ইসলামাবাদ: কুখ্যাত জঙ্গি তথা ২৬/১১ মুম্বই হামলার মাস্টার মাইন্ড হাফিজ সঈদকে গ্রেফতার করা হল। বুধবার সকালে গুজরানওয়ালা থেকে লাহোর যাওয়ার সময়ে সন্ত্রাসবিরোধী দফতরের (সিটিডি) আধিকারিকরা জামাত উদ দাওয়ার প্রধানকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে তাঁকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
২০০৮-এ মুম্বইয়ের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার মূল চক্রী ছিলেন হাফিজ। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভারত থেকে একাধিকবার পাকিস্তানের কাছে আবেদন করা হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ তারা করেনি। শুধু কয়েক বার গৃহবন্দি করেই ছেড়ে দিয়েছিল তাঁকে। এ দিন ঠিক কী কারণে হাফিজকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেটা খোলসা করেনি পাকিস্তানের প্রশাসন। বুধবার দুপুরে বা বিকেলের মধ্যে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে যাবতীয় জল্পনা দূর করবে সিটিডি।
তবে হাফিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা বেশ কিছু পদক্ষেপের মধ্যেই ইঙ্গিত দিচ্ছিল পাকিস্তান। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে গত ৩ জুলাই হাফিজ সঈদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় পাকিস্তান। সমাজসেবার নাম করে টাকা তুলে তা জঙ্গি কার্যকলাপে লাগানোর অভিযোগে হাফিজের বিরুদ্ধে মামলা করে সন্ত্রাসবিরোধী দফতর।
আরও পড়ুন সাবধান! এই কাজটি করলে ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে মেট্রোকে
সিটিডির অভিযোগ, জামাত উদ দাওয়া ও হাফিজের ১২ সহযোগী টাকা তুলে তা সন্ত্রাসের কাজে খরচ করছেন। হাফিজ-সহ ওই ১২ জনের বিরুদ্ধে মোট ২৩টি মামলা করা হয়। সঈদ ছাড়াও ওই তালিকায় রয়েছে তাঁর শ্যালক আব্দুল রহমান মক্কি, আমির হামজা ও মুহাম্মাদ ইয়াহিয়া। লাহোর, মুলতান ও গুজরানওয়ালায় এই মামলাগুলি রজু করা হয়েছে।
সিটিডির দাবি, আল-আনফাল, দাওয়াত-উল-ইরশাদ এবং মুয়াজ-বিন-জাবাল সংস্থার নামে টাকা তোলা হয়েছে। এই সব সংগঠন ছাড়াও জামাত উদ দাওয়া, লস্কর-ই-তৈবা ও ফিফ-এর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, হাফিজ সঈদকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তার পর থেকেই চাপ বাড়ছিল ইমরান খান সরকারের ওপরে। এর ওপর ঝুলছিল কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার খাঁড়া। এমনটা হলে পাকিস্তানে আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দিত আইএমএফ। আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দিলে চরম আতান্তরে পড়ত পাকিস্তান। মনে করা হচ্ছে এই প্রবল চাপের জন্যই হাফিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হল ইমরান খান সরকার।