লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় ভয়াবহ দাবানল। যা এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার একর জমি গ্রাস করেছে। এই এলাকাটি বহু হলিউড তারকার বাড়ি হিসেবে পরিচিত। দাবানলের তীব্রতা এতটাই ছিল যে বহু মানুষ তাঁদের গাড়ি ফেলে পায়ে হেঁটে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পালাতে বাধ্য হন।
সান্তা মনিকা পাহাড়ের অভিজাত প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় বহু বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। এই দাবানলের তীব্রতায় সেগুলো নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রাস্তায় বহু গাড়ি, যেমন বিএমডব্লিউ, টেসলা এবং মার্সিডিজ ভেঙে বা ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দমকলকর্মীরা বুলডোজারের সাহায্যে গাড়িগুলিকে সরিয়ে পথ তৈরি করেছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম জানান, ১ হাজার ৪০০-র বেশি দমকলকর্মী ঘটনাস্থলে কাজ করছেন এবং আরও শতাধিক কর্মী তাঁদের সাহায্য করার জন্য আসছেন।
কীভাবে প্রবল বাতাস দাবানলকে বাড়িয়ে তুলল?
দমকল বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্যালিসেডস দাবানল শুরু হয় বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ। নর্থ পিয়েদ্রা মোরাডা ড্রাইভ এলাকায় দাবানলের সূত্রপাত ঘটে। ঘণ্টায় ৪০ মাইল গতিবেগে প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ২০০ একর থেকে দাবানল দ্রুত ৩ হাজার একরে পৌঁছে যায়, যার ফলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই সময়ে এলাকাটিতে যে বাতাস বইছে, সেটির নাম সান্তা আনা। যা দশকের ভয়াবহতম ঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১০০ মাইল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
দাবানলের কারণ ও প্রভাব
পশ্চিম আমেরিকায় দাবানল সাধারণত স্বাভাবিক ঘটনা। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার ধরনে পরিবর্তন এসেছে। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই দশকের খরার পরে টানা দুই বছর ভারী বৃষ্টি হয়, যা উদ্ভিদের প্রবল বৃদ্ধি ঘটায়। ফলে এলাকাটি দাবানলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের কার্যকলাপের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন এই ধরনের বিপর্যয়ের মাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলছে।