বাংলাদেশ
নিউ ইয়র্কে মোদী-হাসিনা বৈঠকে উঠে এল এনআরসি প্রসঙ্গ

ওয়েবডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনীর বৈঠকে উঠে এল ভারতের বহুচর্চিত নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি প্রসঙ্গ। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭৪তম সাধারণ সভার ফাঁকে ওই বৈঠক আয়োজিত হয় গত শুক্রবার।
গত শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন মোদী। ওই দিনই লোত্তে নিউ ইয়র্ক প্যালেস হোটেলে মুখোমুখি হন মোদী-হাসিনা।
ওই বৈঠকের পর বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বৈঠকটি ছিল আন্তরিকতায় ভরপুর এবং খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে। তিনি বলেন, ওই বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে তিস্তা-সহ অন্যান্য নদীর জলবণ্টন এবং এনআরসি প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয়ও উঠে আসে আলোচনার তালিকায়।
মোদীর কাছে এনআরসি নিয়ে হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সামনে এনআরসি নিয়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রত্যুত্তরে মোদী তাঁকে বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সুসম্পর্কের কথা মাথায় রেখেই এনআরসি অথবা জলবণ্টনের মতো বিষয়গুলি নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মোদীর কথায়, “এনআরসি ও জলবণ্টনের মতো ইস্যুগুলোকে আমরা সহজভাবে নিতে পারি। কারণ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে”।
ডেইলি স্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, হাসিনার উদ্বেগের অবসান ঘটাতে মোদী বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন। এটা নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
[ আরও পড়ুন: বাংলায় এনআরসি-আতঙ্ক! কে ‘গুজব’ ছড়াচ্ছে আর কে ‘শান্ত’ থাকার পরামর্শ দিচ্ছে? ]
ওই বৈঠকে বাংলাদেশের তরফে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মহম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান।
দেশ
বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতেই মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের সম্ভাবনা
২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতুর কাজ শেষ হয়েছে, এখন কেবল উদ্বোধনের পালা। সেই প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন রামগড় ও সাবরুমবাসী।

ঋদি হক, রামগড়, খাগড়াছড়ি থেকে:
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ পালনে ব্যাপক আয়োজন চলছে বাংলাদেশে। সঙ্গে রয়েছে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালন। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এবং পরিবেশ অনুকূল থাকলে বাংলাদেশের মহোৎসবে শামিল হওয়ার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ বিশ্বনেতাদের।
মুজিববর্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নানামুখী প্রকল্প ও কানেক্টিভিটি চলমান রয়েছে। দেশটির বিজয় দিবসের রেশ ধরে ১৭ ডিসেম্বর শুরু হয় চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পণ্যবাহী রেলচলাচল। ৫৫ বছর পর। আসছে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে চালু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-শিলিগুড়ি যাত্রীবাহী ট্রেন। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতে একের পর এক রেলপথ, জলপথ, সড়কপথ চালু হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের ফেণী নদীর ওপরে নির্মিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী-১ সেতুটির উদ্বোধনের ঘণ্টায় বেজে যেতে পারে মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তীতেই।
মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ
মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ। এখন রংতুলির শেষ আঁচড় পড়ছে। বাংলাদেশের রামগড় পৌরসভার মহামুনি প্রান্ত থেকে ত্রিপুরার সাব্রুমের আনন্দপাড়া যেন আগলে রেখেছে মৈত্রী সেতুকে। অর্থনৈতিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে এই সেতুটির মাধ্যমে লালসবুজ ও তেরঙা পতাকার সম্মিলন ঘটতে যাচ্ছে মুজিববর্ষেই।
বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় তথা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালন উৎসবেই বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ দ্বারোদঘাটনের সম্ভাবনার ইঙ্গিত মেলে। মুজিববর্ষেই বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্কের আওতায় চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। চালু হয়েছে বাংলাদেশের দাউদকান্দি-ত্রিপুরার সোনামুড়া জলপথ। উত্তরের পথে মেঘনার বুক চিরে অসমের করিমগঞ্জে লালসবুজ-গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে পণ্যবাহী জলযান গিয়েছে। চলতি বছরেই আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের কাজ সম্পন্ন হবে। জোরকদমে এগিয়ে চলছে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেপথের কাজ। যেটি সরাসরি অসমের মহিষাসনের সঙ্গে যুক্ত হবে।
ভারত বাংলাদেশের পারস্পরিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে এ বার সেতুবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছে রামগড়-সাবরুম মৈত্রী সেতু। বাংলাদেশের পাঁজরঘেষা উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যটির নাম ত্রিপুরা। অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকা রাজ্যটির সঙ্গে চলতি বছরেই চালু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু। উভয় দেশের প্রাধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সেতুর উদ্বোধন করবেন। এ নিয়ে ঊভয়দেশের উচ্চ পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গিয়েছে।
রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কী বলেন
রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্বপ্রদীপ কুমার কারবারী ‘খবর অনলাইন’কে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব থাকায় পণ্যবাহী লরি ত্রিপুরায় পৌঁছাতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৫ ঘন্টা। এই সাশ্রয়ী পণ্যপরিবহনের সুযোগ ভোগ করবে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর সাধারণ বাসিন্দা। পাশাপাশি দু’ দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রসারও ঘটবে। সুগম হবে দু’দেশের আর্থসামাজিক সম্পর্ক। সেতুটি ঘিরে এরই মধ্যে ত্রিপুরার সাবরুম এলাকায় গড়ে ওঠছে অর্থনৈতিক জোন। সেতুটির ৮০ শতাংশ পড়েছে বাংলাদেশ প্রান্তে।
বিশ্বপ্রদীপবাবু আরও জানালেন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম গড়ে উঠতে যাচ্ছে অর্থনৈতিক হাব হিসেবে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, বে-টার্মিনাল, মেরিন ড্রাইভ মহাসড়ক, এ সব গড়ে ওঠার সুবিধাভোগী হবে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো। কারণ এখান থেকে দিনে দিনে পণ্য পরিবাহিত হতে পারবে রাজ্যগুলোতে। তাতে ভারতের পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলোর অর্থনৈতিক সুবিধা হবে। পাশাপাশি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর সিঙ্গাপুর থেকে কাছে হওয়ায় তা ব্যবহার করতে পারবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও অন্য রাজ্যগুলো। অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে শেখ হাসিনার হাত ধরেই।
বিশ্বপ্রদীপবাবু জানান, পদ্মাসেতু হওয়ার ফলে বাংলাদেশের মংলা বন্দর ব্যবহার করে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে পণ্যপরিবহনের ক্ষেত্র এখন অনেক সহজ হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা না হলে বাংলাদেশে কোনো দিন পদ্মাসেতু হত বলে মনে হয় না।
রামগড় পৌরসভার মেয়র কী বলেন
রামগড় পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, রামগড়ে মৈত্রীসেতু ঘিরে এখানে গড়ে উঠছে স্থলবন্দর। এতে করে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছোঁয়া লাগবে পাহাড়ে। আয় বাড়বে পৌরসভারও। কানেক্টিভিটি হচ্ছে সভ্যতার প্রতীক এ কথা উল্লেখ মেয়র বলেন, বাংলাদেশকে ব্যবহার করলে ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্যপরিবহন সাশ্রয়ী হবে। সব মিলিয়ে আগামী দিনে রামগড়কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যে পাখনা মেলবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ জন্য রামগড়বাসীর তরফে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানান।
সরেজমিন রামগড় ঘুরে দেখা গেল সেতুটি চালুর অপেক্ষায় দিন গুণছেন রামগড় তথা পাশ্ববর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ। সেতুকে ঘিরে সকলেই আবেগাপ্লুত। এরই মধ্যে গত ৬ জানুয়ারি জাপান উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) প্রতিনিধি দল মৈত্রী সেতুসহ সড়কে নির্মীয়মাণ সেতু-কালভার্ট পরিদর্শন করেন। এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর পরিদর্শন করে গেছেন ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার মো. জাবেদ হোসেন।
