খবর অনলাইন ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বাংলাদেশ। তারই ফলশ্রুতিতে ক্রমাগত আসছে মৃত্যুর খবর। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে দেশে জুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে। তাকে কেন্দ্র করেই বাধছে সংঘর্ষ। এক দিকে বিক্ষোভকারীরা, অন্যদিকে শাসকদল আওয়ামি লিগের সমর্থকরা। এই সংঘর্ষের জেরে রবিবার বাংলাদেশে প্রাণ গিয়েহে ৯৮ জনের। এঁদের মধ্যে ১৪ জন পুলিশও হয়েছেন। আহত হয়েছেন শত শত।
দেশের এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা কেটে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের অগ্রণী সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’র রিপোর্ট অনুযায়ী রবিবার দিনভর সংঘর্ষে নরসিংদীতে ৬ জন, ফেনীতে ৮ জন, লক্ষ্মীপুরে ৮ জন, সিরাজগঞ্জে ১৩ পুলিশ-সহ মোট ২২ জন, কিশোরগঞ্জে ৫ জন, রাজধানী ঢাকায় ১১ জন, বগুড়ায় ৫ জন, মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ৪ জন, ভোলায় ১ জন, রংপুরে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, সিলেটে ৫ জন, কুমিল্লায় পুলিশ সদস্য-সহ ৩ জন, শেরপুরে ২ জন, জয়পুরহাটে ২ জন, হবিগঞ্জে ১ জন, ঢাকার কেরাণীগঞ্জে ১ জন, সাভারে ১ জন, কক্সবাজারে ১ জন, বরিশালে ১ জন ও গাজীপুরের শ্রীপুরে ১ জন-সহ মোট ৯৮ জন নিহত হয়েছেন।
দেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ লাগে। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে যে অসহযোগ আন্দোলন চলছে তার বিরোধিতায় সরব হয় আওয়ামি লিগ, ছাত্র লিগ এবং যুব লিগের সমর্থকরা। সেখান থেকেই বাঁধে সংঘর্ষ। সেই সংঘর্ষের জেরে প্রাণ গিয়েছে ১৪ জন পুলিশকর্মীর। এঁদের মধ্যে ১৩ জন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানা এলাকায় এবং ১ জন কুমিল্লার এলিয়টগঞ্জ এলাকায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান
নৈরাজ্যবাদীদের শক্ত হাতে দমন করার জন্য দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যারা এখন সহিংসতা চালাচ্ছে তারা কেউই ছাত্র নয়, তারা সন্ত্রাসী।’ প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার এ কথা জানান।
আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম কী বলেছেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামি লিগ দেশে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি করতে চায়। তাঁর কথায়, “আমাদের উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ও গন্তব্য পরিষ্কার। বিজয় এবং একমাত্র বিজয়ই আমাদের লক্ষ্য। আমরা এখনও সময় দিচ্ছি। সরকার যদি এখনও সহিংসতা চালিয়ে যায়, আমরা কিন্তু গণভবনের দিকে তাকিয়ে আছি। সরকারকে ঠিক করতে হবে, এখনও সহিংসতা চালাবে, রক্তপাত চালাবে, নাকি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে পদত্যাগ করবে।”
ভারতীয় হাইকমিশনের পরামর্শ
বাংলাদেশে যেসব ভারতীয় নাগরিক বাস করেন তাঁদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশন। শিলেটস্থ ভারতীয় হাইকমিশন ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বলছে, “ছাত্র-সহ যেসব ভারতীয় নাগরিক শিলেটস্থ ভারতের সহকারী হাইকমিশনের আওতায় বাস করেন সবসময় অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতে এবং সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জামাত ও ইসলামি ছাত্রশিবির, পড়ুয়া হত্যার বিচার চেয়ে পথে অভিনয়শিল্পীরা