মৈত্রী মজুমদার
চোখের পলক পড়তে পড়তেই নতুন বছরের তৃতীয় মাসটিও অর্ধেক পেরিয়ে গেল। বসন্তের আবডাল পেরিয়ে এসে পড়ছে গ্রীষ্ম। কয়েক দিন পরেই রঙের উৎসব। চলুন, বাইরের উৎসব শুরু হওয়ার আগেই সাজিয়ে ফেলা যাক নিজের অন্দর মহল….
বাড়ি সাজাতে আমরা কে না ভালবাসি ? একটু মন দিয়ে নিজের আশেপাশে চোখ ঘোরান, দেখবেন আপনার মনন আর সৃজনশীলতায় পুরনো জিনিস এ-দিক ও-দিক করেই দিব্যি সাজিয়ে নিতে পারছেন নিজের ভালো-বাসাটাকে।
বাড়ির সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা মানে রান্নাঘর দিয়েই শুরু করা যাক আমাদের যাত্রা —
১। নিজের সাধের রান্নাঘরটির ভেতরে এক বার ভালো করে নজর ঘোরান, ভালো করে ভেবে নিন,কী কী জিনিস সব সময় দরকার আর কী কী জিনিস কিছুটা কম দরকারি। এ বার যতটা সম্ভব জিনিসপত্র পাল্লা থাকা স্টোরেজ ক্যাবিনেটে ঢুকিয়ে ফেলুন। অতি প্রয়োজনীয় জিনিস রাখুন ঠিক কাউন্টার টপের নীচে আর ওভেনের ওপরের তাকগুলোতে, বাকি কম দরকারি জিনিসগুলো একদম নীচের আর একদম ওপরের তাকগুলোতে সাজিয়ে নিলেই হবে।
২। যদি একান্তই স্থানাভাবে আপনার রান্নার জিনিসপত্র বাইরে রাখতে হয়, তা হলে কম খরচে পাওয়া যায় এ রকম রঙিন তাক যোগ করতে পারেন আপনার রান্নাঘরে। দেখবেন আপনার সেই চেনা রান্নাঘর কেমন নতুন রূপে সেজে উঠবে।
৩। রান্নাঘরে যোগ করুন রঙ — একঘেয়ে একরঙা জায়গায় কাজ করতে করতে নিশ্চয় ক্লান্ত লাগছে ? তা হলে অল্প খরচে পালটে ফেলতে পারেন মশলা বা চালডাল রাখার পাত্র অথবা কফি খাওয়ার মগটা। বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে আজকাল এগুলো খুবই সহজলভ্য। এক বা একাধিক রঙের কুকওয়্যার এক সঙ্গে সাজিয়ে রাখলে ঝলমল করে উঠবে আপনার কাজের পরিবেশ।
৪। রান্নাঘরে রাখুন এক গোছা তাজা ফুল। আপনার পুরনো হয়ে যাওয়া কোনও কেটলি বা জগ, ফুলদানি হিসেবে সুন্দর কাজ করবে। অথবা ছোট্ট টবে পাতাবাহার। রান্নাঘরে সতেজ অনুভূতি আনতে এরা কিন্তু অনবদ্য। ফুল রাখলে তা দু-তিন দিন অন্তর পালটাতে কিন্তু ভুলবেন না। টবে গাছ হলে নজর রাখুন তার সতেজতার দিকে।
৫। যদি রান্নাঘরের জানলায় এক ফালি জায়গা থাকে, সেখানে সাজিয়ে ফেলতে পারেন আপনার কিচেন গার্ডেন। টবে গজিয়ে ওঠা গোলগোল টম্যাটো বা লাল সবুজ কাঁচা লঙ্কা আপনার রান্নাঘরের সতেজতার সঙ্গে সঙ্গে আপনার রোজকার মেনুতেও যোগ করবে নতুন মাত্রা।
৬। স্থানাভাবের জন্য আজকাল ফ্ল্যাট বাড়িতে অনেক ক্ষেত্রেই রান্নাঘরটি আর আলাদা জায়গা পায় না, তাকে জায়গা ভাগ করে নিতে হয় খাওয়ার ঘর বা বসার ঘরের সাথে। যাকে আমরা বলি, ওপেন কিচেন। এই সব ক্ষেত্রে পুরো জায়গাটা একটা সামঞ্জস্য রেখে সাজাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনি পালটে ফেলতে পারেন ঘরের পর্দা, সোফার কুশন কভার, ডাইনিং টেবিল-এর কভার। আর কিছু কিছু জায়গায় দেওয়ালে ঝুলিয়ে দিন কালারফুল ফটো ফ্রেম। ফ্রিজের গায়েও রঙবেরঙের ম্যাগনেট ডিসপ্লে ঘরে অন্য মাত্রা যোগ করতে সাহায্য করবে।
৭। ঋতু অনুযায়ী চার ধরনের অ্যাক্সেসরিজ দিয়ে পালটে পালটে সাজিয়ে নিন আপনার রান্নাঘর। তা হলে আপনার রান্নাঘর সর্বাদাই হয়ে থাকবে উৎসবমুখর। আর আপনিও মুক্তি পাবেন কাজের একঘেয়েমি থেকে। বাড়তি পাওনা হিসেবে আপনার রান্নার জিনিসপত্রে অনেক দিন ধরে রাখবে তাদের নতুনত্ব।
৮। সব শেষে বলি, সব কিছু করার আগে খেয়াল রাখুন রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতার দিকে। কারণ আপনার সঙ্গে সঙ্গে পোকামাকড়েরও কিন্তু প্রিয় জায়গা রান্নাঘর। তাই প্রতি দিন নিয়ম করে জলের পাইপলাইন, গ্যাসের পাইপ, ড্রেনের মুখ আর ডাস্টবিনটির যত্ন নিন।
তা হলে তৈরি তো আপনারা আসন্ন উৎসবমুখর দিনগুলোকে আপনার রান্নাঘরে আমন্ত্রণ জানাতে!
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।