পরিবেশ দূষণ আর রাসায়নিক মিশ্রিত কসমেটিকস ব্যবহারের ফলে চুলের দফারফা। ইদানীং দেখছেন প্রচুর পরিমাণে চুল উঠছে। চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় ও সমস্যার সমাধানে হাত বাড়ান পুষ্টির পাওয়ারহাউজ বলে পরিচিত সূর্যমুখীর বীজ বা সানফ্লাওয়ার সিড অয়েলের দিকে।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, ৪০% ভারতীয় মহিলা ৪০ বছর হতে না হতেই চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। ৬০.৮% মহিলা চুল পাতলা হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। ৩০ অনূর্ধ্ব ৬৩% যুবতীও চুলের সমস্যায় নাজেহাল।
সূর্যমুখীর বীজ থেকে তৈরি তেল চুলে পুষ্টি জোগায় আর চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে। সূর্যমুখীর বীজে ফ্যাট, ফাইবার, খনিজ পদার্থের পাশাপাশি ভিটামিন ই, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, তামা রয়েছে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন সূর্যমুখীর বীজ
চুলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। তার পর চুলে কয়েক ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল ও সানফ্লাওয়ার সিড অয়েল মিশিয়ে লাগান। এ ছাড়াও কয়েক ফোঁটা ভিটামিন ই অয়েল ও সূর্যমুখীর বীজ থেকে তৈরি তেল মিশিয়ে চুলের গোড়া ও গোটা চুলে ভালো করে লাগালে চুল ফেটে যাওয়া ও পড়ে যাওয়া আটকায়। চুল উজ্জ্বল হয়। রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দূর হয়।
এ ছাড়াও কয়েকটি সূর্যমুখীর বীজ রোদে শুকিয়ে নিন। তার পর তা মিক্সিতে অল্প জল দিয়ে মধু ও অ্যাভোকাডোর টুকরো মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগান। ২০-৩০ মিনিট রেখে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার লাগাবেন।
চুলের ক্ষেত্রে কতটা উপকারী সূর্যমুখীর বীজ থেকে তৈরি তেল
(১) সূর্যমুখীর বীজ থেকে তৈরি তেলে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা চুলকে আর্দ্রতা জোগায়। ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামত করে। চুলের টেক্সচার উন্নত করে। রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দূর হয়, চুল নরম ও মসৃণ হয়। পরিবেশ দূষণ থেকে চুলকে রক্ষা করে।
(২) সূর্যমুখীর বীজে আছে গামা-লিনোলেনিক অ্যাসিড যা চুলের গোড়া থেকে কন্ডিশনিং করে। চুলের বৃদ্ধি ঘটায়।
(৩) সূর্যমুখীর বীজে আছে ভিটামিন বি৬ ও বি৭ যা চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে, চুল পড়া আটকায়। চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া, রঙ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া আটকায়।
আর কী কী উপকার করে সূর্যমুখীর বীজ
(১) স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে বলে সূর্যমুখীর বীজ হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। ভিটামিন ই শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বলে তা ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের অক্সিডেশন প্রক্রিয়া আটকায়। ধমনীর দেওয়াল শক্ত হওয়া ও মোটা হওয়া আটকায়।
(২) ফ্যাট ও প্রোটিন সমৃদ্ধ সূর্যমুখীর বীজে আছে লোহা যা এনার্জি বাড়ায়। ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ সূর্যমুখীর বীজ হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ সূর্যমুখীর বীজ খাইখাই ভাব কমায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।