অবৈধ পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকাডুবি, বাংলাদেশি-সহ উদ্ধার ২২

0

ঋদি হক: ঢাকা

ভূমধ্যসাগরে (Mediterranean Sea) মৃত্যুর হাতছানিকে তোয়াক্কা না করে আগামী সোনালি দিনের স্বপ্ন গড়তে দালালের হাতে তুলে দিতে হয় লাখ লাখ টাকা। অনাহার, অর্ধাহারে রাতের আঁধারে পথ চলতে হয় হিংস্র জানোয়ারদের পাশ কাটিয়ে। রাতের পর রাত বনেবাদাড়ে কাটিয়ে লিবিয়া (Libya) থেকে নৌকাযোগে দুঃসাহসিক যাত্রা ইউরোপের (Europe) পথে। জঙ্গল থেকে সাগর, সাগর থেকে সাগরতীর – সর্বত্র মৃত্যু-সহ হাজারো নিগ্রহ সম্বল করেই তাঁদের যাত্রা। এমনি যাত্রায় শ’ শ’ তরুণের স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেছে ভূমধ্যসাগরের অথৈ জলরাশিতে। কোনো দিন তারা মায়ের বুকে ফিরে আসবে না।

আবার ঘটল সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ বারের ঠিকানাও ভূমধ্যসাগর। এ ঘটনায় বাংলাদেশি-সহ (Bangladeshi) ২২ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও নিখোঁজ রয়েছেন ১৩ জন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজতে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। 

জানা গেছে, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি (Tripoli) থেকে ইউরোপে যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে বিভিন্ন দেশের ৩৫ জোন আরোহী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে যায়। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার বিকেলের। নৌকাডুবির প্রত্যক্ষদর্শী লিবিয়ার জেলেরা।

তাঁরা বাংলাদেশি নাগরিক-সহ ২২ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন। তাঁদের মধ্যে মিশর, সিরিয়া, সোমালিয়া, ঘানা-সহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। বুধবার ত্রিপোলির পূর্বাঞ্চলের জিলিতেন শহর থেকে নৌকাটি যাত্রা করে। উদ্ধারকাজ চালানোর সময় সিরীয় নারী ও পুরুষ-সহ তিনজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। লিবিয়ার উপকূলরক্ষীরা জানিয়েছেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজতে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে। নৌকাটিতে ঠিক কত জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন, তা জানা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত বছর ১২ মে লিবিয়া থেকে নৌকাযোগে উত্তাল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গেয়ে নৌকা ডুবে ৩৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। অবৈধ ভাবে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাটিতে থাকা অন্তত ৬৫ জন অভিবাসী প্রাণ হারান। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন বাংলাদেশি। সংখ্যা ৩৭ জন। তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট এই খবর নিশ্চিত করে।

সে সময় তিউনিসিয়া উপকূলে ওই নৌকাডুবির পর জীবিত ডজনখানেক মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। যাঁদের মধ্যে বেলাল আহমেদ নামের এক বাংলাদেশি তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।

একজন একজন করে কী ভাবে তাঁরা ডুবে যাচ্ছিলেন তার বর্ণনা দিয়েছিলেন বেলাল। ৩০ বছরের বেলাল সেই নৌকাডুবির ঘটনায় দুই স্বজনকে হারান।  ইতালি অভিমুখী নৌকাটিতে ৫১ জন বাংলাদেশি ও তিনজন মিশরীয় ছাড়াও মরক্কো ও চাদের কয়েক জন ছিলেন। বাকিরা ছিলেন আফ্রিকান। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একটি শিশু-সহ মোট ১৪ জন বাংলাদেশি।

২০১১ সালে লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর সেখান থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লিবীয় ও অন্যান্য দেশের বাসিন্দা সাগরপথে ইউরোপে যাওয়ার জন্য ভূমধ্যসাগরকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ১৭ হাজার অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছে। এই যাত্রাপথে প্রায় ৫০০ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।

খবর অনলাইনে আরও পড়তে পারেন

বিতর্কিত কৃষি বিলের বিরোধিতায় বিজেপি-সঙ্গ ত্যাগ করল অকালি দল

dailyhunt

খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

বিজ্ঞাপন