গিদ্দা পাহাড়ের পাশ দিয়ে যেতে যেতে স্মৃতিতে ডুব দিলাম। মনের মধ্যে ভেসে উঠল পদমবাহাদুর ছেত্রীর মুখটা আর ওঁর কথাগুলো।
“তখন ওরা কত করে আমায় বলল বাড়ির ইটগুলো বিক্রি করে দিতে, এতে আমার টাকা হবে। কিন্তু আমি ওদের কথা শুনিনি। আমার তখন একটাই লক্ষ্য, যে করেই হোক, ওদের হাত থেকে বাড়িটা বাঁচাতেই হবে।”
বেশ গর্ব করেই কথাগুলো বলেছিলেন পদমবাহাদুর। নেতাজি ইনস্টিটিউট ফর এশিয়ান স্টাডিজ তথা নেতাজি মিউজিয়ামের দেখভালের পুরো দায়িত্ব তাঁর ওপরে। তিন বছরের দুরন্ত নাতিকে সঙ্গে নিয়ে পুরো বাড়িটা আমাদের ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই বাড়িটার অবদান হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। কারণ এই বাড়িতে খুব বেশি কারও পা-ও পড়ে না।

“খুলা হ্যায়, খুলা হ্যায়।”
মূল ফটক দিয়ে বাড়ির দিকে এগোতেই আমাদের উদ্দেশ করে বলেছিল মিষ্টি অথচ দুরন্ত সেই শিশুটি। শীতের দিনের মিঠে রোদে পিঠ দিয়ে দাদুর কোলে বসেছিল নাতি। আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছিল, মিউজিয়াম খোলা আছে, ভেতরে যেতে পারি।
বাইরে জুতো খুলে প্রবেশ করলাম। এটা তো ঠিকই, যে কোনো পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে গেলে জুতো খুলতেই হবে। নেতাজিকে ভালবাসেন, এমন যে কোনো মানুষের কাছে এই বাড়ি একটা সাধনাস্থল।
নেতাজির বহু বিরল ছবি, তাঁর ব্যবহৃত বিভিন্ন আসবাবপত্র আর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে লেখা চিঠি এখানে সযত্নে রাখা আছে।
১৯২২ সালে রলি ওয়ার্ড নামক এক ব্যক্তির কাছ থেকে কার্শিয়াংয়ের গিদ্দাপাহাড়ে অবস্থিত এই বাড়িটি কিনে নেন নেতাজির দাদা, তথা স্বাধীনতাসংগ্রামী শরৎচন্দ্র বসু।
১৯৩৩ থেকে ১৯৩৫, এই বাড়িতেই ব্রিটিশ সরকারের হাতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল শরৎ বসুকে। এর পরের বছরেই নেতাজির পালা। এই বাড়িতে তাঁকে সাত মাসের জন্য বন্দি করে রাখা হয়।
দ্বিতীয় বার যখন এই বাড়িতে নেতাজি আসেন, তখন তিনি বন্দি নন। সেটা ১৯৩৭ সালের অক্টোবর। হরিপুরা কংগ্রেসের ভাষণ এই বাড়িতে বসেই লিখেছিলেন নেতাজি। এখান থেকে গান্ধীজি ও জওহরলাল নেহরুকে চিঠিও লিখেছিলেন।

