রাশিয়া এই প্রথম বার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (ICBM) ব্যবহার করে ইউক্রেনে হামলা চালাল। রাশিয়ার দক্ষিণের অ্যাস্ট্রাখান অঞ্চল থেকে বৃহস্পতিবার সকালে এই মিসাইল ছোড়া হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর এই প্রথমবার রাশিয়া এত শক্তিশালী এবং দীর্ঘপাল্লার মিসাইল ব্যবহার করল বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
রাশিয়ার এই আক্রমণ ডিনিপ্রো শহরের কেন্দ্রীয়-পূর্ব অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো লক্ষ্য করে চালানো হয়। হামলায় দু’জন আহত হয়েছেন এবং একটি শিল্প কারখানা ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিসাইলটি ঠিক কী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এত শক্তিশালী আইসিবিএম ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার ঘটনা প্রথম। যদিও এই ধরনের মিসাইল সাধারণত পারমাণবিক অস্ত্র বহন করার জন্য ডিজাইন করা হয় এবং এর পাল্লা ইউক্রেনের মতো দেশ লক্ষ্যবস্তু করার জন্য অতিরিক্ত দীর্ঘ, তবুও রাশিয়া এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি রাশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতা প্রদর্শন এবং যুদ্ধে সম্ভাব্য আরও গুরুতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সতর্কবার্তা।
এই হামলার একদিন আগে ব্রিটিশ-ফরাসি যৌথ ভাবে নির্মিত স্টর্ম শ্যাডো মিসাইল ব্যবহার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে আঘাত হানে ইউক্রেন। যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনের প্রথম বার এই ধরনের মিসাইল ব্যবহার। রাশিয়া আগে থেকেই এই ধরনের হামলাকে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসাবে দেখার কথা জানিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৯ নভেম্বর ছিল রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের ১,০০০তম দিন। এই দীর্ঘ যুদ্ধে এখনও শান্তির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। একই দিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি সংশোধিত পারমাণবিক নীতি ঘোষণা করেন। নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, যে কোনো দেশ যদি রাশিয়ার ওপর প্রচলিত অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায় এবং সেই দেশ কোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সমর্থন পায়, তবে তাকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যৌথ আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই হামলা এবং পাল্টা পদক্ষেপগুলি যুদ্ধকে আরও উত্তপ্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। আইসিবিএম-এর ব্যবহার শুধু শক্তি প্রদর্শন নয়, এটিকে ইউক্রেন ও পশ্চিমা শক্তিগুলির প্রতি রাশিয়ার কঠোর বার্তা হিসাবেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।