ওয়াশিংটন: মার্কিন অর্থনীতিতে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের বিশাল অবদান স্বীকার করে নিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর দুই রাষ্ট্রনেতা এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, বর্তমানে ৩ লক্ষের বেশি ভারতীয় শিক্ষার্থী আমেরিকায় পড়াশোনা করছেন, যা প্রতি বছর মার্কিন অর্থনীতিতে ৬৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি (৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) অবদান রাখছে। পাশাপাশি, এই শিক্ষার্থীরা আমেরিকায় বহু প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন।
দুজনেই শিক্ষা, গবেষণা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রকে আরও সুগম করতে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিশেষ করে, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে উদ্ভাবন, শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রের উপযোগী দক্ষতা গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দেওয়া হবে।
শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা
বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে, শিক্ষার্থী, গবেষক ও কর্মীদের চলাচল উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। এই কারণে তাঁরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর পক্ষে সায় দিয়েছেন।”
দুই রাষ্ট্রনেতা যৌথ ডিগ্রি, টুইনিং প্রোগ্রাম, গবেষণা কেন্দ্র এবং ভারতের মাটিতে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফশোর ক্যাম্পাস স্থাপনের মতো বিষয়গুলোতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসন ও মানব পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ
শুধু শিক্ষার্থী ও পেশাদারদের আইনি চলাচল সহজ করাই নয়, দুই দেশ অবৈধ অভিবাসন ও মানব পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাঁরা একযোগে অপরাধী চক্র, মানব পাচারকারী, মাদক চোরাকারবারী এবং বেআইনি অভিবাসন নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বিশ্ব এখন একটি বৈশ্বিক কর্মক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। তাই নিরাপদ ও লাভজনক আদানপ্রদানের উপযোগী নীতি তৈরি করা প্রয়োজন। এই পরিপ্রেক্ষিতে, দুপক্ষই শিক্ষার্থী ও পেশাদারদের জন্য আইনসিদ্ধ অভিবাসনের পথ সুগম করার পাশাপাশি, পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভ্রমণ সহজতর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।”
ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
মোদী ও ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, দুই দেশের সরকার, শিল্প সংস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হবে। তাঁদের লক্ষ্য, পারস্পরিক স্বার্থে একটি স্থায়ী ও শক্তিশালী ভারত-মার্কিন সম্পর্ক গড়ে তোলা, যা বিশ্বের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে এবং মুক্ত ও স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য সহায়ক হবে।
এভাবে, শিক্ষার্থী বিনিময় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারত-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।