সেতু নির্মাণের দায়িত্বে এনএইচআইডিসিএল
ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস অ্যান্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানিশ চন্দ্র আগারভাগ ইনপাকন প্রাইভেট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে ৮২.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রামগড়ের মহামুনিতে ২৮৬ একর জমির ওপর ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪.৮০ মিটার প্রস্থের আন্তর্জাতিক মানের মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১২টি পিলার সংবলিত সেতুটির বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ করা হয়েছে আটটি এবং ভারতের অংশে চারটি পিলার। যাতে স্প্যান রয়েছে ১১টি। এর বাংলাদেশ অংশে সাতটি ও ভারত অংশে চারটি। নদীর অংশে ৮০ মিটারের স্প্যান এবং নদীর দু’পাড়ের ৫০ মিটারের দুটিসহ মোট ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ তিনটি স্প্যানই হচ্ছে সেতুর মেন স্প্যান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে রামগড়-সাবরুম স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের মধ্যে ট্রানজিট সুবিধা, যাতায়াত ব্যবস্থা সহজতর করা এবং আমদানি-রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির শিলান্যাস করেন। ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে মৈত্রী সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতুর কাজ শেষ হয়েছে, এখন কেবল উদ্বোধনের পালা। সেই প্রতীক্ষায় দিন গুনছেন রামগড় ও সাবরুমবাসী।
দেশ
ভ্যাকসিন পেতে ভারতকে ৫০০ কোটি টাকার বেশি দিল বাংলাদেশ
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে এই টাকা জমা দেওয়া হয়েছে।

ঋদি হক: ঢাকা
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের (Serum Institute) কাছ থেকে করোনার টিকা (Covid Vaccine) আনতে ৫০০ কোটি ৯ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা অগ্রিম অর্থ দিয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে এই টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। প্রথম চালানের টিকা বাংলাদেশে পৌঁছোনোর পর ‘সেরাম ইনস্টিটিউট’ ব্যাংক থেকে এই টাকা তুলে নিতে পারবে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, বেক্সিমকোর (Beximco) টাকা রেখে দেওয়া হয়েছে। টিকা এলে তাদের টাকা পরিশোধ করা হবে। করোনার টিকার প্রতি ডোজের দাম পড়ছে পাঁচ ডলার। সেখান থেকে বেক্সিমকো এক ডলার পাবে। ভ্যাট, ট্যাক্স ও ট্রান্সফার ফ্রি সব বেক্সিমকো বহন করবে।
সম্প্রতি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার (Oxford-AstraZeneca) করোনা-টিকা আমদানি করা ও তা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। এই প্রথম করোনা ভাইরাসের কোনো টিকা বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদন পেল। এখন ভারত থেকে টিকার চালান পেলেই বড়ো আকারে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করবে সরকার।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা মিলে করোনাভাইরাসের (Coronavirus) যে টিকা তৈরি করেছে, তার উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গ যুক্ত রয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৩ কোটি ডোজ কেনার জন্য গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লক্ষ ডোজ টিকা পাঠাবে সেরাম ইনস্টিটিউট। ভারত থেকে টিকা এনে বাংলাদেশ সরকারকে সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
ভ্যাকসিন সম্পর্কে ভারতের হাই কমিশনারের বক্তব্য
ভারত থেকে ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশের কোনো বাধা নেই। ভ্যাকসিনের বিষয়ে অগ্রাধিকার পাবে বাংলাদেশ। আর ভ্যাকসিন রফতানির ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা নেই। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ সব কথা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। তিনি ফের জানালেন প্রতিবেশী হিসেবে ভ্যাকসিনে অগ্রাধিকার পাচ্ছে বাংলাদেশ।
দোরাইস্বামী বলেন, “ভারতের স্বাস্থ্য, বাণিজ্য ও ওষুধ মন্ত্রক, কেউই রফতানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেনি। আমরা বারবার বলছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের ভ্যাকসিন মানবতার জন্য ব্যবহৃত হবে। আমাদের অগ্রাধিকার ভারত এবং স্পষ্টতই আমাদের প্রতিবেশীরা। এর বাইরে আর কী আশ্বাস আমরা দিতে পারি?”
