ট্রাম্পের ২৫% পর্যন্ত শুল্ক কার্যকর হতেই ধসে পড়ল শেয়ারবাজার। তবে কানাডা ও মেক্সিকোর জন্য সাময়িক ছাড় ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যা আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত বহাল থাকবে।
মঙ্গলবার থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক নীতি কার্যকর হয়, যার ফলে মার্কিন শেয়ারবাজারে বড় পতন দেখা যায়। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, এই ধরনের শুল্ক আমেরিকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ও মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়াবে।
ট্রাম্পের শুল্ক ও তার প্রভাব
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন যে, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি হওয়া কিছু পণ্যের উপর শুল্ক ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্তের পিছনে শেয়ারবাজারের অস্থিরতা কোনো কারণ নয়।
অটোমোবাইল শিল্পে স্বস্তি:
- কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি হওয়া গাড়ির যন্ত্রাংশে সাময়িক ছাড়।
- উৎপাদন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাণিজ্য নীতিতে সাময়িক পরিবর্তন।
- মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারকদের জন্য ইতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে মনে করছে হোয়াইট হাউস।
তবে:
- কানাডার ৬২% আমদানির উপর ১০% শুল্ক বহাল থাকবে।
- মেক্সিকোর মোট আমদানির ৫০% শুল্কের আওতায় আসবে।
কানাডার প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের ঘোষণার পর কানাডার অর্থমন্ত্রী ডোমিনিক লেব্লাংক এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করেন যে, “আমরা ১২৫ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্যের উপর দ্বিতীয় দফার শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখছি, তবে চূড়ান্ত সমাধানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাব।”
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, “এই শুল্ক যতদিন পুরোপুরি প্রত্যাহার না হয়, ততদিন আমাদের বাণিজ্য যুদ্ধ চলবে।”
মেক্সিকোর সঙ্গে সম্পর্ক ও অভিবাসন ইস্যু
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার জানান, “আমি মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা করেছি।” তিনি দাবি করেন, “অবৈধ অভিবাসন ও মাদক প্রবাহ বন্ধে আমরা অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছি।”
শেয়ারবাজারে ধস ও অর্থনীতির বিশ্লেষণ
- বাজারে অস্থিরতা: ট্রাম্পের শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর স্টক মার্কেটে ব্যাপক পতন হয়।
- সাপ্লাই চেইনের সমস্যায় অর্থনীতি: শুল্কের কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ শৃঙ্খলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
- বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি: জানুয়ারিতে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি ৩৪% বেড়ে ১৩১.৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
আগামী দিনের পরিকল্পনা
ট্রাম্প জানান, “২ এপ্রিল থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হবে, যা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও প্রতিক্রিয়াশীল হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু সস্তা পণ্য পাওয়া নয়, বরং আমেরিকানদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
আগামী দিনে এই শুল্কনীতি কীভাবে বিশ্ববাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে? কানাডা ও মেক্সিকো কি মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে? অপেক্ষা করছে আরও টানাপোড়েন!