খবরঅনলাইন ডেস্ক: ঘরের রঙের সঙ্গে ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে পর্দার রং। ঘরের ভেতরের সাজসজ্জা তখনই ভালো ভাবে ফুটে ওঠে যখন ঘরের দেওয়ালের রঙের সঙ্গে পর্দার রং হয় মানানসই। দেওয়ালের রঙের সঙ্গে ম্যাচিং করে পর্দা টাঙালে তবেই সৌন্দর্য খোলে। ঘরের সৌন্দর্যরক্ষা কিংবা গোপনীয়তারক্ষা, দু’টোর ক্ষেত্রেই পর্দার রঙের একটা ভূমিকা আছে। পর্দা যদি হয় ঘরের দেওয়ালের সঙ্গে মানানসই, আপনার সাজানোগোছানো স্বপ্নের সেই ঘরে আপনি কাটাতে পারেন শান্তির কিছু মুহূর্ত একদম নিজের মতো করে।
বাজারে হরেক রঙের পর্দার ভিড়ে, কোনটা যে আপনার ঘরের দেওয়ালে মানাবে, আর কোনটা দেখাবে বেমানান, এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন? বিষয়টা কিছুটা জটিল মনে হলেও অতটা জটিল কিন্তু নয়! শুধু একটু হিসাব মিলিয়ে নিলেই কিন্তু দেওয়ালে পর্দা সাজবে একদম মনের মতো করে!
বসার ঘর

খেয়াল রাখতে হবে আসবাবপত্রের ভিড়ে ঘরটি যেন অন্ধকার না দেখায়। তাই হালকা রঙের পাতলা পর্দাই হবে এই ঘরের জন্য মানানসই। এ ক্ষেত্রে সাদা কিংবা অফ-হোয়াইট রঙের সিনথেটিক কাপড়ের পর্দা বেছে নেওয়া যেতে পারে। তবে দেওয়ালের রঙের সঙ্গে পর্দার রঙ যেন হুবহু মিলে না যায়, সেই বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে। ব্যবহার করতে পারেন বাহারি রঙের ক্রিস্টালের পর্দা।
শীতকালে একটু ভারী কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করলেও গরমে হালকা ফেব্রিকের পর্দা ব্যবহার করাই ভালো।
খাওয়ার ঘর
এই ঘরের দেওয়ালের জন্য উজ্জ্বল রঙের পর্দা বেছে নিতে পারেন। সাধারণত খাবার ঘরটি থাকে রান্নাঘরের পাশে। আর এই ঘরে যদি রোদের আনাগোনা বেশি থাকে, তবে শান্তিমতো খাওয়া যায়। তাই দেওয়ালের আকৃতি এবং রঙ বুঝে বাদামি, লালচে কমলা, মেরুন কিংবা চকোলেট রঙের প্রিন্টের পর্দাও কিন্তু খারাপ দেখাবে না।
শোয়ার ঘর
বাড়ির সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘর এটি। সারা দিনের ক্লান্তি যেন এক নিমিষেই চলে যায় শোয়ার ঘরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে। শোয়ার ঘরের দেয়ালে একটু ভারী পর্দাই ভালো, যে হেতু শোবার ঘর ব্যবহৃত হয় বিশ্রামের জন্য। তাই এ ঘরে দরকার প্রাইভেসিও। আলো তুলনামূলক কম এলে শোয়ার ঘরের শান্ত পরিবেশ বজায় থাকে, যা আপনাকে শান্তির ঘুম দিতে সাহায্য করবে। আর তাই শোয়ার ঘরের জন্য চাই কিছুটা ভারী, এবং সুতি কাপড়ের পর্দা। এক দিকে যেমন বাতাসের আনাগোনা চাই, তেমনই গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারটাও পাবে সমান গুরুত্ব। তাই হালকা গোলাপি, সবুজ, আকাশি কিংবা পিচ রঙ হতে পারে পর্দার জন্য পারফেক্ট।

বাচ্চাদের ঘর
বাচ্চাদের ঘরের দেওয়ালের জন্য পর্দা হওয়া চাই উজ্জ্বল রঙের। কার্টুন প্রিন্টেড পর্দা দেখে বাচ্চারা যেমন খুশি হয়ে যাবে, তেমনি শৈশবের এই সময়টাও হয়ে উঠবে আরও প্রাণবন্ত।
ডিজাইন ও কাপড়ের ধরন
পর্দা বাছাইয়ের আগে ঘরের আকার ও দেওয়ালের রঙের বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। ঘরের রঙের সঙ্গে যদি পর্দার রং বেমানান হয় তা হলে দেখতে মোটেও ভালো লাগবে না। ঘরের আকার, দেওয়ালের রং ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ঘরের জন্য পর্দা নির্বাচন করা প্রয়োজন। ঘরের দেওয়াল, ছাদ ও মেঝের রং, আসবাবপত্রের ডিজাইন এবং রঙের সঙ্গে মানিয়ে পর্দার রং বাছাই করা উচিত। পর্দার রঙের কারণে ঘরের আকার ছোটো বা বড়ো দেখায়।
পর্দা বানানোর সময় নানা ধরনের ডিজাইন যেমন পাওয়া যায়, তেমনি কাপড়ের ধরনেও থাকে ভিন্নতা। যদি ঘরে প্রচুর পরিমাণ রোদ প্রবেশ করে, সেখানে ভারী রঙের পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। এতে রোদের তাপে রং জ্বলে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। সুতির পাশাপাশি লিনেন, মখমল কিংবা সিল্কের পর্দা বাড়িতে এনে দেবে আভিজাত্য। দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য সিল্ক হতে পারে টেকসই, যা ঘরের সৌন্দর্যকেও বাড়াবে। পর্দার নকশার ক্ষেত্রে এমব্রয়ডারি বরাবরই জনপ্রিয়। হাল সময়ে এই তালিকায় স্থান পেয়েছে হ্যান্ডপেন্ট, ব্লক, বাটিক, প্রিন্ট ইত্যাদি। তবে একরঙা পর্দা বরাবরই সমাদৃত অনেকের কাছে। পর্দার নানা ধরনের নকশার পাশাপাশি ব্যবহার করতে পারেন ফিতা, পুঁতির মালা, কাঠের বোতাম, বাড়তি কাপড়, লেস ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: ঘর রঙ করার কথা ভাবছেন? মাথায় রাখুন এই পরামর্শগুলি