Home খবর বাংলাদেশ হাসিনা সরকারের পতনের কয়েক মাস পর বাংলাদেশে ফের নতুন করে বিক্ষোভ কেন?

হাসিনা সরকারের পতনের কয়েক মাস পর বাংলাদেশে ফের নতুন করে বিক্ষোভ কেন?

0

বাংলাদেশে আবারও উত্তাল পরিস্থিতি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের কয়েক মাস পর, দেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ শাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে এ বার বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার কয়েকশো বিক্ষোভকারী ঢাকার বঙ্গভবনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, যেখানে তারা প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিঁ জানায়।

এই বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে যখন প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন গত সপ্তাহে একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, তাঁর কাছে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের কোনো নথিভুক্ত প্রমাণ নেই। শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে যখন পুলিশ তাদের বঙ্গভবনে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য শব্দ গ্রেনেড ব্যবহার করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে এবং পুলিশ অফিসারদের বঙ্গভবনে নিয়ে যায়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালালে দু’জন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও, এক ব্যক্তি শব্দ গ্রেনেডের আঘাতে আহত হন। বাংলাদেশের “দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড” পত্রিকা এই তথ্য জানিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে সমবেত হয় এবং প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি জানায়। এ বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা “অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট” পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে, যার মধ্যে ১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিলের দাবিও রয়েছে।

তাঁদের এক সমন্বয়কারী হাসনাত আবদুল্লা বলেন, “আমাদের প্রথম দাবি হল ‘মুজিবপন্থী ১৯৭২ সালের সংবিধান’ বাতিল, যা চুপ্পুকে (প্রেসিডেন্টের ডাকনাম) ক্ষমতায় রেখেছে।” তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি এই সপ্তাহের মধ্যে দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা পূর্ণ শক্তিতে আবার রাস্তায় নামব।”

হাসনাত আরও বলেন, সেনাপ্রধান এখন দেশে নেই। তিনি দেশে আসার পর সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হবে। যাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না। এই সপ্তাহের মধ্যেই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি ঠিক করে শাহাবুদ্দিনকে পদচ্যুত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, “পুলিশ ও সেনাবাহিনী আমাদের সহযোগী। তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে আন্তজার্তিক মহলে এমনটা প্রচারের সুযোগ পাবে শত্রুরা”।

আগস্ট মাসের ৫ তারিখে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন এবং তিনি সেটি গ্রহণ করেছেন। দেশের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সম্প্রতি প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যকে মিথ্যা বলে আখ্যা দিয়ে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীকে তার লিখিত পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্টের কাছে জমা দিতে হয়। শেখ হাসিনার চতুর্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর মহম্মদ শাহাবুদ্দিনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর, নোবেল বিজয়ী মুহম্মদ ইউনুসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। হাসিনার পদত্যাগের আগে দেশ জুড়ে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যা ছিল তাঁর পদত্যাগের অন্যতম কারণ।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version