হিমালয়ের কত কিছুই আমাদের অজানা অচেনা। হিমালয়ে এক নতুন প্রজাতির সাপের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ছোট্ট আকারের ওই সাপের গায়ের রঙ তামাটে। জার্মান, ব্রিটিশ ও ভারতীয় বিজ্ঞানীরা মিলিত ভাবে নতুন প্রজাতির সাপের সন্ধান পেয়েছেন। এই নব আবিষ্কৃত সরীসৃপের নাম রাখা হয়েছে বিশিষ্ট হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিওর নামে। তার নাম হয়েছে ‘আঙ্গুইকুলাস ডিক্যাপ্রিওই’ (Anguiculus dicaprioi)। বিখ্যাত অভিনেতা লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিও একজন নামজাদা পরিবেশবিদ। তাই তাঁর নামে নতুন আবিষ্কৃত সরীসৃপের নামকরণ করা হয়েছে। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে নেচার জার্নালে।
বিজ্ঞানীরা জানান, শান্ত প্রকৃতির সাপের মাথা ছোট্ট। আকারে ছোট্ট সাপের দেখা মেলে হিমাচল প্রদেশের মাটির রাস্তায়। মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত দেখা যায়। বছরের অন্য সময় দেখা যায় না। ডিএনএ পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও নেপালের চিতওয়ানের জঙ্গলে এই বিশেষ রকমের সাপ পাওয়া যায়। এই সাপ ২২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এক জায়গায় থাকতে পছন্দ করে এই সাপ। খুব বেশি নড়াচড়া পছন্দ করে না।
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময় হিমাচলে নিজের বাড়ির পেছনে এই সাপ দেখেন বিজ্ঞানী বীরেন্দ্র ভরদ্বাজ। তিন বছর ধরে পাঁচ বিজ্ঞানীকে নিয়ে গবেষণা চালান তিনি। ওই পাঁচ বিজ্ঞানী হলেন শৌনক পাল, জিশান এ মির্জা, গেরনট ভোগেল, প্যাট্রিক ডি ক্যাম্বেল ও হরশিল পাটিল। লাতিন ভাষায় ‘আঙ্গুইকুলাস’ (Anguiculus) মানে ছোট্ট সাপ।
হলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা অস্কারজয়ী লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিও একজন নামজাদা পরিবেশরক্ষক এবং পরিবেশ আন্দোলনকারী। লিওনার্দো সময় পেলেই জঙ্গলে বেড়াতে চলে যান। সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি রিল ভিডিও শেয়ার করে লিওনার্দো গোটা বিশ্বের সঙ্গে ২১টি প্রজাতির প্রাণীর পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন যারা হারিয়েই গিয়েছিল।
১৯৯৮ সালে লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিও পরিবেশ রক্ষার তাগিদে গড়েন নিজের সংস্থা। নাম দেন ‘লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিও ফাউন্ডেশন’। জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, সমুদ্রদূষণ রোধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও উদ্ধার ও ত্রাণকাজের কাজকর্ম করে থাকে লিওনার্দোর সংস্থা। নিজের সংস্থার মাধ্যমে হলিউডি অভিনেতা ‘ওয়াটার প্ল্যানেট’, ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ নামে পরিবেশের ওপর ২টি ছোটো ওয়েব ফিল্মও প্রযোজনা করেছেন। দীর্ঘ ৪ বছরের নিরন্তর গবেষণার পর ২০০৭ সালে তিনি ‘The 11th Hour’ নামে তথ্যচিত্র তৈরি করেন লিওনার্দো। এই তথ্যচিত্রেও পরিবেশ রক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তিনি। এখানে প্রযোজনার পাশাপাশি ভাষ্যপাঠও তাঁর ছিল।
২০১৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘মেসেঞ্জার অফ পিস ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’ সম্মান পান লিওনার্দো। ২০১৬ সালে ‘the Revenant’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য অস্কার পুরস্কার পান লিওনার্দো। অক্সারের মঞ্চেও তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষার কথা বলেন। ছোটোবেলা থেকেই মেরিন বায়োলজিস্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন লিওনার্দো। আজ হলিউড অভিনেতা লিওনার্দোর সংস্থা ৩৫টিরও বেশি পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত।