ঋদি হক: ঢাকা
এটা মানবমিছিল বা সম্প্রীতির মিছিল বলা যায়। দু’ বছর পর মানুষের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস স্মরণ করিয়ে দেয় উৎসব-প্রিয় বাঙালির কথা। সর্ব ধর্মের এমন মিলনমেলার পথ বেয়েই তো কল্যাণ আসে। রথযাত্রা মানবকল্যাণেরই উৎসব।
দু’ বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহাসিক রথযাত্রা। ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা স্বামীবাগ লোকারণ্য। বলা যায় মানবমিছিল। গত কয়েক দিন যাবৎ রথযাত্রার আয়োজনকে ঘিরে ইসকন মন্দিরে ব্রহ্মচারীরা ব্যস্ততায় কাটান। দু’ বছর পর রথযাত্রায় বিপুল সংখ্যক ভক্তের সমাগম ঘটে। সনাতনধর্মের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করে।
বিকালে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি সকল ধর্মের মানুষের কল্যাণ কামনা করেন।

শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় রথযাত্রায় মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আসা চিত্রা দেবী জানালেন, টানা দু’ বছর পর স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসাটাই অন্য রকম মনে হচ্ছে।
সকাল থেকেই দলে দলে নানা বয়সের মানুষের সমাগম হতে থাকে ইসকন মন্দিরে। দু’ বছর পর রাজপথে রথের চাকা গড়ায়। এর আগে ইসকন মন্দিরে হোমযজ্ঞ ঘিরে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না।
অলিতে গতিতে ভক্তের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরাতন ঢাকা।

চারুচন্দ্র দাস প্রভুর কথায়
ঢাকা ইসকন-এর সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী প্রভু বলেন, বিশ্বশান্তি কামনায় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রায় ১৪৫টি হোমযজ্ঞের আয়োজন করা হয়। দু’ বছর পর প্রভুর দয়ায় রথযাত্রার আয়োজন করতে পেরেছেন তাঁরা। এ বারে ভক্তের আগমনও প্রচুর হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
ভক্তের কথায়
স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে কথা হচ্ছিল চিত্রা দেবীর সঙ্গে। বললেন, “দু’ বছর পর মহাআয়োজনে ফিরতে পেরেছি, এটা যে কত স্বস্তির, কতটা আনন্দের সে কথা বর্ণনা করা যাবে। চোখ বুঝে কেবল প্রশান্তি অনুভব করা।” চিত্রা দেবীর কথায়, “এই একটি আয়োজন লাখো মানুষের জীবনীশক্তি ফিরিয়ে দেয়।”

পুরীর পরেই ঢাকা
উচ্চ শব্দে বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ ধ্বনি দিতে দিতে এগিয়ে যায় ভক্তদের শোভাযাত্রা। রাজপথে লুটিয়ে পড়ে ভক্তের দল। সর্ব ধর্মের হাজারো মানুষ রাজপথের দু’ পাশে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রীশ্রীজগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব।
ভারতীয় উপমহাদেশে পুরীর পরেই সব চেয়ে বড়ো রথযাত্রা হয় ঢাকায়। রথের শোভাযাত্রা প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। আগামী ৮ জুলাই ফিরতি রথযাত্রার তথা উলটোরথের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
আরও পড়তে পারেন
দিল্লি-মুম্বইয়ে সংক্রমণ কমার ইঙ্গিত, কিছুদিনের মধ্যে সেই পথ অনুসরণ করতে পারে কলকাতাও