মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের উপর সামরিক হামলার পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছেন বলে দাবি করেছে The Wall Street Journal। তবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত হামলার নির্দেশ দেননি তিনি। হামলার বিষয়টি আপাতত ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করছে।
ট্রাম্প নাকি হোয়াইট হাউসের শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের জানিয়েছেন, তিনি ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে আঘাত হানার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন, কিন্তু হামলার চূড়ান্ত নির্দেশ দেননি।
এই অবস্থায় চরম উত্তেজনার পারদ চড়ছে পশ্চিম এশিয়ায়। ইরানের হুঁশিয়ারি, “আমেরিকা যদি ইসরায়েলের হামলায় জড়ায়, তবে তা পুরো অঞ্চলে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ ডেকে আনবে।” এই মন্তব্য করেন ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র এসমাইল বাঘেই।
এদিকে, AP-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ইরানের ইউরেনিয়াম সেন্ট্রিফিউজ ও মিসাইল তৈরির কেন্দ্রে নিশানা করেছে। তেহরানের হাকিমিয়েহ অঞ্চলে প্রবল বিস্ফোরণ হয়েছে, যেখানে রেভলিউশনারি গার্ডের একটি প্যারামিলিটারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৫৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২৩৯ জন সাধারণ নাগরিক।
রাষ্ট্রসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি বাহরেইনি জানিয়েছেন, আমেরিকাকে ইতিমধ্যেই ‘রেড লাইন’-এর বার্তা দেওয়া হয়েছে। তিনি স্পষ্ট বলেন, “আমরা নজর রাখছি আমেরিকার পদক্ষেপে। সেই অনুযায়ীই জবাব দেওয়া হবে।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প এক বিস্ফোরক পোস্টে দাবি করেছেন, “আমরা জানি আয়াতোল্লাহ খামেনেই কোথায় আছেন।” যদিও সঙ্গে যোগ করেন, “এখনই তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা নেই।”
এদিকে ইরানের সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দুল রহিম মৌসাভি বলেন, “এখন পর্যন্ত যেসব হামলা চালানো হয়েছে, তা ছিল শুধু সতর্কবার্তা। শাস্তিমূলক অভিযান এখনও বাকি।”
ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইতিমধ্যেই ১০টি মিসাইল প্রতিহত করেছে এবং ইরানের হামলা ধীরে ধীরে কমছে। যদিও ইরান এখনও পর্যন্ত ৪০০-র বেশি মিসাইল ও শতাধিক ড্রোন ছুঁড়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইসরায়েলে অন্তত ২৪ জন নিহত, বহু মানুষ আহত হয়েছেন। কিছু মিসাইল মাঝরাতেও সাধারণ আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে, ফলে নাগরিকদের বারবার সরিয়ে নিতে হচ্ছে।
তেহরানে আতঙ্ক ছড়িয়েছে—হাজার হাজার মানুষ শহর ছেড়ে পালাচ্ছেন, গাড়ির লাইনে দীর্ঘ সারি, বাজার ও দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে নজর রয়েছে ইরান-আমেরিকা সংঘাতের দিকেই।