ঋদি হক: ঢাকা
করোনাকালীন মহাদুর্যোগে ভারত (India) থেকে স্থলপথে পণ্য আসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাতে বাংলাদেশের (Bangladesh) হাজারো ব্যবসায়ী অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েন। এই আপৎকালীন অবস্থায় রেলপথে পণ্য পরিবহণের প্রস্তাব দেয় ভারত সরকার। এই প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকার সন্তোষ প্রকাশ করে এবং স্বাগত জানায়। এর পর মে মাসের শেষ নাগাদ পেঁয়াজ নিয়ে একটি পণ্যবাহী ট্রেন আসে গেদে হয়ে দর্শনায়। তার পর জুন মাসে পুরোদমে পণ্য পরিবহণ করে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। তাতে কেবল জুন মাসেই বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে আসে ১০৩টি ট্রেন।
আরও পড়ুন: এক মাসে ভারত-বাংলাদেশ পণ্যবাহী শতাধিক ট্রেন চলেছে
এই অবস্থায় রেলপথে পণ্য-পরিবহণের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উভয় দেশের সরকার একমত হয়। সিদ্ধান্ত হয় উভয় দেশের মধ্যে স্থায়ী ভাবে পার্সেল ট্রেন (parcel train) চলাচল করবে। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোমবার ভারত থেকে পণ্য নিয়ে প্রথম ট্রেনটি বাংলাদেশের অন্যতম স্থলবন্দর বেনাপোলে (Benapole) পৌঁছোয়। ভারতীয় রেলের এই বিশেষ পার্সেল এক্সপ্রেসটি (এসপিই, SPE) অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরের রেড্ডিপালেম থেকে পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসে। বেনাপলে পৌঁছোতে ট্রেনটিকে ১৩৭২ কিলোমিটারের মতো পথ অতিক্রম করতে হয়েছে।
জানা গেছে, ৩৮৪ মেট্রিক টন শুকনো লঙ্কা নিয়ে ১৬টি ভ্যানযুক্ত বিশেষ পার্সেল ট্রেনটি বাংলাদেশে আসে। দু’ দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণ সেবা চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে দারুণ আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। দু’ দেশের মধ্যে পার্সেল ট্রেন চলাচল করলে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানিও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, উভয় দেশের মধ্যে পণ্যবাহী বা পার্সেল ট্রেন চলাচল করলে ঝক্কি-ঝামেলামুক্ত পণ্য-পরিবহণ নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া সময় এবং অর্থ, দুটোরই সাশ্রয় হবে। শুধু তা-ই নয়, পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রও দ্রুত প্রসারিত হবে। স্থানীয় বাজারে কমবে পণ্যের মূল্যও।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, পার্সেল ট্রেন চলাচল করলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে। কারণ, বাংলাদেশের অনেক পণ্য সময়মতো ভারতে রফতানিতে বিলম্ব ঘটে। রেলপথে পণ্য-পরিবহণ নিয়মিত হলে সড়কপথের উপর নির্ভরতা অনেকটাই কমবে বলে মনে করেন তাঁরা।