৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশে ভাস্কর্য, ম্যুরাল, এবং স্মৃতিস্তম্ভের উপর আক্রমণ নেমে এসেছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১,৪৯৪টি ভাস্কর্য, রিলিফ ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং উপড়ে ফেলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব ভাস্কর্যের অধিকাংশই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা বিভিন্ন জেলায় সরেজমিনে গিয়ে ৫ থেকে ১৪ আগস্টের মধ্যে এসব ভাঙচুরের ঘটনা নথিভুক্ত করেছেন। ঢাকা মহানগরীসহ ঢাকা বিভাগে ২৭৩টি, চট্টগ্রামে ২০৪টি, রাজশাহীতে ১৬৬টি, খুলনায় ৪৭৯টি, বরিশালে ১০০টি, রংপুরে ১২৯টি, সিলেটে ৪৯টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৯২টি ভাস্কর্য এবং ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে।
বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যগুলো ছিল আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য। ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরাল ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। পলাশীর মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে নির্মিত ‘স্বাধীনতাসংগ্রাম’ ভাস্কর্যটির শতাধিক অংশের মধ্যে অক্ষত রয়েছে মাত্র পাঁচটি।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উপর ‘যথেষ্ট নজরই’ দেয়নি ভারতীয়রা, বললেন নারায়ণমূর্তি
বিশ্ববিদ্যালয়, আদালত, এবং শিশু একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাস্কর্যগুলোও আক্রমণের শিকার হয়েছে। শিশু একাডেমির চত্বরে স্থাপিত ‘দুরন্ত’ ভাস্কর্যটি ৮ আগস্ট পুড়ে যায়। সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙা হয়েছে দুই পর্বে, যা নিয়ে ২০১৬ সাল থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
ময়মনসিংহের শশীলজের ভেনাসের ভাস্কর্যটিও এই আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ভাস্কর্যের মাথার অংশ চুরি হয়ে গেছে, যা অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত ছিল। অন্যদিকে মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্সে অবস্থিত ৩০৩টি ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান নাসিমুল খবির জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভাস্কর্যগুলোর তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সংস্কারের কাজ শুরু হবে। তবে, এত বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের পরে সবগুলো ভাস্কর্য সংস্কার করা সম্ভব হবে না বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।