Khaboronline
কফি হাউসের আড্ডা থেকে বিশ্বের দরবারে
শ্রয়ণ সেন: কফি হাউসের আড্ডা শুধু মান্না দের কালজয়ী গানেরই সাক্ষী নয়, সাক্ষী আরও অনেক কিছুরই। শহরের বুদ্ধিজীবীদের মিলনক্ষেত্র রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-সামাজিক চর্চার জায়গা এই কফি হাউসই সাক্ষী শহরের গর্বের বইমেলার। ১৯৭৪-এ কলেজ স্ট্রিট বই পাড়ার এক দল তরুণ প্রকাশকের আড্ডায় উঠে আসে বইমেলার প্রস্তাব। তাঁদের চর্চার বিষয় ছিল, কী ভাবে প্রকাশনা ব্যবসাকে আরও জোরদার করা যায়, […]
শ্রয়ণ সেন:
কফি হাউসের আড্ডা শুধু মান্না দের কালজয়ী গানেরই সাক্ষী নয়, সাক্ষী আরও অনেক কিছুরই। শহরের বুদ্ধিজীবীদের মিলনক্ষেত্র রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-সামাজিক চর্চার জায়গা এই কফি হাউসই সাক্ষী শহরের গর্বের বইমেলার।
১৯৭৪-এ কলেজ স্ট্রিট বই পাড়ার এক দল তরুণ প্রকাশকের আড্ডায় উঠে আসে বইমেলার প্রস্তাব। তাঁদের চর্চার বিষয় ছিল, কী ভাবে প্রকাশনা ব্যবসাকে আরও জোরদার করা যায়, বইপ্রেমীদের বাংলা বইয়ের আরও কাছে টানা যায়। শুধু বই ব্যবসাকে কেন্দ্র করে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে আয়োজিত বিশ্বের সব চেয়ে বড় মেলার প্রসঙ্গ উঠে এল। এই প্রস্তাবে সমর্থন যেমন ছিল, বিরোধিতাও ছিল। তরুণরা যতই বইমেলার প্রস্তাবে রাজি ছিলেন, প্রবীণরা তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, বই কখনওই মেলায় বিক্রয়যোগ্য পণ্য নয়। কিন্তু কোনও কিছুতেই তরুণদের টলানো গেল না। শুরু হয়ে গেল বইমেলার প্রস্তুতি। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ১৯৭৫-এ প্রকাশকদের নিয়ে গঠিত হল ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড’। প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হলেন সুশীল মুখার্জি, জয়ন্ত মনকতলা হলেন প্রথম সাধারণ সম্পাদক।
এল সেই দিন। ৫ মার্চ, ১৯৭৬। ৫৬টি স্টল আর ৩৪ জন প্রকাশককে নিয়ে কলকাতা বইমেলার পথ চলা শুরু। ৫০ পয়সা প্রবেশমূল্য নিয়ে বিড়লা তারামণ্ডলের উল্টো দিকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল–এর লাগোয়া মাঠে আয়োজিত প্রথম বইমেলা উদ্বোধন করেন তৎকালীন রাজ্যপাল এ এল ডায়াস ও শিক্ষামন্ত্রী মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় বইমেলা আয়োজন করার পাশাপাশি গিল্ড এ বছরই বিশ্ব বইমেলা আর ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলাতেও অংশগ্রহণ করে। ধীরে ধীরে আরও বড় হতে শুরু করে বইমেলা। সাহিত্যসভা, সেমিনার-সহ আরও নানা অনুষ্ঠান জায়গা করে নিল বইমেলার সূচিতে। বিদেশের কোনও ঐতিহাসিক স্থাপত্যের আদলে তৈরি হওয়া শুরু হল বইমেলার প্রবেশদ্বার আর গিল্ড অফিস তৈরি হত দেশের কোনও ঐতিহাসিক স্থাপত্যের আদলে। ১৯৮৩ সালে মেলা সরে এল আরও বড় জায়গায়, রবীন্দ্র সদনের বিপরীতে এখন যেখানে ‘মোহরকুঞ্জ’, সেখানে। সে বছরই শহরের প্রাণের মেলা পেল এক গর্বের স্বীকৃতি। মেলার উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থার (আইপিএ) সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি কথা বললেন গিল্ড সদস্য অশোক ঘোষের সঙ্গে। কলকাতা বইমেলার মাথায় উঠল ‘আন্তর্জাতিক’ তকমা। বইমেলা জায়গা করে নিল আইপিএ-র ক্যালেন্ডারে। আনন্দের মুহূর্তেও আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর প্রধান সম্পাদক অশোক সরকারের মৃত্যুতে নেমে আসে শোকের ছায়া। বক্তৃতার মধ্যে হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি।
