স্থলে, জলে, আকাশে, জঙ্গলে, মানবশরীরে এমনকি মেঘেও ক্ষতিকর বিষাক্ত মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মিলেছে। এবার মানবমস্তিষ্কেও মিলল ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর এর পরেই প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে বিশ্বব্যাপী এমার্জেন্সি ঘোষণার দাবি উঠেছে।
‘দ্য গার্ডিয়ান’ সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের মস্তিষ্কের পাশাপাশি ফুসফুস, প্লাসেন্টা, লিভার, কিডনি, জননেন্দ্রিয়, হাঁটু, কনুই, রক্তনালি ও অস্থিমজ্জাতেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মিলেছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ অনলাইনে গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এই গবেষণা চালান নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যালসের অধ্যাপক ম্যাথু ক্যামপেন। তিনি জানান, মানুষের মস্তিষ্কে ০.৫% প্লাস্টিকের কণা মিলেছে।
এদিকে ১৩ আগস্ট প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের বাজারে মেলা সমস্ত ব্র্যান্ডের নুন ও চিনিতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মিলেছে। ছোটো হোক কিংবা বড়ো, প্যাকেটজাত হোক কিংবা বাজারে যে খোলা নুন আর চিনি বিক্রি হয়, তাতেও মিলেছে প্লাস্টিকের কণা।
‘টক্সিকস লিঙ্ক’ নামে পরিবেশের বিষয় নিয়ে গবেষণা চালানো একটি সংস্থা এই সমীক্ষা চালায়। ‘Microplastics in Salt and Sugar’ নামক প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, নুন আর চিনিতে ০.১-৫ মিমি আয়তনের মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মিলেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, নানা রকম আকারের মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মিলেছে। সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিকের কণা মিলেছে আওডাইজড নুনে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা তথা অধিকর্তা রবি আগরওয়াল জানান, গোটা বিশ্বে প্লাস্টিকের দূষণ ঠেকাতে কনক্রিট উপায় বের করাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য।
‘টক্সিকস লিঙ্ক’ নামক সংস্থার সহকারী অধিকর্তা সতীশ সিনহা জানান, নুন আর চিনির নমুনায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মেলার ঘটনা সত্যি উদ্বেগজনক। নুনের নমুনায় কেজিপ্রতি ৬.৭১-৮৯.১৫ পিস মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মিলেছে। চিনির নমুনায় কেজিপ্রতি ১১.৮৫-৬৮.২৫ পিস মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মিলেছে। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্লাস্টিকের কণা মিলেছে নন-অর্গানিক চিনিতে।
কিন্তু নুন-চিনি তো কোন ছার, এখন মানুষের মস্তিষ্কেও মিলল প্লাস্টিকের কণা। তুরস্কের কুকুরোভা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোপ্লাস্টিকের বিষ নিয়ে গবেষণারত সেদাত গুনডোগু প্লাস্টিকের দূষণকে গ্লোবাল এমারজেন্সি ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
নয়া পেনশন নীতিতে অনুমোদন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার, ‘ইউনিফাইড পেনশন স্কিম’-এ কী সুবিধা মিলবে?