প্রশান্ত মহাসাগরে যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চিন ও রাশিয়ার নৌবাহিনী। রবিবার চিনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি সামরিক বন্দরে উভয় দেশের সেনাবাহিনীর এই মহড়া শুরু হয়। এই মহড়া এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ইউক্রেন যুদ্ধে বেজিংয়ের নাম সরাসরি জড়িয়ে দিয়েছে ন্যাটো।
চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছে যে উভয় দেশের বিমান বাহিনী উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে টহল দিয়েছে। এর পাশাপাশি বলা হয়েছে, এই নৌ মহড়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক বা আঞ্চলিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই, এতে কোনো তৃতীয় পক্ষকে টার্গেট করাও হচ্ছে না।
চিনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, রবিবার গুয়াংডং প্রদেশে চিন ও রাশিয়ার মধ্যে এই সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে। চিনের সরকারি সংবাদ মাধ্যম সিসিটিভি বলেছে, এই সামরিক মহড়ার উদ্দেশ্য নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলা করা এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষমতা প্রদর্শন করা।
নৌ মহড়ার সময় উভয় দেশের সেনাবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী মহড়া, সামুদ্রিক আক্রমণ এবং বিমান প্রতিরক্ষা অনুশীলন করবে। সিনহুয়া আরও জানিয়েছে, এই সামরিক মহড়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঝাংজিয়াং শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে উভয় দেশের সেনাবাহিনী উপস্থিত ছিল।
আসলে চিন ও ন্যাটো দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা অনেক পুরনো। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর বৈঠকে বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধে চিন নির্ধারক ভূমিকা পালন করছে। ন্যাটো চিন ও রাশিয়ার সম্পর্ককে ‘সীমান্ত বহির্ভূত অংশীদারিত্ব’ বলে অভিহিত করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে চিন ক্রমাগত রাশিয়াকে সাহায্য করছে বলে অভিযোগ ন্যাটোর। ন্যাটোর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চিন বলেছিল, ন্যাটো দেশগুলো অন্যদের খরচে নিরাপত্তা পাওয়ার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে চিন বলেছে, ন্যাটো যেন এশিয়ায় এমন নৈরাজ্য ছড়ানোর চেষ্টা না করে।
গত সপ্তাহে বেলারুশের সঙ্গেও সামরিক মহড়া শুরু করেছে চিন। যখন ন্যাটো দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তখনই এই মহড়া শুরু হয়েছিল। তারপরও এই সামরিক মহড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন এবং চিন-বেলারুশ সামরিক মহড়ার একযোগে আয়োজন একটি সুচিন্তিত কৌশল। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছিলেন যে ন্যাটো দেশগুলিকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছে বেজিং।
আরও পড়ুন: গাজা উপত্যকায় ফের আঘাত ইজরায়েলের, বাড়ল বিমান ও ট্যাঙ্কের গোলাবর্ষণ