আরও নতুন নতুন প্রকাশনাসংস্থা আসতে শুরু করায় পুরনো জায়গায় আর কোনও ভাবেই বইমেলা করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই ১৯৮৮-তে বইমেলা পেল নতুন এক জায়গা। পার্ক স্ট্রিট আর আউটরাম রোড সন্নিহিত এলাকায় ময়দানের একটি পরিত্যক্ত জমিতেই শুরু হল বইমেলা। ভবিষ্যতে গিল্ড এই জায়গাটিকে নিজের খরচেই ভালো করে গড়ে তোলে।
১৯৯১-তে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার আদলে কলকাতা বইমেলাতেও চালু হল ফোকাল থিম। প্রথম বার ফোকাল থিম ছিল অসম। পরবর্তী বছরগুলিতে ফোকাল থিম হিসেবে যথাক্রমে ওডিশা, ত্রিপুরা, বিহার আর পশ্চিমবঙ্গকেও তুলে ধরা হয়েছিল মেলায়। ফোকাল থিমের উদ্দেশ্য ছিল, যে বছর যে রাজ্য ফোকাল থিম সে বছর সেই রাজ্যের সংস্কৃতিকে তুলে ধরা।
১৯৯৭-তে বিদেশি রাষ্ট্রকে প্রথম বার ফোকাল থিম করা হয় কলকাতা বইমেলায়। কলকাতা বইমেলা যেন প্রথম বার প্রকৃত ‘আন্তর্জাতিক’ চেহারা নিল। সে বার উদ্বোধনমঞ্চকে আলোকিত করেছিলেন বিখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক জাঁক দেরিদা। সব চেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষীও এই বছরের মেলা। ষষ্ঠ দিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে যায় মেলায়। আগুনের গ্রাসে পুড়ে ছাই এক লক্ষের ওপর বই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এক জনের। তবে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে, হতাশা কাটিয়ে উঠে মাত্র তিন দিনেই ফের নতুন করে শুরু হয় মেলা। পরবর্তী বছরগুলিতে মেলার ফোকাল থিম হয় গ্রেট ব্রিটেন, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, হল্যান্ড, কিউবা, চিলি, স্পেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, স্কটল্যান্ড, মেক্সিকো, ইতালি, পেরু, বোলিভিয়া আর এ বছর এল কোস্তা রিকা। ১৯৯৯-এ বইমেলার অতিথি হয়ে এলেন ‘সিটি অফ জয়’ খ্যাত ডোমিনিক ল্যাপিয়ের আর ২০০৫-এ বইমেলাকে আলোকিত করলেন জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস। এ বারই ময়দানে বইমেলা করার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। সুভাষবাবু দাবি করেন, যথেচ্ছ খোঁড়াখুঁড়ি, মাঠের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়া, খাবারের স্টলে রান্নাবান্না আর মানুষের পায়ের ধুলোর জন্য দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
মামলা জিতলেন সুভাষবাবু। ময়দানে সব ধরনের মেলা বন্ধ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তৎকালীন রাজ্য সরকারের এক বছরের রেহাইয়ের আর্জি মেনে হাইকোর্ট ২০০৬-এ ময়দানে বইমেলা করার অনুমতি দেয়। উল্লেখ্য ২৫ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি আর ২২ কোটি টাকার ওপর বই বিক্রিতে আগের সব রেকর্ড ছাপিয়ে যায় এ বারের মেলা। বইমেলা ময়দানেই থাকুক এই দাবিতে সই সংগ্রহ অভিযান হয়। কিন্তু ২০০৬-এই শেষ বারের জন্য মেলা দেখল শহরের গড়ের মাঠ। ২০০৭-এ বইমেলার প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে তখনই পরিবেশবিদদের করা জনস্বার্থ মামলায় (পিল) মেলা শুরু হওয়ার আগের দিন কলকাতা হাইকোর্ট রায় দিল কোনও ভাবেই বইমেলা ময়দানে আর করা যাবে না। বিকল্প জায়গা হিসেবে পার্ক সার্কাস ময়দানকে ভেবে রাখা হলেও কোর্টের রায় তার বিরুদ্ধেও গেল। স্থায়ী জায়গার অভাবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ২০০৭ আর ২০০৮-এর বইমেলা। কিন্তু জায়গা কম থাকায় অন্য বারের তুলনায় বই বিক্রি অনেক কম হয়েছিল।
