বাংলাদেশে নারীদের ফুটবল খেলার স্বাধীনতা চ্যালেঞ্জের মুখে। বুধবার জয়পুরহাট ও রংপুরের জেলা দলগুলোর মধ্যে নির্ধারিত একটি ম্যাচ ইসলামপন্থীদের প্রবল প্রতিবাদের কারণে বাতিল করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একদল ধর্মীয় কট্টরপন্থী—যাদের মধ্যে মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকও ছিলেন—মাঠের দিকে মিছিল করে যান এবং নারীদের ফুটবল খেলার বিরোধিতা করেন।
টুর্নামেন্টের আয়োজক সামিউল হাসান এমন বলেন, “আমাদের এলাকায় ইসলামপন্থীরা জড়ো হয়ে মাঠের দিকে এগিয়ে আসছিল। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে আমরা বাধ্য হয়ে ম্যাচ বাতিল করি।”
নারীদের খেলাধুলার বিরুদ্ধে ধর্মীয় আপত্তি
বিক্ষোভকারীরা নারীদের ফুটবলকে “ইসলামবিরোধী” বলে দাবি করেছেন।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “মেয়েদের ফুটবল খেলা ইসলামের বিরোধী। আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব হলো এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ করা।”
এমনই একটি ঘটনা মঙ্গলবার দিনাজপুরেও ঘটেছিল, যেখানে আরেকটি নারী ফুটবল ম্যাচ ইসলামপন্থীদের বিক্ষোভের জেরে স্থগিত করা হয়।
দিনাজপুরের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন ইসলামী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পাল্টা-প্রতিবাদকারীদের সংঘর্ষ বাধে। ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ফলে চারজন আহত হন।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রতিক্রিয়া
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (BFF) কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
BFF-এর মিডিয়া ম্যানেজার সদমান সাকিব বলেন, “ফুটবল সবার জন্য, এবং নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের পূর্ণ অধিকার রয়েছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষত ” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে।
মহিলা ক্রীড়ার ভবিষ্যৎ কী?
এই ঘটনার পর বাংলাদেশে নারীদের খেলাধুলার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকার ও ক্রীড়া সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
📌 আপনার মতামত কী? নারীদের খেলাধুলার স্বাধীনতা কি সংকটে? কমেন্টে জানান।