মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘লিবারেশন ডে’ উপলক্ষে ঘোষণা করেছেন ব্যাপক রেসিপ্রোকাল ট্যারিফের (পারস্পরিক শুল্ক) পরিকল্পনা। তাঁর দাবি, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে বিদেশি দেশগুলি আমেরিকার সম্পদ লুট করেছে। এই নতুন পদক্ষেপে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক বাড়ানো হবে।
হোয়াইট হাউসে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “এপ্রিল ২, ২০২৫, হবে সেই দিন যখন আমেরিকার শিল্প পুনর্জন্ম লাভ করবে। বহু বছর ধরে বিদেশি দেশগুলি আমাদের দেশকে লুট করেছে, কিন্তু আর তা চলবে না।”
ভারতের ওপর ২৬% শুল্ক
ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চাপানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ, ভারত আমেরিকায় রপ্তানির ক্ষেত্রে ৫২ শতাংশ শুল্ক ধার্য করে, যেখানে আমেরিকা ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রায় কোনও শুল্কই চাপায়নি।
মোট ২৫টি দেশের ওপর রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলির শুল্কের হার:
- চীন: ৩৪%
- ইউরোপীয় ইউনিয়ন: ২০%
- দক্ষিণ কোরিয়া: ২৫%
- ভিয়েতনাম: ৪৬%
- জাপান: ২৪%
- থাইল্যান্ড: ৩৬%
- বাংলাদেশ: ৩৭%
- শ্রীলঙ্কা: ৪৪%
- পাকিস্তান: ২৯%
ভারতের রপ্তানিতে প্রভাব
বিশ্লেষক সংস্থা সিটি রিসার্চের মতে, ট্রাম্পের এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের বছরে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রাসায়নিক, ধাতব পণ্য এবং অলঙ্কার শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
২০২৪ সালে আমেরিকায় ভারতের মোট পণ্য রপ্তানি ছিল প্রায় ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে মুক্তো, রত্ন এবং অলঙ্কারের পরিমাণ ছিল ৮.৫ বিলিয়ন ডলার, ফার্মাসিউটিক্যালস ৮ বিলিয়ন ডলার এবং পেট্রোকেমিক্যাল প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার।
তবে, ভারতের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুল্ক বৃদ্ধি সত্ত্বেও আমেরিকায় রপ্তানিতে তেমন বড় প্রভাব পড়বে না। ভারত ইতিমধ্যেই নতুন বাজারের সন্ধান করছে এবং মূল্য সংযোজনের ওপর জোর দিচ্ছে।
অন্যদিকে, SBI রিসার্চের মতে, ট্রাম্পের ঘোষণার ফলে ভারতের রপ্তানিতে ৩ থেকে ৩.৫ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।