দীর্ঘ টালবাহানার পর বইমেলা পেল তার স্থায়ী জায়গা। ২০০৯-এ সায়েন্স সিটির কাছে মিলনমেলার মাঠে উদ্বোধন হল তেত্রিশতম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার। প্রথম বার প্রকাশিত হল বইমেলার থিম সং, ‘ওই ডাকছে বই’। বইয়ের ডাকে নতুন জায়গাকে আপন করে নিলেন মানুষজন। ২০০৯-এর মিলনমেলার মাঠ আর এখনকার মাঠের মধ্যে বিস্তর ফারাক। সে বারের অপ্রস্তুত মাঠ এখন একেবারে সর্বাঙ্গসুন্দর রূপে হাজির। তৈরি হয়েছে চারটি স্থায়ী ইনডোর হল, স্থায়ী গিল্ড অফিস। স্থায়ী টয়লেট আর স্থায়ী ফুড কোর্টও হয়েছে মেলায়। বইমেলার পালকে নতুন সংযোজন কলকাতা সাহিত্যসভা বা ‘কলকাতা লিটারেচার ফেস্টিভাল’। জয়পুর লিটেরারি মিট আর এডিনবরা লিটারেচার ফেস্টিভাল-এর আদলে তিন দিনের এই ‘মিট’ শুরু হয় ২০১৪-এর বইমেলায়।
অনলাইন শপিং-এর যুগেও মানুষের মধ্যে কলকাতা বইমেলার প্রতি আবেগ আর ভালোবাসা এখনও আগের মতোই অটুট। ১৯৭৪-এ মাত্র কয়েক জন তরুণের মস্তিষ্কপ্রসূত এই মেলা আগামী দিনে বিশ্বের দরবারে আরও প্রতিপত্তি ছড়াবে এই আশা করাই যায়।
Khaboronline
ইতিহাস গড়া মঙ্গলযানের নেপথ্যে রয়েছেন তিন ভারতীয় মহিলা
বেঙ্গালুরু: ভারতের প্রথম এবং একমাত্র সফল মঙ্গল কক্ষপথ অভিযান ছিল ২০১৩ সালের ‘মার্স অরবাইটাল মিশন’ (মম)। মঙ্গলযান নামেই অবশ্য সারা দেশে বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল অভিযান। তবে গৌরব গাঁথার আড়ালেই রয়ে গেছে অন্য এক ইতিহাস। সে ইতিহাস মঙ্গল অভিযানের দায়িত্বে থাকা তিন ভারতীয় মহিলার। সাফল্যগুলো স্বীকৃতি পায়, নথিভুক্ত হয়। কিন্তু প্রায়শই সবার অলক্ষ্যে থেকে যায় সাফল্যের […]
বেঙ্গালুরু: ভারতের প্রথম এবং একমাত্র সফল মঙ্গল কক্ষপথ অভিযান ছিল ২০১৩ সালের ‘মার্স অরবাইটাল মিশন’ (মম)। মঙ্গলযান নামেই অবশ্য সারা দেশে বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল অভিযান। তবে গৌরব গাঁথার আড়ালেই রয়ে গেছে অন্য এক ইতিহাস। সে ইতিহাস মঙ্গল অভিযানের দায়িত্বে থাকা তিন ভারতীয় মহিলার।
সাফল্যগুলো স্বীকৃতি পায়, নথিভুক্ত হয়। কিন্তু প্রায়শই সবার অলক্ষ্যে থেকে যায় সাফল্যের পেছনে থাকা মানুষগুলোর কথা। তেমনই তিন মহিলার কথা সামনে এল কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘মম’ অভিযানের প্রোজেক্ট ম্যানেজার নন্দিনী হরিনাথ জানিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা।মঙ্গলযান তার পথ চলা শুরু করেছিল ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। মহাকাশযানটির যাত্রার প্রস্তুতিপর্ব থেকেই বিশেষ আবেগ জড়িয়ে ছিল নন্দিনীর। ইসরোর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সীতা সোমাসুন্দরমও ছিলেন ওই সাক্ষাৎকারে। তিনি বলেছেন আরেক ঐতিহাসিক মুহূর্তের অনুভূতি। ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, যে দিন প্রথম মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছয় মঙ্গলযান। সোমার ভাষায়, “সে দিনের অনুভূতির কথা সারা জীবন মনে থাকবে। খবরটা শোনার সময়টাই ছিল গোটা দিনটার সুন্দরতম মুহূর্ত”। পেশায় ইসরোর ইঞ্জিনিয়ার মিনাল রোহিতের কাছেও এই মিশনের সাফল্য স্বপ্ন ছোঁয়ার চেয়ে কিছু কম নয়।
