শীত একদিকে যেমন বড়োই রুক্ষ, শুষ্ক তার আবহাওয়া তেমনই শীত আবার সবুজ রঙা বিভিন্ন শাকসবজির সমাহার। আসলে প্রকৃতি হল সবচেয়ে বড়ো ডাক্তার। বিভিন্ন আবহাওয়ায় সুস্থ থাকতে ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে প্রকৃতি তার সম্ভারে নানান রকম শাকসবজি আর ফলমূল রেখেছে।
শীতে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে কোন কোন শাকসবজি খাবেন
(১) গাজর: ভিটামিন এ-তে সমৃদ্ধ গাজর শীতকালে শুষ্ক ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী। শুষ্ক, স্পর্শকাতর ত্বকে উজ্জ্বল আর মসৃণ করতে গাজরের জুড়ি মেলা ভার। অল্প গরম জলে গাজর কুড়িয়ে নিয়ে ফোটানোর পর তা ফেস মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করা যায়। অল্প কিছুক্ষণ মুখে, হাতে, পায়ে লাগিয়ে রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।
(২) বাঁধাকপি: বাঁধাকপিতে আছে প্রচুর পরিমাণে দরকারি খনিজ পদার্থ যা ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী। বেশি পরিমাণে সালফার থাকে বলে বাঁধাকপির রোগ প্রশমনের গুণ আছে। ভিটামিন আছে বলে ত্বকের জন্য বাঁধাকপি ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী।
(৩) পালং শাক: ভিটামিন এ, সি, ই আর কে ও বিভিন্ন রকমের খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ পালং শাক ত্বকের জন্য খুব উপকারী। খাবার হিসাবেও খাওয়া যায় পালং শাক আবার ত্বকে সরাসরি লাগালেও যায় পালং শাক। ২০ মিনিট মুখে মাস্ক হিসাবে পালং শাক বেটে লাগালে ব্রণর সমস্যা দূর হয়, কমে তৈলাক্ত ভাব।
(৪) লেটুসপাতা: শীতকালে প্রচুর লেটুসপাতা পাওয়া যায়। ভিটামিন এ, সি, ই, ফোলেট আর দস্তাতে ভরপুর লেটুসপাতা ত্বক আর চুলের জন্য খুব উপকারী। চুলের অকালক্বতা রোধ করে লেটুসপাতা। ত্বকে রক্ত চলাচল ভালো করে ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় লেটুসপাতা।
(৫) টমেটো: তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুব উপকারী টমেটো। টমেটো লাইকোপিন নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে ত্বকের অকালে বুড়িয়ে যাওয়া আটকায়। টমেটো পাল্প বা জ্যুস তৈলাক্ত ভাব কমায়। ত্বক কালো হয়ে যাওয়া আটকায় টমেটো।

শীতে সুস্থ থাকতে যে ৫টি ফল অবশ্যই খাবেন
(১) কুল: এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে কাজ করে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য খুবই ভালো, কারণ তারা খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ে।
(২) আমলকি: নিজের পুষ্টিগুণের জন্য পরিচিত আমলকি। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। শীতের ফলের রাজা আমলকি অনেক ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এ ছাড়াও চুল পড়া, হজম ও চোখের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।
(৩) জলপাই: শীতকালে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় জলপাই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় জলপাই। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। সর্দি, জ্বর ইত্যাদি দূরে থাকে জলপাইয়ের জন্য। হাঁপানি এবং বাতের ব্যথা উপশমে জলপাই কার্যকর। এই ফলের তেল বা অলিভ অয়েল হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী।
(৪) তেঁতুল: তেঁতুল যেমন কাঁচা-পাকা খাওয়া যায়, তেমনই অন্য কোনো খাবারে যোগ করেও খাওয়া যায়। ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, তেঁতুল হজমে সহায়তা করে।
(৫) কমলা: সুস্বাদু কমলালেবু হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া সর্দি-কাশি দূর করার আশ্চর্যজনক ক্ষমতায় থাকায় শীতের সময় এই ফল অনেকেরই প্রিয়। ফ্লু এবং জ্বরের সময় কমলা খাওয়া ভালো। এতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম। রক্তশূন্যতা ও জিভের ঘা সারানোর পাশাপাশি মানসিক অবসাদ দূর করে কমলা।