শৌভিক পাল, কলকাতা: সম্প্রতি সাবর্ণ সংগ্রহশালার প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত হল। এই উপলক্ষে সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার পরিষদ বড়িশার কালীকিঙ্কর ঠাকুরদালানে আয়োজন করেছিল ‘মূর্চ্ছনা’ শীর্ষক বার্ষিক রাগসংগীত বৈঠক অনুষ্ঠিত হল ।
প্রথমে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিখ্যাত অভিনেতা অরুণ বন্দোপাধ্যায় ও সাবর্ণ সংগ্রহশালার কোষাধ্যক্ষ ননীগোপাল রায়চৌধুরী।
দিনটির বিশেষত্ব নিয়ে সাবর্ণ সংগ্রহশালার মুখ্য আধিকারিক দেবর্ষি রায়চৌধুরী বলেন, ২০০৫ সালের ৫ জুন এই পরিবারের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাবর্ণ সংগ্রহশালার প্রতিষ্ঠা হয়। ১৬০৮ থেকে ১৭৫৭, এই ১৫০ বছর ধরে কলকাতার বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন স্থান পেয়েছে এই পারিবারিক সংগ্রহশালায়। কলকাতার বিবর্তনের বহু ইতিহাস রয়েছে এখানে। কালীক্ষেত্র থেকে সতীর দেহাংশ আবিষ্কার ও নতুন কালীঘাট মন্দির প্রতিষ্ঠা, কলকাতার প্রাচীন দুর্গাপুজো, রথযাত্রা, দোল উৎসব, চণ্ডী আরাধনা, অন্নপূর্ণা মন্দির ও কুলদেবী মাতা ভুবনেশ্বরীর পূজা এই পরিবারের এক অনন্য ইতিহাস ও ঐতিহ্য। জোব চার্নক যে কলকাতার প্রতিষ্ঠাতা নন আর ২৪ আগস্ট যে কলকাতার জন্মদিন নয় তা এই পরিবার পরিষদের কাছ থেকেই প্রথম জন সমক্ষে উঠে এসেছে। ২০০৩ সালের ১৬ মে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এত দিন অগোচরে থাকা এই ইতিহাস। সারদা মায়ের চিতাভষ্ম, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির দাদুর ব্যবহৃত আসবাবপত্র রয়েছে এই সংগ্রহশালায়।
রামপ্রসাদ সেনের হস্তাক্ষর করা কবুলিয়তপত্র, অসংখ্য প্রাচীন মানচিত্র, জমিদারির দলিল দস্তাবেজ, কলকাতার সুতানুটি গোবিন্দপুরে প্রজাস্বত্ব হস্তান্তের দুষ্প্রাপ্য দলিলের কপি পাওয়া যায় এই সংগ্রহশালায়। এ ছাড়াও এই পরিবারের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, বহু মুদ্রা, স্ট্যাম্প, হুকা সংরক্ষিত রয়েছে। বাংলা সংগীতের জাদুকর প্রণব রায়ের বিশেষ গ্যালারিও স্থান পেয়েছে এখানে। বৃ্হস্পতিবার বাদে অন্য সব দিন সকাল ১০-১২ টা ও বিকেল ৫-৭ টা পযন্ত সাধারণ দর্শকদের জন্য খোলা থাকে এই সংগ্রহশালা বলে জানান দেবর্ষিবাবু।
সংগ্রহশালার নিদর্শন মানুষের কাছে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতি দৃষ্টি থাকুক আমাদের – এই বলে আশা রাখেন দেবর্ষি রায়চৌধুরী।।
ওড়িশি নৃত্য পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে মঙ্গলধ্বনির বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন নীপমঞ্জুরি মুখোপাধ্যায়।