Khaboronline
হঠাৎ রাজ্যপালের কাছে অখিলেশ, যাদবকুলের লড়াই এবার পোস্টারেও
‘নেতাজি’ মুলায়ম সিং মুখে যতই বলুন, দলে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, সেটা যে সাংবাদিকদের সামনে নিছকই একটি বিবৃতি, তা প্রমাণ হয়ে গেল বুধবারই। দলের সভাপতি শিবলাল যাদব দল থেকে বহিষ্কার করলেন অখিলেশ-ঘনিষ্ঠ তেজেন্দ্রনারায়ণ তথা পবন পাণ্ডেকে এবং মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করতে। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব অবশ্য এ সংক্রান্ত কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে দেখা […]
‘নেতাজি’ মুলায়ম সিং মুখে যতই বলুন, দলে কোনো দ্বন্দ্ব নেই, সেটা যে সাংবাদিকদের সামনে নিছকই একটি বিবৃতি, তা প্রমাণ হয়ে গেল বুধবারই। দলের সভাপতি শিবলাল যাদব দল থেকে বহিষ্কার করলেন অখিলেশ-ঘনিষ্ঠ তেজেন্দ্রনারায়ণ তথা পবন পাণ্ডেকে এবং মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করতে। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব অবশ্য এ সংক্রান্ত কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে দেখা করেন রাজ্যপাল রাম নায়েকের সঙ্গে।
রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর এই হঠাৎ সাক্ষাৎ দলের অন্তর্কলহ নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেয়। আগামী ৩ নভেম্বর ‘বিকাশ রথযাত্রা’ বের করা নিয়ে দলের বিধায়ক এবং প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালানোর ফাঁকেই অখিলেশ বেরিয়ে যান এবং রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে আসেন। রাজভবন সূত্রে জানা যায়, রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি রাজ্যপালের কাছে ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
যাদবকুলের লড়াই ইতিমধ্যে আছড়ে পড়েছে লক্ষ্ণৌর রাস্তাতেও। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব এবং শিবপাল যাদব সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়েছে পোস্টার-যুদ্ধ। সেই পোস্টার-যুদ্ধে অখিলেশ গোষ্ঠীর অন্যতম টার্গেট অমর সিং। পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থকরা একদা বড়বাজারের যুব কংগ্রেস নেতা অমর সিং-কেই যাদব পরিবারের মধ্যে বিরোধ বাধানোর জন্য দায়ী করেছে। রাজ্যের রাজধানীর সুলতানপুর রোডে পড়েছে এই পোস্টার। দলীয় সভাতেও অমর সিং-এর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অখিলেশ। তলে তলে বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁত রেখে ঘর ভাঙানোর কাজে নেমেছেন অমর সিং, এই অভিযোগ অখিলেশ শিবিরের।
ছবি: টুইটার
Khaboronline
সাড়ম্বর উৎসাহ-উদ্দীপনায় বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব
