বাংলাদেশ
‘মুক্তমনা’ অভিজিৎ রায় হত্যায় ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারী অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে অভিজিতকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ঢাকা: ‘মুক্তমনা’ ব্লগার অভিজিৎ রায়কে খুনের মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল আদালত। মঙ্গলবার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহম্মদ মজিবুর রহমান এই সাজা শুনিয়েছেন। এক জন আসামীর যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি হলেন বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, জঙ্গিনেতা আকরাম হোসেন ওরফে আবীর ওরফে আদনান, আবু সিদ্দিকি সোহেল ওরফে সাকিব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন এবং আরফাত রহমান ওরফে সিয়াম।
এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা পেয়েছেন শফিউর রহমান ফারাবী। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে অভিজিৎকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হামলায় গুরুতর আহত হন অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ।
অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় রাজধানীর শাহবাগ থানা হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন।
২০১৯ সালে মামলাটির তদন্তের পর আদালতে মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনা মোট ১২ জন জড়িত। এদের মধ্যে শফিউর রহমান ফারাবী হত্যাকাণ্ডে মদত জোগান। অভিযুক্তদের মধ্যে মুকুল রানা পুলিশের সঙ্গে ‘গুলিযুদ্ধে’ মারা গিয়েছেন।
সেই অভিযোগের উপর ভিত্তি করে মঙ্গলবার সাজা শোনাল ঢাকার আদালত।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করে, স্বাধীন ভাবে লেখালিখি ও মতপ্রকাশের জন্য অভিজিৎকে খুন করা হয়েছে। এই হত্যার স্পষ্ট উদ্দেশ্য হল নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে নিরুৎসাহিত করা।
ছবি : সৌজন্যে প্রথম আলো
বাংলাদেশ
ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে হত্যাকাণ্ডের ১২তম বার্ষিকী পালন
হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যু বহাল রাখা হয়। ৮ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চার জনকে খালাস দেওয়া হয়।

ঋদি হক: ঢাকা
ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দফতরে বর্বরোচিত ঘটনায় নিহত সেনাসদস্যদের ১২তম শাহাদত বার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হল। ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা-সহ ৭৪ জন নিহত হন।
বৃহস্পতিবার বনানীতে শহিদদের সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাঁদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতির পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আবু আশরাফ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামালউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।
পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা শহিদ সেনাসদস্যদের সম্মানে স্যালুট প্রদান করেন। পরে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
এ দিন সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় সকল স্তরের সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
অপর দিকে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দফতর-সহ সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় খতমে কোরআন, বিজিবি’র সকল মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে প্রার্থনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এ ছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিজিবি’র সকল স্থাপনায় বিজিবির পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং বিজিবি’র সকল সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করবেন।
এ উপলক্ষ্যে শুক্রবার বাদ জুম্মা পিলখানায় বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং বিজিবি হাসপাতাল মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এম.পি। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, শহিদ ব্যক্তিবর্গের নিকটাত্মীয়, পিলখানায় কর্মরত সকল অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রার্থনাসভায় অংশগ্রহণ করবেন।
বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে মামলা
পিলখানা হত্যা মামলার বিচার শেষ হলেও ১২ বছরেও বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচার-কার্যক্রম শেষ হয়নি। মামলাটির বিচার চলতি বছরে শেষ হয়ে যাবে বলে রাষ্ট্রপক্ষ আশা প্রকাশ করেছে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর নিম্ন আদালতে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করার পর ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল নিষ্পত্তি হয়। এ ঘটনার বিস্ফোরক আইনে করা মামলা এখনও বিচারাধীন।
রাজধানীর বকশিবাজারের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে বিষ্ফোরক দ্রব্যের মামলার কার্যক্রম চলছে। এ মামলায় ১ হাজার ১৬৪ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৮৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ ২৩ ফেব্রুয়ারি মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। ওই দিন পাঁচ জন সাক্ষ্য দেন।
আগামী ২৩ ও ২৪ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে। মামলা সম্পর্কে প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, একই ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার বিচার নিম্ন আদালতের পর হাইকোর্টেও নিষ্পত্তি হয়েছে। বিস্ফোরক আইনের মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। ১৮৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে চলতি বছরেই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ করে আদালত রায় ঘোষণা করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর হত্যা মামলার রায়ে ১৫২ জন বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৭৮ জনকে খালাস দেওয়া হয়। রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যু বহাল রাখা হয়। ৮ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও চার জনকে খালাস দেওয়া হয়। এ ছাড়াও একজনের মৃত্যু হয়। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টে আপিল চলার সময় কারাগারে থাকা দু’জন মারা যান। খালাস পান ১২ আসামি।
দেশ
বঙ্গবন্ধুর ফাঁসি আটকাতে ৩০টি দেশে ছুটে গেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, ভারতের এই ঋণ মনে রেখেছে বাংলাদেশ: তথ্যমন্ত্রী
এক আলোচনাচক্রে বাংলাদেশ ও ভারতের সাধারণ নাগরিকদের সম্পর্কের উপর জোর দেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার।

ঋদি হক: ঢাকা
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কযুক্ত সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যত্নবান থাকতে হবে, যাতে দু’ দেশের সম্পর্কে অহেতুক বিরূপ প্রভাব না পড়ে। বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী (Bangladesh Information Minister) তথা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ (Dr. Hasan Mahmud) সংবাদমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ফাঁসি আটকাতে ৩০টি দেশে ছুটে বেড়িয়েছেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ভারতের নজির গড়া এই ঋণ মনে রেখেছে বাংলাদেশ।
ভারতীয় হাই কমিশনার (Indian High Commissioner) বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী (Vikram Doraiswami) দু’ দেশের নাগরিকদের সম্পর্কের ওপর জোর দিয়ে বলেন, পরস্পরের সন্দেহ ও সংশয় দূরে রেখে এক সঙ্গে চলার মধ্য দিয়ে দুই দেশই সমৃদ্ধির পথে এগোতে পারবে।
মঙ্গলবার ঢাকায় ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমক্যাব, IMCAB) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক এক আলোচনাচক্রে এ সব কথা বলেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ও ভারতীয় হাইকমিশনার।
বাংলাদেশ ও ভারতের সাধারণ নাগরিকদের সম্পর্কের উপর জোর দেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার। তিনি বলেন, “আমাদের সম্পর্ক টেকসই হওয়ার মূল নীতি ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে আছে। বাংলাদেশ-ভারতের মানুষের আকাঙ্ক্ষার জায়গা এক। এখন আমাদের উচিত সন্দেহ ও সংশয় দূর করে কাজ করা। কারণ সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কোনো জায়গা এখানে নেই।”
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন এলে বিএনপি ও কিছু দল ভারত-বিরোধিতাকে সামনে রেখে প্রচারণা চালায়। যাদের সহযোগিতা ছাড়া এ দেশের স্বাধীনতা সম্ভব ছিল না, তাদের বিরোধিতা করে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বৈরিতা করে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ কথা তারা বুঝেও না বোঝার ভান করে। আবার বুঝলেও রাজনীতির স্বার্থে অপরাজনীতি করেন। আলোচনাচক্রে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনাচক্রে আর যাঁরা ছিলেন
বাংলাদেশে কর্মরত ভারতের সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সংগঠন ‘ইমক্যাব’-এর সভাপতি বাসুদেব ধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাচক্রে অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন তথ্য উপদেষ্টা ও ‘অবজারভার’ সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রথম নারী সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ।
বিষয়বস্তুর ওপর মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব। আলোচনায় অংশ নেন ‘ইমক্যাব’-এর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিদুল হাসান খোকন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাই কমিশনের দ্বিতীয় সচিব (ভিসা ও জনকূটনীতি) দীপ্তি আলংঘট, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভুঁইয়া ও ওমর ফারুক, ডিক্যাব সভাপতি পান্থ রহমান, ‘ইমক্যাব’-এর কোষাধ্যক্ষ মাছুম বিল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আফরোজ জামান, নির্বাহী সদস্য আমিনুল হক ভুইয়া ও লায়েকুজ্জামান।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এমন কোনো খবর প্রচার করা উচিত নয়, যাতে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার কারণে ১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে মৈত্রী চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির কারণেই আমরা ভারতের কাছ থেকে ছিটমহলের অধিকার ফিরে পেয়েছি। অথচ এই চুক্তি নিয়ে একটি মহল বিরূপ প্রচারণা চালিয়েছিল। তবে তাদের অপপ্রচারে দেশের সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেনি।
মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণকে ভারতের সহযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত করতে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকার কথা স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের জেল থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে ইন্দিরা গান্ধী বিশ্বব্যাপী জনমত গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে যাতে ফাঁসি দেওয়া না হয়, সে জন্য ৩০টি দেশে তিনি ছুটে গিয়েছেন।