দোরাইস্বামী আরও বলেন, একাধিক সংস্থা ভ্যাকসিন উৎপাদন করে চলেছে। ভ্যাকসিন উৎপাদন প্রক্রিয়াটি এখনই শুরু হয়েছে। জরুরি ব্যবহারের জন্য ভ্যাকসিন তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটি একটি সংবেদনশীল বিষয় এবং এর কোনো স্টক রাখা যাবে না।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রফতানির ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ প্রয়োগ করা হয়নি। সংস্থাটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে টিকা তৈরি করে তারা ভারত সরকারকে তা দেবে এবং তাদের উৎপাদন ও বিতরণ সংক্রান্ত কাজে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। হাইকমিশনার জানিয়েছেন, “সবাই যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন চায়। কখন এই ভ্যাকসিন আসবে বা আমরা আমাদের দেশে কবে তা পাব তা আমি বলতে না পারলেও তবে এটা বলাই যায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরবরাহ পাবে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান কী বললেন
অপর দিকে ভারতীয় হাই কমিশনারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই কথা বললেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ দিন নিজের দফতরে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার ধুম্রজাল সৃষ্টি করে চলেছে বলে বিএনপির তরফে যুগ্মসচিব রিজভী আহমেদ যে অভিযোগ করেছেন, সে সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল, একটি ভুল সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে। সেটি সেরাম ইনস্টিটিউট ও ভারতের স্বাস্থ্যসচিব নিরসন করে ফেলেছেন। এর পরেও যাঁরা এ সব কথা বলেন, আসলে তারা জনগণের মনে প্রথম থেকেই যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন তা স্পষ্ট। তারই ধারাবাহিকতায় রিজভী আহমেদ-সহ বিএনপির নেতারা এ সব কথা বলছেন।
ভূমিমন্ত্রী যা বললেন
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “ভারত আমাদের অনেক ভালো প্রতিবেশী। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্ক একটা ডিফারেন্ট হাইটে চলে গেছে। সব সময় আমরা একে অপরের সহযোগিতা করতে পারি, সেটা করছিও।”
মন্ত্রী বলেন, “ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতে আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের ডিজটালাইজেশন নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের রিফর্মগুলো জানতে চেয়েছেন। ভারত অনেক আগে এ ধরনের রিফর্মে হাত দিয়েছে। ডিজটালাইজেশনের মডেল আমরা ভারতীয় হাই কমিশনারের এলাকা ব্যাঙ্গালোরে দেখেছি। কী ভাবে আরও সহযোগিতা বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বন্দরে দ্রুততম সেবা দেবে ভারত
দেশ
চাল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বন্দরে দ্রুততম সেবা দেবে ভারত
বাংলাদেশ সরকার টু সরকার (জিটুজি) এবং উন্মুক্ত দর পদ্ধতির মাধ্যমে ভারত থেকে চাল আমদানি করবে।

ঋদি হক: ঢাকা
বাংলাদেশ (Bangladesh) যখন চাল আমদানি (Import of rice) করবে বন্দরে দ্রুততম সেবা নিশ্চিত করবে ভারত (India)। বাংলাদেশ সচিবালয়ে খাদ্যমন্ত্রী (Bangladesh food minister) সাধন চন্দ্র মজুমদারের (Sadhan Chandra Majumder) সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। বৃহস্পতিবারের ওই বৈঠকের পর এ সব তথ্য জানান খাদ্যমন্ত্রী।
ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু, এ কথা উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে তা দিনদিন আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। প্রতিবেশী দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো হলে উভয় দেশেরই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহজতর হয়।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার টু সরকার (জিটুজি) এবং উন্মুক্ত দর পদ্ধতির মাধ্যমে ভারত থেকে চাল আমদানি করবে। দ্রুততার সঙ্গে আমদানি সম্পন্ন করা এবং খাদ্যশস্যের মানোন্নয়ন, নিরাপদ খাদ্য, টেস্টিং ল্যাবরেটরি, চলমান খাদ্য গুদাম নির্মাণ-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
ভারতের হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলেই করোনা মহামারির সময়ও দু’ দেশ এক সঙ্গে কাজ করে চলেছে। এ ছাড়া চলমান করোনা মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতীয় এই কূটনীতিক।
ভবিষ্যতে দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে বৈঠকে আশা প্রকাশ করেন দোরাইস্বামী তিনি। সাক্ষাৎকালে খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রথম ধাপেই বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাবে, জানালেন ভারতের বিদেশসচিব শ্রিংলা
-
রাজ্য6 hours ago
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতে সিপিএমের লাইনেই খেলছেন শুভেন্দু অধিকারী
-
দেশ2 days ago
করোনার টিকা নেওয়ার পর অসুস্থ হলে দায় নেবে না কেন্দ্র
-
দেশ1 day ago
নবম দফার বৈঠকেও কাটল না জট, ফের কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কেন্দ্র
-
কলকাতা2 days ago
অগ্নিকাণ্ডে গৃহহীনদের ঘর তৈরি করে দেবে পুরসভা, বাগবাজারে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়