ফারুক ভূঁইয়া রবিন, ঢাকা ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। পলাশির মোড় থেকে ঢাকেশ্বরী অবধি পুরো রাস্তা সেজেছে আলোকসজ্জায়। মানুষের ঢলের কারণে রামকৃষ্ণ মিশনে দেবীর কাছেই ঘেঁষতে পারছেন না অনেক ভক্ত। তাই অনেক দূর থেকেই দেবীকে ভক্তি করেই তৃপ্ত হতে হচ্ছে কাউকে কাউকে। মানুষের দীর্ঘ সারি মিশনের প্রধান ফটক পেরিয়ে মিশে গেছে বড় রাস্তায়। […]
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। পলাশির মোড় থেকে ঢাকেশ্বরী অবধি পুরো রাস্তা সেজেছে আলোকসজ্জায়। মানুষের ঢলের কারণে রামকৃষ্ণ মিশনে দেবীর কাছেই ঘেঁষতে পারছেন না অনেক ভক্ত। তাই অনেক দূর থেকেই দেবীকে ভক্তি করেই তৃপ্ত হতে হচ্ছে কাউকে কাউকে। মানুষের দীর্ঘ সারি মিশনের প্রধান ফটক পেরিয়ে মিশে গেছে বড় রাস্তায়। বনানী প্যান্ডেলের সাংস্কৃতিক আয়োজন রূপ নিয়েছে মানুষের মিলনমেলায়। কলাবাগান মাঠের পুরোটা জুড়েই যেন বসেছে মেলা! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ হলেও লোকে লোকারণ্য। পুরানো ঢাকা সেজেছে চোখধাঁধানো সাজসজ্জায়।
ঢাকায় শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী-পেশা-বয়স নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, এ সব তারই খণ্ড খণ্ড চিত্র। শহর জুড়েই পাড়া-মহল্লায় সাজো সাজো রব, জাঁকজমক পরিবেশে চলছে নানা আয়োজন। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে দেবী মন্ত্রণা, মন্ত্রপাঠ, আরাধনা, সর্বজনীন সুখ-সম্প্রীতি-শান্তির প্রার্থনা আর হাজারো ভক্তের জয়ধ্বনি। শঙ্খ-ঢাক আর উলুধ্বনিতে মুখর প্রতিটি মণ্ডপ।
শারদীয় দুর্গোৎসব বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় আচার হলেও বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে তা সর্বজনীন রূপ নিয়েছে। দল বেঁধে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন মণ্ডপে মণ্ডপে, প্রসাদ নিচ্ছেন, হাসিমুখে বরণ করে নিচ্ছেন উৎসব-আমেজ। ভাগাভাগি করছেন আনন্দ। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে মানুষের অধিক ভিড়ে উৎসবে যোগ হয় ভিন্ন আমেজ।
শারদ উৎসব ঘিরে শুধু ঢাকাতেই নয়, পুরো বাংলাদেশ জুড়েই থাকে অভিন্ন উৎসব আমেজ। এ বছর সারা দেশে ২৯ হাজার ৩৯৫টির মতো মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগের বারের তুলনায় বেড়েছে ৩২৪টি। এ বার বাংলাদেশে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে নোয়াখালির চৌমুহনীতে ৭১ ফুট দীর্ঘ প্রতিমা। মুক্তিযুদ্ধের বছর ১৯৭১ সালকে স্মরণে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এ প্রতিমা। আর এ প্রতিমা দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে সেখানে জড়ো হচ্ছেন লোকজন। এ ছাড়া বরাবরের মতো এ বারও দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপকে ঘিরে যুক্ত হয়েছে মেলার আবহ। মণ্ডপগুলোতে খাবারের পাশাপাশি নানা সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। মূলত শারদীয় উৎসবে ঢাকা শহরের চেয়েও বেশি প্রাণবন্ত রূপ নেয় গ্রামবাংলা।
