মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার ইউক্রেনের প্রতি সমস্ত সামরিক সহায়তা স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মাত্র কয়েকদিন পরই এই সিদ্ধান্ত এলো, যা কিয়েভের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
সামরিক সহায়তা স্থগিতের কারণ কী?
মার্কিন সংবাদ সংস্থা Bloomberg সূত্রে জানা গিয়েছে, ইউক্রেনের নেতৃত্ব যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য প্রকৃত উদ্যোগ নিচ্ছে কিনা, তা নির্ধারণ না করা পর্যন্ত সমস্ত সামরিক সহায়তা বন্ধ থাকবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইউক্রেনে এখনও পাঠানো হয়নি এমন সমস্ত সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র এই আদেশের ফলে আটকে যাবে। এতে বিমান ও জাহাজে থাকা অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের চালানও অন্তর্ভুক্ত।
ওভাল অফিসে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়
গত শুক্রবার ওভাল অফিসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে এক প্রকাশ্য বাক-বিতণ্ডা ঘটে। জেলেনস্কি মার্কিন সফরে এসে একটি খনিজ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনা করছিলেন, কিন্তু রাশিয়ার ভবিষ্যৎ আক্রমণের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা গ্যারান্টির দাবি তোলার পর চুক্তিটি ভেস্তে যায়।
ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টা জেডি ভ্যান্স জেলেনস্কির আচরণের কড়া সমালোচনা করেন। ভ্যান্স ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করেন, আর ট্রাম্প বলেন, “জেলেনস্কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে জুয়া খেলছেন।”
আগেও ইউক্রেনের সহায়তা অব্যাহত ছিল
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিদেশি সহায়তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা করলেও ইউক্রেন তখনও সহায়তা পেতে থাকে। সে সময় একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে রুবিও লিখেছিলেন, “নতুন অর্থায়ন বা পুরোনো অনুদানের মেয়াদ বাড়ানোর আগে প্রতিটি অনুদান যাচাই করা হবে।” তবে তখনও ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা বহাল ছিল।
ট্রাম্পের অবস্থান ও ইউরোপের প্রতিক্রিয়া
ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করতে চান বলে দাবি করছেন, তবে তার বক্তব্যে ক্রেমলিনপন্থী সুর থাকার অভিযোগ উঠেছে। ইউরোপের নেতারা ইতিমধ্যে একটি শান্তিচুক্তির খসড়া তৈরির কাজ শুরু করেছেন, যা তারা শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উপস্থাপন করবেন বলে জানা গেছে।
ট্রাম্পের এই নতুন সিদ্ধান্তে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ সমর্থন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, যা রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশটির জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।