খবর অনলাইন: সেলফি তুলতে গিয়ে ভারতে মৃত্যুর হার ক্রমেই বেড়ে চলেছ। এ বার সেলফির বলি হল একে একে সাত জন। ঘটনাটা উত্তর প্রদেশের কানপুরে, বৃহস্পতিবার।
ব্যারেজের পাচিলে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিল ১৯ বছরের যুবক শিবম। নীচে দিয়ে বইছে ভরা গঙ্গা। সেই সময়ে খুব বৃষ্টিও হচ্ছিল। হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান শিবম। প্রবল স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যেতে থাকে তাঁকে। সেই দৃশ্য দেখে বসে থাকতে পারেননি বন্ধু মকসুদ। কিন্তু স্রোতে তিনিও ভেসে যান। শিবম আর মকসুদকে ভেসে যেতে দেখে জলে একে একে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাকি বন্ধুরা – সচিন, ভোলু, রোহিত, ভোলা ও সত্যম। কিন্তু সবাই তলিয়ে যান গঙ্গায়। সকলেরই বয়স ১৬ থেকে ২৪-এর মধ্যে। একমাত্র বেঁচে যান অর্জুন। তিনি ছুটে গিয়ে থানায় খবর দেন। তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
কানপুরের সিনিয়ার পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট শলভ মাথুর জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই ডুবুরি নামানো হয়। ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় সাতজনকে তোলা হয়। এঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সকলকেই মৃত ঘোষণা করা হয়।
এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ভারতে গত দু’ বছরে সেলফি তুলতে গিয়ে ৫০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে। গত জানুয়ারিতে মুম্বইয়ে আরব সাগরের ধারে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে পা পিছলিয়ে জলে পড়ে মৃত্যু হয় তিন যুবতীর। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে মারা যান এক যুবক।
চলন্ত ট্রেনের কাছে সেলফি তুলতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশেই মারা যান তিন কলেজপড়ুয়া। এই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া এক বন্ধু পুলিশকে জানিয়েছিলেন, চলন্ত ট্রেনের কাছে ছবি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার ইচ্ছা ছিল তাঁর বন্ধুদের।
মার্চ মাসে পঞ্জাবের পাঠানকোটে বছর পনেরোর এক কিশোর তার বাবার গুলিভর্তি পিস্তল নিজের কপালে ঠেকিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে মারা যায়। ভুলক্রমে পিস্তলের ট্রিগার টেনে দিয়েছিল সে।
সেলফি তুলতে গিয়ে পৃথিবীতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে লেবাননে। এখন সেলফি তুলতে গিয়ে পৃথিবীতে যত জন মারা যান, তার প্রায় অর্ধেকই ঘটনাই ভারতের।
‘সেলফি’ তোলার হিড়িক আটকাতে মুম্বই পুলিশ শহরের ১৬টি জায়গাকে ‘নো সেলফি জোন’ বলে চিহ্নিত করেছে, যেখানে সেলফি তোলা নিষিদ্ধ। কলকাতায় দূর্গাপুজোর সময়েও দেখা যায় অনেক বড় বড় পুজোমণ্ডপে ‘সেলফি তোলা নিষেধ’ বোর্ড ঝোলানো থাকে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।