এ বারের দুর্গাপূজাকে ঘিরে বেশ তৎপর আইনশৃঙ্খলাবাহিনীও। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে জন্য বরাবরের মতো এ বারও মণ্ডপে মণ্ডপে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মোতায়েন করা হয়েছে র্যাব-পুলিশ। আবার নিরাপত্তার অতি কড়াকড়ির কারণে উৎসবে যাতে কোনো খামতি না পড়ে কিংবা নির্মল আনন্দের স্বাভাবিকতায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটায়, সে দিকেও নজর রাখা হয়েছে। বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে হাসিমুখে মেনে নিয়ে দর্শনার্থীরাও মনে করেন, এতে নষ্ট হচ্ছে না উৎসব আমেজ।
এ বারের পূজা উৎসবের নবমীর দিন ছিল গুলশানে জঙ্গি হামলার ১০০ দিন। অথচ নজিরবিহীন এই হামলার প্রেক্ষাপটে এখন আর মানুষের মনে নেই কোনো শঙ্কা। কারণ গুলশান হামলার পরই জঙ্গি নিধনে জোর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এমনকি শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমীর দিন শনিবার ঢাকার আশেপাশে গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সাভারে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে নিহত হয় ১২ জঙ্গি।
আর শারদীয় দুর্গোৎসবে বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ঊর্ধ্ব কর্মকর্তারা জোর গলায় বলছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। বরং যারা জঙ্গিবাদে জড়িত, মানুষ হত্যা করে, তারাই এ দেশে সংখ্যালঘু।
এমনকি মহাসপ্তমীর দিনে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির ও রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাফ জানিয়ে দেন, ধর্মীয় ব্যানারে কোনো ধরনের উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না। বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের জন্য, এ কথা উল্লেখ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রেখে যার যার ধর্মীয় অনুশাসনের প্রচার বাড়াতে ধর্মীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
হাজার বছরের আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে উদার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদিও এই সম্প্রীতির গায়ে আঁচড় লেগেছে বারবার। কিন্তু মানুষই আবার দূর করেছে এই বাধা। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’— যে কোনো ধর্মীয় উৎসবেই বাঙালি মেতেছে এই মন্ত্রে। এ বারের শারদীয় দুর্গোৎসবেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই উৎসবও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের অভিন্ন অবস্থানের বার্তা দিয়েছে।
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত এই শারদীয় দুর্গোৎসব হয়ে থাকুক সৌন্দর্য, সৌহার্দ্য আর উদারতার অনন্য উদাহরণ। অসহিষ্ণুতার আঁধার দূর করে আনন্দ-আধার আর উদারতার অভিমুখে এগিয়ে যাওয়ার পথে শারদীয় দুর্গাৎসব হোক সেতুবন্ধন — প্রতিমা বিসর্জনের আগের রাতে এই লেখাটি লেখার সময় কায়মনে ছিল এই প্রার্থনা।
-
প্রযুক্তি2 days ago
মাত্র ২২ টাকায় জিও ফোন প্রিপেড ডেটা ভাউচার! জানুন বিস্তারিত
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার1 day ago
কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির আওতায় মাদ্রাসায় পড়ানো হবে গীতা, রামায়ণ, বেদ-সহ অন্যান্য বিষয়
-
দেশ1 day ago
স্বামীর ‘দাসী’ নন স্ত্রী, এক সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা যাবে না, বলল সুপ্রিম কোর্ট
-
রাজ্য3 days ago
৯২ আসনে লড়বে কংগ্রেস, জানালেন অধীর, আব্বাসকে নিয়ে জট অব্যাহত