কার্টুন চরিত্র পপেইর প্রিয় খাবার কলমি শাক। ইংরেজিতে নাম ওয়াটার স্পিনাচ। হিন্দিতে বলা হয় পানি পালং। ‘Convovulaceae’ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত কলমি শাকের বৈজ্ঞানিক নাম Ipomoea aquatica Forsk।
ডায়েটারি ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, লোহা, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কলমি শাকে মেলে প্রচুর পরিমাণে জলও। ক্যালোরি আর ফ্যাট অত্যন্ত কম কলমি শাকে। ১০০ গ্রাম কলমি শাকে মেলে ১৯ ক্যালোরি শক্তি। ক্যারোটিন, লুটেইন, জ্যানথিন, ক্রিপ্টোজ্যানথিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এ ছাড়া মেলে অ্যাসকর্বিক অ্যাসিড।
আমাদের দৈনন্দিন যা ভিটামিন সি দরকার হয় তার ৯২% মেলে মাত্র ১০০ গ্রাম কলমি শাকে। দৈনিক চাহিদার চেয়ে ২১০% বেশি ভিটামিন এ পাওয়া যায় ১০০ গ্রাম কলমি শাকে। শরীরের মেটাবলিক ফাংশনের জন্য দরকারি রাইবোফ্ল্যাভিন, নায়াসিন, ভিটামিন বি-৬, ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায় কলমি শাকে। এ ছাড়া পাওয়া যায় লোহা, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস।
কলমি শাকের মুখরোচক পদ।
কতটা উপকারী কলমি শাক
প্রচুর পরিমাণে লোহা থাকায় অ্যানেমিয়া বা রক্তাল্পতার সমস্যা দূর করতে পারে কলমি শাক। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ডায়েটে নিয়মিত লোহা থাকা প্রয়োজন। হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য দরকার হয় লোহা।
কলমি শাকে মেলে ১৩ রকমের গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই ক্যানসার রোধ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কলমি শাক। গবেষণায় দেখা গেছে, কোলোন, রেক্টাল, পাকস্থলী, ত্বক ও ব্রেস্ট ক্যানসার আটকাতে পারে এই শাক। কলমি শাকে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যালস দূর করতে পারে।
কলমি শাকে মেলে প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটেনয়েড, ভিটামিন এ ও লুটেইন যা চোখের স্বাস্থ্যর জন্য খুবই দরকারি। কলমি শাক গ্লুটাথিয়নের মাত্রা বাড়ায় যা ছানি পড়া আটকায়।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় কলমি শাক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুণ কার্যকর। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। নিয়মিত কলমি শাক খেলে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
আলসার, মেনস্ট্রুয়াল যন্ত্রণা, দাঁতের ব্যথা, প্রস্রাবের সমস্যা, নাক দিয়ে রক্ত পড়ার মতো সমস্যা কাটাতে সক্ষম কলমি শাক।
জন্ডিস আর লিভারের রোগ প্রতিরোধ করে কলমি শাক। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় খাবার হজম করতে সাহায্য করে আর কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর করে।