কয়েক দিন আগেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে প্রাথমিকের পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে, প্রাথমিক স্তরে সিমেস্টার পদ্ধতি চালুর প্রস্তাব নিয়ে কড়া অবস্থান নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই ধরনের কোনও পদ্ধতি প্রাথমিক স্তরে চালু হবে না। পাশাপাশি, শিক্ষা দফতরের দায়িত্বহীন আচরণ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি প্রশ্ন করেন, কেন তাঁর বা মুখ্যসচিবের অনুমোদন ছাড়া এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর জবাবের পরে পরিস্থিতি আরও গম্ভীর হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘‘অনুমোদন ছাড়া বিষয়টি কীভাবে সংবাদমাধ্যমে এল? এই ভুল বার্তার জন্য দায়ী কে?’’
এমনকী, তিনি শিক্ষামন্ত্রীর নাম ধরেই প্রশ্ন করেন, “ব্রাত্য তুমি শিক্ষামন্ত্রী…নতুন পলিসি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে আমাদের জানাবে”। পরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, প্রাথমিক স্তরে সিমেস্টার পদ্ধতি চালুর কোনও পরিকল্পনা আর থাকবে না।
ছোটদের উপর বাড়তি চাপ এড়ানোর গুরুত্ব উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওইটুকু বয়সে শিশুরা এখনও ‘টুইঙ্কল টুইঙ্কল লিটল স্টার’ শেখে। তাদের সিমেস্টারের মতো ভারী পদ্ধতির মধ্যে ফেলাটা ভুল হবে। আমি চাই তাদের পড়াশোনার বোঝা কমানো হোক।’’ কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিমেস্টার পদ্ধতি উপযুক্ত হলেও, প্রাথমিক স্তরের জন্য তা অপ্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রাথমিক স্তরে ‘ক্রেডিট বেসড সিমেস্টার সিস্টেম’ চালুর প্রস্তাবটি গত সপ্তাহে ঘোষণা করেছিলেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এটি কার্যকর করার কথা জানানো হয়েছিল। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে গৌতম পাল জানান, ‘‘আমরা এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। স্টুডেন্ট উইক শেষে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা করা হবে।’’
প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ভবিষ্যতে কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই তাঁর অনুমোদন নিতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ করে এই বার্তা দেওয়া হলেও, প্রশাসনের মতে এটি সব দফতরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।