এই বাড়িতে থাকাকালীনই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি চিঠি পেয়েছিলেন নেতাজি। তাতে ‘বন্দেমাতরম’ গানের প্রসঙ্গও ছিল।
চিঠির একটি অংশে রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, “…যে রাষ্ট্রসভা ভারতবর্ষের সকল ধর্ম-সম্প্রদায়ের মিলনক্ষেত্র, সেখানে এই গান সর্বজনীন ভাবে সঙ্গত হতেই পারে না।”
এই বাড়িতে বহু দুর্লভ ছবির পাশাপাশি নেতাজি-কেন্দ্রিক প্রচুর চিঠিরও সংগ্রহ রয়েছে। সব চিঠি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ার মতো সময় ছিল না। ‘বন্দেমাতরম’ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথের চিঠির ব্যাপারটি একটি সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছিলাম। ওই চিঠির উত্তরও রবীন্দ্রনাথকে দিয়েছিলেন নেতাজি। কিন্তু তাঁর সেই জবাবের হাতের লেখা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
কার্শিয়াংয়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে নেতাজি কত যে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন, তার প্রমাণও রয়েছে এখানে রক্ষিত বহু চিঠিতে।
নেতাজিকে নিয়ে এমন দুর্লভ ছবির সম্ভার ভারতে আর কোথাও আছে বলে মনে করতে পারি না।
নেতাজি এখানে থাকাকালীন প্রাতর্ভ্রমণে বেরোতেন। পাগলাঝোরায় প্রাতর্ভ্রমণরত নেতাজি, এমনই একটি ছবি রয়েছে। বসু পরিবারের সঙ্গে নেতাজির ছবি যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে জওহরলাল নেহরু, সর্দার বল্লভভাই পটেলের সঙ্গে তোলা ছবিও।
এ ছাড়া নেতাজির ব্যবহার করা খাট, চেয়ার-টেবিল সবই সযত্নে রাখা হয়েছে। কার্শিয়াংয়ের ‘পয়েন্টস’ ভ্রমণের মধ্যেই নেতাজির এই বাড়ি পড়ে। কিন্তু এখানে আসতে হবে আলাদা ভাবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়ে দিয়ে ভালো করে দেখতে হবে। তবেই মনের শান্তি পাওয়া যাবে।
১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাড়িটি বসু পরিবারের অধীনে ছিল। এর পর বাড়িটি পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার অধিগ্রহণ করে। সংস্কার করে তা কলকাতার ‘নেতাজি ইনস্টিটিউট ফর এশিয়ান স্টাডিজ’-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
নেতাজির দুর্লভ ছবি, চিঠিপত্র আর ব্যবহৃত আসবাবপত্র নিয়ে এই সংগ্রহশালাটি উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালে। ২০১৮ সালে সেই সংগ্রহশালার সংস্কারের কাজও হয়েছে।
নেতাজির এই বাড়িটার সঙ্গেই নিজেকে একাত্ম করে দিয়েছেন পদমবাহাদুর। তাঁর কথাবার্তা, আচার আচরণে বোঝা যায়, আশির কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া এই বৃদ্ধ নেতাজিকে কখনও না দেখলেও তাঁকে রোজ অনুভব করেন।
শত চেষ্টা করেও পদমবাহাদুরকে ক্যামেরার সামনে আনা গেল না।

১৯৭৩ থেকে এই বাড়িটার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন পদমবাহাদুর। তখন দিনপ্রতি দু’ টাকা হাজিরায় বসুদের কাছ থেকে এই বাড়িটির দেখভালের দায়িত্ব পান।
-“তব মহিনে মে ষাট (৬০) রুপ্যায় মিলতা থা।” গলায় গর্ব ঝরে পড়েছিল।
এর পর বাড়িটা কত ঝড়ঝাপটার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তবুও তিনি ছিলেন তাঁর লক্ষ্যে অবিচল।
কথা প্রসঙ্গেই উঠে এসেছিল ১৯৮৬ সালের গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের কথা। সুবাস ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে সেই আন্দোলন মারাত্মক ধ্বংসাত্মক চেহারা নেয়। গত ১৫ বছরে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে যে আন্দোলন হয়েছে, সুবাস ঘিসিংয়ের জঙ্গি আন্দোলনের কাছে সে সব নেহাতই শিশু।
তখনই পদমবাহাদুরের কাছে আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব আসে এই বাড়ির এক একটা ইট বিক্রি করে দিয়ে বিনিময় টাকা নেওয়ার। আর প্রকারান্তরে সে টাকার কিছুটা অংশ আন্দোলনকারীদের দিয়ে দেওয়া।
পদম কিন্তু ছিলেন তাঁর লক্ষ্যে অবিচল। আন্দোলনকারীদের কথা কানেই তোলেননি তিনি। সোজা জানিয়ে দেন, নেতাজির স্মৃতিকে এ ভাবে ধুলোয় মিশে যেতে তিনি দেবেন না।
তাঁর কথায়, “মাত্র কয়েকটা টাকার জন্য নেতাজিতে বিকিয়ে দেব! আমি গরিব হতে পারি, লোভী নই।”
আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আপশোশ, কার্শিয়াংয়ের এক নেপালি বৃদ্ধ নেতাজির আদর্শে চলতে পারেন, কিন্তু আমরা পারি না। আজ ১২৫ বছরে পড়লেন নেতাজি। মুখে বড়ো বড়ো কথা বললেও, নেতাজির আদর্শে চলার ব্যাপারে আমরা লবডঙ্কা। কবে আমরা ওঁর আদর্শে চলব, ঠিক পদমবাহাদুরের মতো?
ছবি: লেখক
আরও পড়ুন: সুভাষের খোঁজে সুভাষগ্রাম ও অন্যত্র
-
প্রযুক্তি2 days ago
মাত্র ২২ টাকায় জিও ফোন প্রিপেড ডেটা ভাউচার! জানুন বিস্তারিত
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার1 day ago
কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির আওতায় মাদ্রাসায় পড়ানো হবে গীতা, রামায়ণ, বেদ-সহ অন্যান্য বিষয়
-
রাজ্য3 days ago
৯২ আসনে লড়বে কংগ্রেস, জানালেন অধীর, আব্বাসকে নিয়ে জট অব্যাহত
-
দেশ1 day ago
স্বামীর ‘দাসী’ নন স্ত্রী, এক সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা যাবে না, বলল সুপ্রিম কোর্ট