কাঁচা আম আর মুগ বা বিউলির ডাল দিয়ে তৈরি হয় গরমকালে দারুণ উপাদেয় টকের ডাল।
টকের ডাল তৈরি হয় কা্প্রচা আম দিয়ে। প্রচণ্ড গরমে ডিহাইড্রেশন হয়ে গিয়ে শরীরে সোডিয়াম-সহ অন্য খনিজ পদার্থের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ঘামের মাধ্যমে সোডিয়াম ক্লোরাইড আর লোহার মতো
গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ বেরিয়ে যাওয়া আটকাতে কাঁচা আম অপরিহার্য খাবার। প্রবল গরমের ক্ষতিকারক প্রভাব কমায় শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে আম। এছাড়াও প্রবল গরমে পেটের গোলমাল হয়। পেটের গোলমাল ছাড়াও কাঁচা আম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, বুকজ্বালা, বদহজম, বমিবমি ভাব, দুর্বলতা দূর হয়। ডায়েরিয়া, ক্রনিক ডিসপেপসিয়া রোগ সারাতে সাহায্য করে কাঁচা আম। বিভিন্ন রকমের গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট ভালো রাখে কাঁচা আম। কারণ আমে পাওয়া যায় ভিটামিন বি৩ নায়াসিন আর ফাইবার যা কোলেস্টেরল মাত্রা কমায়, হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে। হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। নায়াসিন থাকে বলে আমকে হার্টের বন্ধু বলা হয়।
ম্যাগ্নিফেরিন মানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড আর ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। পলিফেনলস ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। শরীর থেকে টক্সিন বের করে লিভারের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে কাঁচা আম। লিভারের উৎসেচক বাইল অ্যাসিডের নিঃসারণ বাড়ায়। নায়াসিনের সঙ্গে ভিটামিন এ, সি, বি৬, কে, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, লোহা, ম্যাগনেসিয়ামও শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ, সি ও দরকারি খনিজ পদার্থ আছে বলে কাঁচা আম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এছাড়াও টকের ডাল তৈরি হয় মুগডাল দিয়ে। মুগডালে পাওয়া যায় প্রোটিন, ফাইবার, ২১২ ক্যালরি। খুব কম ফ্যাট থাকে। ভিটামিন এ, বি, সি, ই, লোহা, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ফোলেট, ফসফরাস, ফোলেট, তামা, দস্তা, সেলেনিয়াম, ফাইবার, পটাসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ আছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে লো ফ্যাট মুগডালে প্রোটিন ও ফাইবার থাকায় খাইখাই ভাব কমায়, ওজন কমাতে সাহায্য করে। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল মাত্রা কমায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ভিটামিন বি১, সি আর ভিটামিন বি৬ আছে বলে মুগডাল সংক্রমক ব্যাধি, আর ক্যানসারও দূর করে। মুগডালে মেলে প্রচুর উদ্ভিদজাত প্রোটিন আর অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফেনলিক অ্যাসিড, ক্যাফেইক অ্যাসিড, ফ্ল্যাভোনয়েডস আর সিনামিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা হৃদরোগের আশঙ্কা, ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। ফুসফুস আর অন্ত্রে টিউমার হওয়া আটকায়। নিয়মিত মুগডাল খেলে হৃদযন্ত্রে রক্ত চলাচল ঠিক রাখে। ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল মাত্রা কমায় আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।