খবর অনলাইন: বর্ষা না আসা পর্যন্ত বেশ বৃষ্টি হচ্ছিল দক্ষিণবঙ্গে। ১৭ই জুন বর্ষার পদার্পণ ঘোষণা হওয়ার পরেই সব বৃষ্টি যেন বাষ্পীভূত হয়ে গেছে। আকাশ দেখলে গুলিয়ে যাচ্ছে এটা বর্ষা না শরৎ। বৃষ্টি না হওয়ার ফলে দিনের বেলার তাপমাত্রা যেমন বাড়ছে তেমনি চড়ছে আর্দ্রতা।
১ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত শহরে মোট বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১০৮মিমি। তার পরের এক সপ্তাহ বৃষ্টি হয়েছে মোটে ১৪ মিমি। অথচ বৃষ্টির পরিমাণ এখন ক্রমশ বাড়ার কথা। জুন মাসে কলকাতায় মোট বৃষ্টি হওয়ার কথা ২৮৪ মিমি। পরিস্থিতি যা তাতে এই মাসের শেষ ক’দিনে বৃষ্টির এই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার কোনও সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। অথচ উত্তরবঙ্গে উল্টো ছবি। গত তিন দিনে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়ে চলেছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার আর কোচবিহার জেলার বিভিন্ন অংশে। চরম অতি ভারী বৃষ্টি, অর্থাৎ এক দিনে ২৫০ মিমির বেশি বৃষ্টিও হয়েছে কোথাও কোথাও। বিভিন্ন নদী ফুলে ফেঁপে উঠে বন্যা-পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে উত্তরবঙ্গে।
কেন এমন অবস্থা ?
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে, এই মুহূর্তে দক্ষিণবঙ্গের ওপরে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ খুবই দুর্বল। এই দুর্বল বায়ুপ্রবাহকে শক্তিশালী করতে দরকার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের। কিছু দিন আগে উত্তর অন্ধ্র-দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলে একটা ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু মধ্য ভারতের দিকে এর অভিমুখ থাকার ফলে দক্ষিণবঙ্গের কপালে ছিটেফোঁটা ছাড়া বেশি কিছু জোটেনি। তার ওপর উত্তরবঙ্গ, অসম হয়ে মণিপুর পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখার ফলে সব বৃষ্টি চলে গেছে হিমালয় সন্নিহিত অঞ্চলে।
পরিস্থিতি বদলাবে কবে ?
আপাতত দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টির জন্য স্থানীয় ভাবে সৃষ্ট হওয়া বজ্রগর্ভ মেঘের ওপরেই ভরসা করে থাকতে হবে। তবে সাম্প্রতিক ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, এই স্থানীয় ভাবে সৃষ্ট হওয়া বজ্রগর্ভ মেঘও ১০০ মিমির ওপরে বৃষ্টি নামায়। কলকাতায় যেমনটা হয়েছিল ২০১৩ সালের ২১ জুন। সে দিন এক ঘণ্টায় আলিপুরে বৃষ্টি রেকর্ড করা হয় ১১০ মিমি, অথচ দমদমের হাওয়া অফিস সাকুল্যে ৫ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করে। কাল, বৃহস্পতিবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হতে চলেছে। বিদেশি সংস্থার মতে এটি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ওড়িশা উপকূলের দিয়ে স্থলভাগে ঢুকবে। এই নিম্নচাপ যদি ওড়িশার উত্তর উপকূল দিয়ে ঢোকে তা হলে বৃষ্টির ভাগ্য খুলবে দক্ষিণবঙ্গের, না হলে আবার ছিটেফোঁটাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।