কাঠমান্ডু: ক্ষয়িষ্ণু বৈদেশিক মুদ্রাভাণ্ডার বাঁচাতে সাধারণ ব্যবহারের গাড়ি, ভারী আর্থমুভিং মেশিন এবং কৃষি যন্ত্রপাতি ছাড়া সমস্ত যানবাহন আমদানি নিষিদ্ধ করছে ভুটান। শুক্রবার এক সরকারি বিজ্ঞপ্তি উদ্ধৃত করে এমনটাই দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
চিন ও ভারতের মাঝখানে অবস্থিত দেশটির জনসংখ্যা আট লক্ষেরও কম। করোনা মহামারির ধাক্কায় বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে টেনে তোলার লড়াই এখনও অব্যাহত ভুটানে। তারই সঙ্গে জুটেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মূদ্রাস্ফীতির জোরালো প্রভাব। উল্লেখযোগ্য ভাবে, পর্যটন ব্যবসা আয়ের একটা অন্যতম রাস্তা হলেও কোভিড নিষেধাজ্ঞার জন্য গত দু’বছর ধরে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা কার্যত বন্ধই। ফলে এখন বিদেশি মুদ্রা সংকটের চরম স্তরে অবস্থান করছে ভুটান।
বিদেশি মুদ্রাভাণ্ডার কী ভাবে হ্রাস পাচ্ছে?
ভুটানের রয়্যাল মনিটারি অথরিটি-র গত মাসে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের শেষে ৯৭ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল, যা ২০২১ সালের এপ্রিলে ছিল ১৪৬ কোটি ডলার।
দেশের অর্থমন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ১৫ লক্ষ এনগুলট্রাম (২০ হাজার ডলার)-এর কম দামের সাধারণ ব্যবহারের গাড়ি আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে এবং পর্যটনের ব্যবহার এবং প্রচারের জন্য সেগুলিকে ছাড় দেওয়া হবে। বলা হয়েছে, “অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নিশ্চিত করা দরকার। যে কারণে এই স্থগিতাদেশ কার্যকর করা হয়েছে”।
দৈনিক কুয়েনসেল সংবাদপত্রের রিপোর্ট বলছে,চলতি বছরের জুন থেকে আট হাজারের বেশি যানবাহন আমদানি করেছে ভুটান। বিদেশি মুদ্রা হ্রাসের প্রধান কারণগুলির মধ্যে অন্যতম একটি। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে স্থগিতাদেশ। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ অবস্থানের উপর নির্ভর করে ছ’মাসের মধ্যে তা পর্যালোচনা এবং সংশোধন করবে সরকার।
বিদেশি মুদ্রা নিয়ে টানাপোড়েন আর যেখানে
বিদেশি মুদ্রাভাণ্ডার শূন্য হলে কী পরিণতি হতে পারে, ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় তার মর্মান্তিক ছবি দেখা গিয়েছে। তবে শুধু এই দ্বীপরাষ্ট্রই নয়, বিশ্বের আরও কিছু দেশ এখন বিদেশি মুদ্রা সংকটের চরম স্তরে অবস্থান করছে।
শ্রীলঙ্কা, লেবানন, রাশিয়া, সুরিনাম এবং জাম্বিয়া ইতিমধ্যেই ঋণ পরিশোধে অক্ষম। দোরগড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বেলারুশ। আরও ডজনখানেক দেশ এই বিপজ্জনক অঞ্চলে রয়েছে বলে সম্প্রতি জানা গিয়েছে। ক্রমবর্ধমান ঋণের ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি এবং ঋণ সবে মিলে এই অর্থনৈতিক পতনের আশংকা তৈরি করেছে বলে দাবি করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, আর্জেন্টিনা, ইউক্রেন, তিউনিসিয়া, ঘানা, ইজিপ্ট, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, এল সালভাদোর, পাকিস্তান, বেলারুশ, ইকুয়েডর এবং নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলিও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে।
আরও পড়তে পারেন:
চিনা মন্দায় উজ্জ্বল হতে পারে ভারতীয় শিল্পের সম্ভাবনা, মত বিশেষজ্ঞদের
কয়েক সেকেন্ডের টর্নেডোয় তছনছ সন্দেশখালি, ধূলিসাৎ কয়েকশো বাড়ি
প্যারাসিটামলের জন্য হাজার কোটি টাকা বিনামূল্যে দেওয়ার অভিযোগ অতিরঞ্জিত, দাবি সংস্থার
মা-বাবার চেয়ে কম মদ্যপান করছে তরুণ প্রজন্ম, অর্থনীতি চাঙ্গা করতে জাপানি কৌশল
বিলকিস বানো মামলা: দোষীদের মুক্তি দেওয়া ১০ সদস্যের কমিটির ৫ জনই বিজেপি-র!