প্রায়শই চর্চায় উঠে আসে বুলগেরিয়ার অন্ধ ভবিষ্যৎদ্রষ্টা ‘বাবা ভঙ্গা’র কথা। নতুন বছর, ২০২৩-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ফের এক বার নেটদুনিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে ওই রহস্যময়ীর ভবিষ্যদ্বাণী। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে পারমাণবিক বিস্ফোরণ, ল্যাব শিশু, সৌর সুনামি এবং আরও অনেক কিছুর কথা বলে গিয়েছেন বুলগেরিয়ার ওই রহস্যময় ভবিষ্যৎদ্রষ্টা।
কে এই বাবা ভঙ্গা?

বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ বিশ্বাস করেন তিনি কোন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন বাবা ভঙ্গা। ১৯১১-য় স্ট্রোমিকাতে জন্ম তাঁর। আসল নাম ভ্যানগেলিয়া প্যানদেভা দিমিত্রোভা। বিয়ের পর হন ভ্যানগেলিয়া গুস্তেরোভা। মাত্র ১২ বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারান। শোনা যায়, এক বার প্রবল ঝড় বা টনের্ডোর মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই রহস্যজনক ভাবে তাঁর দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়। তখন থেকেই মানুষের রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা এবং ভবিষ্যদ্বাণী করার অধিকারিণী হয়ে ওঠেন তিনি। এ ভাবেই ক্রমশ হয়ে ওঠেন ভবিষ্যৎদ্রষ্টা। দিকে দিকে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯৬ সালে মৃত্যু হয় তাঁর। তবে তার আগেই ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে কী কী ঘটবে, সে ব্যাপারে করে গিয়েছেন অংসখ্য ভবিষ্যদ্বাণী।
মিলেছে একাধিক ভবিষ্যদ্বাণী

টাইমস নাও-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বাবা ভঙ্গার অনেক ভবিষ্যদ্বাণী ইতিমধ্যেই মিলেছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, প্রিন্সেস ডায়নার মৃত্যু, ২০০৪ সালের সুনামি এবং বারাক ওবামার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো। শুধু তাই নয়, ৯/১১-র সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং ব্রেক্সিটের কথাও বলে গিয়েছিলেন ‘বলকানের নস্ত্রাদামুস’।
বাবা ভঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী ২০২৩

২০২৩ সালে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিস্ফোরণের ভবিষ্যদ্বাণীও করেছিলেন বাবা ভঙ্গা। ইউক্রেনে একটি বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে কারণ কিয়েভ মস্কোকে “পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল”-এর জন্য অভিযুক্ত করেছে। পাশাপাশি, তিনি বলে গিয়েছেন, ২০২৩ সালে একটি “বড় দেশ” মানুষের উপর জৈব অস্ত্র গবেষণা চালাবে। এর ফলে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
এ ছাড়াও বাবা ভঙ্গা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, প্রাকৃতিক জন্ম নিষিদ্ধ হতে পারে এবং মানুষ গবেষণাগারে বেড়ে উঠবে। এর মানে বিশ্ব নেতারা এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা সিদ্ধান্ত নেবেন কে জন্মগ্রহণ করবে। পিতামাতারা তাঁদের বৈশিষ্ট্য এবং চেহারা কাস্টমাইজ করার সুযোগ পাবেন – যেমন চুলের রং এবং চোখের রং, ইত্যাদি।
তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী, ২০২৩ এমন একটি সৌর ঝড় দেখা যাবে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। আসন্ন বছরেই কোনো ভাবে পৃথিবীর কক্ষপথ “পরিবর্তন” হবে বলে ভবিষ্যতও করেছিলেন তিনি।
আর কী কী অপেক্ষায়?

ডিএনএ-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাবা ভঙ্গা বলে গিয়েছেন, ভারতের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাবে। পঙ্গপালের হানায় শস্যহানির কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। সারা পৃথিবীতেই পানীয় জলের ভয়াবহ আকাল দেখা দেবে। নদ-নদী দূষণের চরম মূল্য দিতে হবে মানব সভ্যতাকে। টাইমস নাও বলছে, বাবা ভঙ্গা বলে গিয়েছেন, এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন দেশ জলের নীচে চলে যাবে অপ্রত্যাশিত বন্যায়। আগামী বছরগুলোতে ভূমিকম্প এবং সুনামির প্রবণতা বাড়বে এবং বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ হবে এগুলোই।
বাবা ভঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী ২০২২

বাবা ভঙ্গা কল্পনা করেছিলেন, ২০২২ সালে আমরা স্ক্রিনের সামনে আগের চেয়ে আরও বেশি সময় ব্যয় করব। যেটাকে মোবাইলে সময় কাটানোর সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। তাঁর মতে, একদল গবেষক সাইবেরিয়ায় একটি প্রাণঘাতী ভাইরাস আবিষ্কার করবেন যা এখন পর্যন্ত হিমায়িত ছিল। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের প্রভাবের কারণে হিমবাহ গলে যাওয়ায় প্রাণঘাতী ভাইরাসটি মুক্তি পাবে এবং পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে পৃথিবীতে ভিনগ্রহের প্রাণীর আক্রমণের কথা বলে গিয়েছেন তিনি।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।