ভারতীয় হাই কমিশনার আরও বলেন
ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, “পৃথিবী খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা যত দ্রুত এগোতে পারব, তত দ্রুতই আমরা এক সঙ্গে সমৃদ্ধি লাভ করতে পারব।”
দুই দেশের সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করে দোরাইস্বামী বলেন, “আমি দেখেছি, সহযোগিতা বাড়লে উন্নতিও বাড়ে। সুতরাং আমার জন্য যেটা ভালো নয়, সেটা আপনার জন্য যেটা ভালো নয়। আমরা যদি এটা অনুসরণ করি, তা হলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের আদর্শ অনুসরণ করা হবে।”
অন্যরা কী বললেন
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের যেমন বৃদ্ধি হয়েছে, তেমনি সে সম্পর্ক ধ্বংসেরও চেষ্টা হয়েছে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট করেছেন। প্রতিবেশীদের মধ্যে নানা সমস্যা থাকে। সে সমস্যা আন্তরিকতার সঙ্গে সমাধান করতে হবে।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক এখন সব চেয়ে উচ্চ মাত্রায়। তবে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে আরও কাজ করতে হবে। কিছু বিষয় এখনও অমীমাংসিত। তিস্তা চুক্তি নিয়ে হতাশা রয়েছে। সীমান্তে হত্যা হলে দু’ দেশের সম্পর্ক অম্ল-মধুর হয়ে যায়।
মনজরুল আহসান বুলবুল বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু প্রথম ভারত সফরে গিয়ে ইন্দিয়া গান্ধীকে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে তাঁর সৈন্যদের প্রত্যাহার করেছিলেন। এটি ছিল কূটনৈতিক ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের প্রমাণ। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের শ্রদ্ধার ও সম্মানের সম্পর্ক। এটিই আমাদের পথরেখা। এগিয়ে যাওয়ার জায়গা।
আরও পড়ুন: পরপারে পাড়ি জমালেন লেখক-সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ
বাংলাদেশ
পরপারে পাড়ি জমালেন লেখক-সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ
চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘সুপ্রভাত বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন তিনি।

ঋদি হক: ঢাকা
সন্ধ্যাতেই খবরটি আছড়ে পড়ে। তখন সবেমাত্র সন্ধ্যার সাঁঝবাতি জ্বালিয়ে আলো ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। সেই সময়ে চলে গেলেন প্রখ্যাত লেখক-সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ (Syed Abul Maksud)। তাঁর মৃত্যুতে বৃদ্ধিজীবী মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে তাঁর।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এ দিন বিকেলে তিনি বাড়িতেই অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁকে দ্রুত রাজধানীর পান্থপথের স্কোয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছোনোর পর চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন তিনি আগেই মারা গিয়েছেন। সন্ধ্যা সোয়া ৭টা নাগাদ তাঁকে মৃত ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘সুপ্রভাত বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন তিনি। সৈয়দ আবুল মকসুদ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ঋষিজ পুরস্কার-সহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ-গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, ‘বাঙালির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার’, ‘পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ’, ‘রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন’, ‘ঢাকায় বুদ্ধদেব বসু’, যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা’, ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য’, ‘মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন, কর্মকাণ্ড রাজনীতি ও দর্শন’, ‘গান্ধী, নেহরু ও নোয়াখালী’ প্রভৃতি।
সৈয়দ আবুল মকসুদের প্রথম কবিতা সংকলন ‘বিকেলবেলা’ প্রকাশিত হয় ১৯৮১ সালে। দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে। তাঁর রচিত ভ্রমণকাহিনির মধ্যে রয়েছে ‘জার্মানির জার্নাল’, ‘পারস্যের পত্রাবলি’ ইত্যাদি।
১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের এলাচিপুরে সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও সালেহা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেওয়া আবুল মকসুদ ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেন। পরে তিনি তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন।
১৯৬৪ সালে এম আনিসুজ্জামান সম্পাদিত সাপ্তাহিক ‘নবযুগ’ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে সৈয়দ আবুল মকসুদ কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বার্তা সংস্থায় যোগ দেন তিনি। ২০০৮ সালের ২ মার্চ বার্তা সংস্থার সম্পাদকীয় বিভাগের চাকরি ছেড়ে দিলেও জাতীয় দৈনিকগুলোতে সমাজ, রাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে কলাম লেখা চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি।
জীবনের শেষ পর্যন্ত সৃজনশীলতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সক্রিয় ছিলেন তিনি।
-
রাজ্য2 days ago
ব্রিগেড সমাবেশ: দরকারে ‘শান্তিনিকেতন’ বাড়ি নিলাম করে প্রতারিত মানুষের টাকা ফেরত, হুঁশিয়ারি মহম্মদ সেলিমের
-
রাজ্য2 days ago
পশ্চিমবঙ্গে ফিরতে পারে তৃণমূল সরকার, কী বলছে সমীক্ষা
-
ফুটবল2 days ago
পাঁচ গোল করেও ওড়িশার কাছে ছয় গোলের মালা পরল ইস্টবেঙ্গল
-
রাজ্য2 days ago
কলকাতায় তেজস্বী যাদব, হতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