আইএস-এর আত্মঘাতী বোমা হামলায় কাবুলে নিহত ৮৩

0

খবর অনলাইন: কাবুলে হাজারা সম্প্রদায়ের বিক্ষোভমিছিলে আত্মঘাতী মানববোমায় প্রাণ গেল ৮৩ জনের। আহতের সংখ্যা ২৩১। আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে আমাক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে।

জনস্বাস্থ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র ইসমাইল কাওয়াসি জানান, যে প্রধান সড়ক পার্লামেন্টের দিকে গিয়েছে সেই সড়কেই কাবুল চিড়িয়াখানার কাছে ডে মাজাং সার্কেলে এই বিস্ফোরণ ঘটে। নিহত ও আহতদের কাছাকাছি হাসপাতালগুলিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

হাজারা বিক্ষোভকারীরা তখন মিছিল করে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের দিকে যাচ্ছিলেন। হাতে জাতীয় পতাকা, মুখে প্রেসিডেন্ট-বিরোধী স্লোগান। হঠাৎই তিনটি মানববোমার বিস্ফোরণ হয়। একটি বোমা ফাটানো হয়, একটি আগেই ফেটে যায় এবং তৃতীয়টিকে পুলিশ গুলি করে মারে বলে আফগান অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে।

জরুরি পরিষেবার গাড়িগুলি বিস্ফোরণস্থলে পৌঁছে যায়। তারা জখম ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কাজে লেগে পড়ে। গোটা জায়গাটা রক্তে ভেসে যায়। ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে থাকে ছিন্নভিন্ন দেহ।

কাবুলে নতুন গ্র্যাজুয়েট পুলিশ ক্যাডেটদের উপর আত্মঘাতী বোমার হামলা হয়েছিল সপ্তাহ তিনেক আগে। তাতে ৪০ জন মারা গিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর আবার এই আত্মঘাতী হামলায় আফগান প্রেসিডেন্ট আসরফ ঘনি সরকার খুবই বিব্রত। প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “সুবিধাবাদী জঙ্গিরা বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ঢুকে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কর্মী সহ আমাদের দেশের বহু মানুষকে জখম করেছে।”     

আফগানিস্তানের জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ হাজারা সম্প্রদায়ভুক্ত। এরা চিরকালই বৈষম্যের শিকার। তালিবান আমলে এই সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে এরা অত্যন্ত সংগঠিত। এই সম্প্রদায়ের অনেক নেতাই আসরফ ঘনির ন্যাশনাল ইউনিটি সরকারে রয়েছেন।

শনিবার কাবুলে এই সম্প্রদায়ের মানুষজন প্রস্তাবিত ৫০০ কেভি বিদ্যুৎ পরিবহণ লাইনের সুযোগ পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাঁদের দাবি, তুর্কমেনিস্তান থেকে কাবুল পর্যন্ত যে ৫০০ কেভি লাইন তৈরি হচ্ছে তা বামিয়াম প্রদেশ দিয়ে নিয়ে যেতে হবে। উল্লেখ্য, এই বামিয়ান প্রদেশেই হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষজনই বেশি বাস করেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই লাইন তাঁদের জায়গার উপর দিয়ে হলে তাঁদের দরিদ্র প্রদেশ উন্নয়নের সুযোগ পাবে। প্রথমে ঠিক ছিল, এই লাইন বামিয়ান দিয়েই টানা হবে। কিন্তু পড়ে সেই পরিকল্পনার বদল হয়। নতুন পরিকল্পনার বিরুদ্ধেই হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষজন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। আফগান সরকারের বক্তব্য, ওই লাইন আবার ঘোরাতে গেলে প্রচুর টাকা খরচ হবে। তা ছাড়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই প্রকল্পটি রূপায়ণে দেরিও হয়ে যাবে।

হাজারা সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের মোকাবিলায় শনিবার কাবুলের সিটি সেন্টার এলাকা শিপিংকনটেনার ও অন্যান্য যান দিয়ে পুরো ঘিরে ফেলা হয়েছিল। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছিল। আকাশ থেকে টহল দিচ্ছিল হেলিকপ্টার। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে কোনও ভাবেই শান্তি বিঘ্নিত হয়নি। শেষ পর্যন্ত শান্তি ভাঙল আইএস-এর আত্মঘাতী বোমার হামলায়।


ছবি : সৌজন্যে এএনআই টুইটার পোস্ট

dailyhunt

খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

বিজ্ঞাপন