বাণিজ্যিক নীতি নিয়ে ফের এক বার পরোক্ষ ভাবে চিনের সমালোচনা করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, আফ্রিকার সঙ্গে ‘শোষণমূলক মডেল’ অনুসরণ করছে বেজিং। বুধবার, জাপান-ভারত-আফ্রিকা বিজনেস ফোরামে ভার্চুয়ালি বক্তৃতা করার সময় তিনি বলেন, ভারতের নীতি বরাবরই দীর্ঘমেয়াদী ও পারস্পরিক কল্যাণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
জয়শঙ্কর জানান, আফ্রিকার চতুর্থ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ভারত। যেখানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছুঁয়েছে এবং তা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারত আফ্রিকার সংযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, আফ্রিকায় ২০০টিরও বেশি প্রকল্প সম্পন্ন করেছে ভারত। যেগুলির মধ্যে রেলপথ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, কৃষি ও জল সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, ভারতের বিভিন্ন প্রকল্প যেমন—পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা, সেচ প্রকল্প, গ্রামীণ সৌরবিদ্যুৎ, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ট্রান্সমিশন লাইন, সিমেন্ট, চিনি ও বস্ত্র কারখানা, প্রযুক্তি পার্ক এবং রেল পরিকাঠামো—আফ্রিকায় কর্মসংস্থান তৈরিতে সহায়ক হয়েছে।
গ্লোবাল সাউথ-এর ভূমিকায় আলোকপাত করে জয়শঙ্কর বলেন, উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর বৈশ্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যথাযথ প্রতিনিধিত্ব পাওয়া উচিত।
তিনি বলেন, “গ্লোবাল সাউথ যখন ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে, তখন তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থ যাতে বিশ্ব মঞ্চে সঠিক ভাবে প্রতিফলিত হয়, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
ভারত গ্লোবাল সাউথ-এর স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভয়েস অফ দ্য গ্লোবাল সাউথ সামিট এবং জি২০-তে সভাপতিত্ব করার সময় ভারত আফ্রিকান ইউনিয়নের স্থায়ী সদস্যপদ নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ সহযোগিতা ফোরাম (FIPIC) ও ভারত-আফ্রিকা ফোরাম সামিটের মতো প্ল্যাটফর্মের দিকেও ইঙ্গিত করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। তাঁর দাবি, এই পদক্ষেপ পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে ভূমিকা রাখছে।