বিশ্বশ্রী মনোহর আইচ প্রয়াত, খবর অনলাইনের শ্রদ্ধার্ঘ্য

0

প্রয়াত বিশ্বশ্রী মনোহর আইচ। রবিবার দুপুরে বাগুইহাটির বাসভবনে এই প্রবাদপ্রতিম শরীরচর্চাবিদের জীবনাবসান হল। সঙ্গে সঙ্গেই একটা যুগের অবসান হল, যে যুগটার শুরু হয়েছিল আজ থেকে এক শতাব্দীরও বেশি আগে। ১৯১২ সালের ১৭ মার্চ। বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার ধামাতি গ্রামে। জন্ম নিয়েছিলেন খ্যাতনামা ব্যায়ামবীর বিশ্বশ্রী মনোহর আইচ। কুমিল্লার সেই শিশু যে এক দিন ভুবন আলো করবেন কে ভেবে ছিল সে দিন?

এর পর ক্রমশ বড়ো হয়ে ওঠা। বিখ্যাত বিষ্ণু ঘোষের আখড়ায় তাঁর দেহচর্চায় হাতেখড়ি। বিশ্বের প্রথম বডিবিল্ডার হিসেবে বিশ্বশ্রী সম্মান লাভ। মাত্র ৪ ফুট ১১ ইঞ্চির এই মানুষটি ১৯৫০ সালে হারকিউলিস কনটেস্ট জেতেন। ‘পকেট হারকিউলিস’ নামে তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। ১৯৫১ সালে  মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। পরের বছর তিনি মিস্টার ইউনিভার্স খেতাব পান।

মনোহর আইচ ছিলেন দেশপ্রেমিক। এক বার এক ব্রিটিশ আধিকারিক ঔপনিবেশিক অত্যাচারের স্বপক্ষে কথা বলায় তিনি তাঁকে চড় মারেন। এই ‘অপরাধে’ মনোহর আইচকে কারাবরণ করতে হয়েছিল।

দুই শতাব্দীর এই প্রাচীন মানুষটি ছিলেন চিরতরুণ। সুস্থ থাকার উপায় যে ব্যায়াম নিজের জীবনে তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। আর সুস্থ শরীরের জন্য দরকার স্বল্পাহার ও স্বাস্থ্যকর আহার, এটাকেই বীজমন্ত্র বলে মানতেন তিনি। জীবনে বহু ওঠা-পড়ার মধ্যে দিয়ে গেছেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও মনের ওপর কখনও দুশ্চিন্তাকে ভর করতে দেননি। এই শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি নিজের বাড়িতে মাল্টিজিম তৈরি করেন। তৈরি করেন একটা ক্লাবও।

কিন্তু কালের গতি গ্রাস করতে চায় সব কিছুকে। তাই সময়ের স্রোত বেয়ে ১০৪ বছরের এই যুবক পুরুষকেও ঢলে পড়তে হল মৃত্যুর কোলে। বার্ধক্যজনিত রোগের কামড়ে পূর্ণচ্ছেদ পড়ল এই প্রবাদপ্রতিম মানুষটির জীবনে।

মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি। দান করে গিয়েছেন তাঁর দেহও। আর তাঁর সেই শেষ ইচ্ছাকে সম্মান জানাতেই রবিবারই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তাঁর নশ্বর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।

dailyhunt

খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.