ওয়েবডেস্ক: পড়াশোনা শেষ করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের তেমন কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকলেও গড়পড়তা একটা হিসাব থাকেই। সচরাচর ২৫ বছর পার হলে তো আর ঘরে বসে থাকা যায় না। কী চাকরি, কেমন চাকরি, ক্ষেত্র বিশেষে ভিন্ন হলেও ৩০ বছর পার হলেই ভবিষ্যতের সঞ্চয়ের কথা ভাবতেই হয়। চলতি কথায় বলে, যার যেমন আয়, তার তেমন ব্যয়। তা হলে তার তেমন সঞ্চয় হওয়াটাও স্বাভাবিক।
উপার্জিত অর্থের সঠিক ব্যয় এবং নিয়মিত সঞ্চয়ের মাধ্যমেই আর্থিক ভবিষ্যৎকে মজবুত করে তোলা যায়। তবে কর্মজীবনের শুরু থেকেই উপার্জিত অর্থ নিয়ে চিন্তাভাবনার শুরু করে দেওয়াটা অতিপ্রয়োজনীয়। বিশেষ করে ৩০ বছর বয়স হলে ব্যয়ের দিকে যেমন কড়া পাহারাদারির প্রয়োজন, তেমনই দরকার সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি করে নেওয়া। কিন্তু সঞ্চয় করলেই হবে না, পাশাপাশি নজর দিতে হবে আনুষঙ্গিক কয়েকটি বিষয়েও। কারণ, বিপুল সঞ্চয়কেও নিমেষে শূন্য করে দিতে পারে ওই সমস্ত অনাহূত ঘটনা।
স্বাস্থ্যবিমায় গুরুত্ব
এ কথা সর্বদা মাথায় রাখতে হয়, যে কোনো সময় নিজে বা পরিবারের অন্য কোনো সদস্য অসুস্থতার শিকার হতে পারে। সেই চিকিৎসার ব্যয় যদি ডাক্তার আর কয়েকটা ওষুধের উপর দিয়ে চলে যায় তো কোনো সমস্যা থাকে না। কিন্তু সেই রোগমুক্তির কারণ যদি হয়ে দাঁড়ায় হাসাপাতাল/নার্সিংহোম বা কোনো বড়োসড়ো অস্ত্রোপচার, তা হলে তো সঞ্চয়ের টাকা ভেঙেই সেটা করাতে হয়। ফলে আগাম ব্যবস্থা নেওয়াটাই আবশ্যিক। সরকারি/বে-সরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিমা সংস্থা এ বিষয়ে বেশ তৎপর। আকর্ষণীয় শর্তও রয়েছে তাদের কাছে। তবে এ ব্যাপারে সঠিক ভাবে যাচাই করে তবেই বিমা করান। এবং আপনি সুস্থ থাকার পাশাপাশি, সুস্থ শরীরের আর্থিক গ্যারান্টি নিশ্চিত করুন।
সম্ভাব্য ব্যয়ের তালিকা তৈরি
বয়স যদি ৩০-এর কাছাকাছি হয়, তা হলে আগামী দিনে ঠিক কোন কোন খাতে বড়োসড়ো খরচের সম্ভাবনা রয়েছে তার তালিকা তৈরি করে ফেলতে হবে। পাশাপাশি ওই সমস্ত খাতে খরচের জন্য আগাম তহবিলও তৈরি করে নিতে হবে। যেমন, বিয়ের খরচ। বিয়ের পর সন্তানের পড়াশোনার খরচ তো অভিভাবককেই বহন করতে হবে। উচ্চশিক্ষার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে সুদের বিনিময়ে ঋণ নেওয়ার থেকে আগাম জমানো অর্থের ব্যবহার অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। আবার নতুন সংসার করতে হলে কোন কোন পণ্য বা বিষয়ের জন্য ইএমআই গুনতে হবে, তারও আগাম ব্যবস্থা করে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।
সঞ্চয়ের হার বৃদ্ধি
আয় বাড়ছে, ব্যয়ও বাড়ছে। কিন্তু সঞ্চয়ের পরিমাণ অবহেলার শিকার। তেমনটা হলে মুশকিল। আয়-ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি সঞ্চয়ের হারও বাড়াতে হবে। যেমন সঞ্চয়ের শুরু যদি হয়ে থাকে মোট আয়ের ১০ শতাংশ দিয়ে, তা হলে সেটাকে কোনো কোনো মাসে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। তবে নির্ভরশীল সদস্যের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়লে সেই হার নীচের দিকে নামতে পারে। তখন সঞ্চয়ের বহুমুখীকরণ করানো দরকার।
সঞ্চয়ের লক্ষ্যমাত্রা
প্রতি মাসেই যে সমান পরিমাণ সঞ্চয় হবে তেমনটাও নয়। কিন্তু মাস হিসাবে নয়, বিষয়টিকে বছরের হিসাবে বাঁধতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রতিবছর নিজের সঞ্চয়ের পরিমাণ নিয়ে কৌশলী কাটাছেঁড়া করতে হবে। যদি দেখা যায়, কোনো এক বছর সঞ্চয়ের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় কমে গিয়েছে, সেক্ষেত্রে আগামী বর্ষে তা মেক-আপ করতে হবে।